Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

মমতা তাদের পাশে চাইলেন, বাম-কংগ্রেস বলল ‘নো চান্স’

বিধানসভায় বুধবার রাজ্যপালের ভাষণের উপর আলোচনার জবাবি বক্তৃতায় মুখ্যমন্ত্রী মমতার আহ্বান, ‘‘মান্নান ভাই (কংগ্রেসের আব্দুল মান্নান),  সুজনবাবু (সিপিএমের সুজন চক্রবর্তী), আমাদের একসঙ্গে আসা দরকার।’’

বিধানসভায় মুখ্যমন্ত্রী। —নিজস্ব চিত্র।

বিধানসভায় মুখ্যমন্ত্রী। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৭ জুন ২০১৯ ০২:০০
Share: Save:

এত দিন তিনি বড় মুখ করে বলতেন, সিপিএম-কংগ্রেস-বিজেপি তিন পক্ষকে একা হারিয়ে জেতার ক্ষমতা তাঁর আছে এবং তিনি তা করে দেখিয়েছেন। বলতেন, তাঁর দল তৃণমূলের বিরুদ্ধে ওই তিন পক্ষ এক হয়েছে। এ বার লোকসভা নির্বাচনে ধাক্কা খাওয়ার পরে ‘সাম্প্রদায়িক’ বিজেপিকে রুখতে সেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বাম এবং কংগ্রেসের হাত ধরতে চান। এমনকি, বাম ভোট ‘রামে’ যাওয়ার পুরনো বক্তব্য থেকেও এ দিন অনেকটা সরে আসেন তিনি।

বিধানসভায় বুধবার রাজ্যপালের ভাষণের উপর আলোচনার জবাবি বক্তৃতায় মুখ্যমন্ত্রী মমতার আহ্বান, ‘‘মান্নান ভাই (কংগ্রেসের আব্দুল মান্নান), সুজনবাবু (সিপিএমের সুজন চক্রবর্তী), আমাদের একসঙ্গে আসা দরকার।’’ তাঁরা দু’জনেই অবশ্য মাথা ঝাঁকিয়ে, হাত নেড়ে ওই প্রস্তাব কার্যত খারিজ করে দেন। হইচইয়ের মধ্যে সুজনকে বলতে শোনা যায়, ‘‘নো চান্স।’’ দিল্লিতে পরে কংগ্রেসের লোকসভার দলনেতা অধীর চৌধুরী এবং সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরিও এই সুরেই প্রতিক্রিয়া জানান। আর বিজেপির পরিষদীয় নেতা মনোজ টিগ্গা বলেন, ‘‘জোট করুন, না করুন, বিজেপিই জিতবে।’’

এ দিন বিধানসভায় মুখ্যমন্ত্রী বিজেপির বিরুদ্ধে সাম্প্রদায়িকতা, অন্য দল ভাঙানো, লোকসভা ভোটে বিপুল অর্থের অন্যায় ব্যবহার করে গণতন্ত্রকে কলুষিত করার অভিযোগের প্রেক্ষিতেই বলেন, ‘‘সিপিএম আমার সঙ্গে ঝগড়া করতে পারে। কংগ্রেস আমার সঙ্গে ঝগড়া করতে পারে। কিন্তু দেশটা ওরা ভেঙে তছনছ করে দেবে, তা আমি বিশ্বাস করি না।’’

লোকসভা ভোটের ফল প্রকাশের পর থেকে তৃণমূল নেতৃত্ব বার বার দাবি করেছেন, বাম ভোট রামের ঝুলিতে যাওয়ার ফলেই এ রাজ্যে বিজেপির বাড়বাড়ন্ত হয়েছে। বিধানসভার চলতি অধিবেশনে রাজ্যপালের ভাষণের উপর আলোচনাতেও তৃণমূল বিধায়কেরা ‘বিজেপিকে ভোট পাচার’ করার অভিযোগ তুলে বার বার বাম বিধায়কদের খোঁচা দিয়েছেন। কিন্তু মমতা এ দিন বলেন, ‘‘কেরলের মানুষ বিজেপিকে ভোট না দিয়ে বাম এবং কংগ্রেসকে দিয়েছেন বলে ধন্যবাদ। আমাদের রাজ্যের বামেরাও সবাই যে বিজেপিকে ভোট দিয়েছেন, তা নয়। সিপিএম সব ভোট শিফট করেছে, আমি তা বিশ্বাস করি না।’’ মুখ্যমন্ত্রী ব্যাখ্যা দেন, তিনিও ১০০ শতাংশ ভোট অন্য কাউকে পাঠাতে পারবেন না। কারণ সব ভোটার কখনওই কোনও এক জন নেতা বা একটি দলের কথা মেনে ভোট দেয় না। এর পরেই মুখ্যমন্ত্রী সন্দেহ প্রকাশ করেন, ‘‘আপনার (বামেদের) ভোট শতাংশের হিসাব করে সেটা যন্ত্রে (ইভিএম)-এ প্রোগ্রামিং করে দেয়নি তো? আমি কংগ্রেসকে বলেছিলাম, চলুন, এ বিষয় নিয়ে নির্বাচন কমিশনে যাই। আমরা চিঠি দিয়েছিলাম। কিন্তু তা বাতিল কাগজের ঝুড়িতে ফেলে দেওয়া হয়েছে। আজ তো আপনাদের সবাইকে নিয়ে আবার যেতে পারি।’’

এই বিশ্লেষণের পাশাপাশি বিজেপির বিধায়কদের উদ্দেশে মমতার হুঁশিয়ারি, ‘‘বিজেপি সবে কয়েকটা আসন জিতেছে বলে ভাববেন না, আমরা হনুমানের মতো লেজ গুটিয়ে পালাব। আমরা লেজ গুটিয়ে পালানোর লোক নই। চ্যালেঞ্জ করছি, বিজেপিকে উৎখাত করব।’’

এবার শুধু খবর পড়া নয়, খবর দেখাও।সাবস্ক্রাইব করুনআমাদেরYouTube Channel - এ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE