Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪

মমতা চান ১০ পরিবারের ক্ষতিপূরণ, সরব বিরোধীরা

এ দিন মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘১০ জনের মধ্যে ৮ জনই আমাদের সমর্থক। ওদের (বিজেপি) দু’জন কী ভাবে মারা গিয়েছে, তা-ও দেখব। তদন্ত হবে। মুখ্যসচিব মলয়বাবুকে (দে) বলছি। ১০টি পরিবারকে বিপর্যয়ের তহবিল থেকে সাহায্য করে দিন।’’

—ফাইল চিত্র।

—ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১২ জুন ২০১৯ ০১:৩৮
Share: Save:

রাজ্যে ভোট-পরবর্তী হিংসায় এখনও পর্যন্ত ১০ জন মারা গিয়েছেন বলে মুখ্যমন্ত্রীর হিসেব। তার মধ্যে ৮ জনই তৃণমূলের। নিহত ওই ১০ জনের পরিবারকে রাজ্যের বিপর্যয় মোকাবিলা তহবিল থেকে আর্থিক সাহায্যের নির্দেশ দিলেন তিনি। এমন নির্দেশ ঘিরে প্রশ্ন তুলছে বিরোধীরা।

হেয়ার স্কুলের মাঠে মঙ্গলবার বিদ্যাসাগরের মূর্তি পুনঃস্থাপনের অনুষ্ঠানে রাজ্যে রাজনৈতিক সংঘর্ষ এবং মৃত্যুর প্রসঙ্গ টেনে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, তাঁর কাছে ১০ জনের মৃত্যুর হিসেব আছে। মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, ‘‘১০ জনের মধ্যে ৮ জনই আমাদের সমর্থক। ওদের (বিজেপি) দু’জন কী ভাবে মারা গিয়েছে, তা-ও দেখব। তদন্ত হবে। মুখ্যসচিব মলয়বাবুকে (দে) বলছি। ১০টি পরিবারকে বিপর্যয়ের তহবিল থেকে সাহায্য করে দিন।’’ সেই সঙ্গেই মুখ্যমন্ত্রী যোগ করেছেন, ওই ১০ জনের পরেও সোমবার রাতে তৃণমূলের দু’জন এবং এ দিন সকালে আরও এক জন নিহত হয়েছেন।

বিরোধীদের প্রশ্ন, রাজ্য জুড়ে সংঘর্ষে হতাহতের তালিকা বেড়েই চলেছে। প্রতি দলেরই নিজস্ব কিছু দাবি আছে। তার মধ্যে থেকে কীসের ভিত্তিতে সরকার ক্ষতিপূরণের জন্য নাম বেছে নেবে? শুধু ১০ জনের পরিবারই ক্ষতিপূরণ পাবে, এমন তো হতে পারে না! তাদের আরও প্রশ্ন, ভোট-পরবর্তী হিংসায় নিহতদের পরিবার সরকারি ক্ষতিপূরণ পেলে ভোটের আগে বা ভোটের দিন প্রাণ হারানো মানুষের পরিজনেরা বাদ যাবেন কেন? সকলেই তো গরিব মানুষ। সরকার কি এ ভাবে বাছ-বিচার করতে পারে, এই প্রশ্ন তুলে সরব হয়েছেন বিরোধী বিজেপি, সিপিএম ও কংগ্রেসের নেতৃত্ব।

বিজেপির দাবি, শুধু সন্দেশখালিতেই তাদের দু’জন কর্মী মারা গিয়েছেন, নিখোঁজ ৬ জন। সন্দেশখালির পরে উলুবেড়িয়ার উদয়নারায়ণপুরে সমতুল দলুই নামে এক বিজেপি কর্মী খুন হয়েছেন। তাদের দলের নিহত কর্মী-সমর্থকদের তালিকা রাজ্যের স্বরাষ্ট্রসচিবের কাছে পাঠিয়েছে বিজেপি। দলের নেতা মুকুল রায় এ দিন বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী ওই ৮ জনের নাম-ঠিকানার তালিকা দিন। দিতে পারলে আমরা রাজনৈতিক ভাবে ভুল স্বীকার করে নেব, ক্ষমাও চাইব! আমাদের সন্দেশখালিতে দু’জন মৃত, চার জন নিখোঁজের নাম-ঠিকানা দিতে পারি।’’ মুকুলবাবুর আরও মন্তব্য, ‘‘নিহতদের পরিবার টাকা চায় না। তারা দোষীদের শাস্তি চায়।’’

সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তী বলছেন, ‘‘হবু চন্দ্র রাজা, গবু চন্দ্র মন্ত্রীর কারবার চলছে! মুখ্যমন্ত্রীর তালিকায় বিজেপির তা-ও দু’জন আছেন। কিন্তু আমাদের মথুরাপুরের নিহত কর্মী, অটো-চালক রাজু হালদার কী দোষ করলেন? সব চেয়ে বড় কথা, মুখ্যমন্ত্রী সরকারের প্রধান নয়, ওঁর দলের প্রধান হিসেবে কাজ করছেন।’’ প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সোমেন মিত্রের বক্তব্য, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীর এই কাজ সঙ্গত বলে মনে করি না। ক্ষতিপূরণ দিতে হলে ভোটের আগে বা ভোটের দিন যাঁরা মারা গেলেন, তাঁদেরও তো দিতে হয়। কে কোন রাজনৈতিক পতাকা নিয়ে মারা যাচ্ছেন, তা নিয়ে ভাবছি না। মারা যাচ্ছেন গরিব মানুষ।’’ সোমেনবাবুর দাবি, ‘‘সরকার বরং শান্তি ফেরানোয় নজর দিক।’’

এবার শুধু খবর পড়া নয়, খবর দেখাও। সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের YouTube Channel - এ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE