প্রতীকী ছবি।
নির্ধারিত নব্বই মিনিট ফুরিয়েছে। ইনজুরি টাইম চার মিনিট। তখনও আশা ছাড়েননি জেভিয়ার বিশ্বাস, জিমি তেসরা, সাহেব রোজ়ারিওরা। যদি একটি বার জ্বলে ওঠেন মহাতারকা! যদি একটি বার তাঁর পায়ের জাদুতে বল জড়ায় জালে!
না, স্বপ্নপূরণ হয়নি। বিশ্বজোড়া লাখো লাখো ভক্তের মতোই সিআর সেভেন হতাশ করেছেন মহিষাদলের অখ্যাত গ্রাম মীরপুরকে। তবে শুধু ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো নয়, গোটা পর্তুগালের জন্যই মন খারাপ মীরপুরের। হোক না কোন আদ্যিকালের কথা, হোক না বিস্মৃতির অতলে হারিয়ে যেতে বসা ইতিহাস— আদতে যে এই পর্তুগালেই শিকড় ছিল জিমি, জেভিয়ারদের পূর্বপুরুষদের!
সরকারি ভাবে পূর্ব মেদিনীপুরের এই তল্লাট বেতকুণ্ডু ও শুকলালপুর নামে পরিচিত। কিন্তু এলাকাটি গোটা জেলা ‘মিনি পর্তুগাল’ মীরপুর হিসেবেই চেনে। ইতিহাস বলছে, তিনশো বছর আগে বর্গি আক্রমণ থেকে মহিষাদল রাজপরিবারকে রক্ষা করতে রানি জানকী গোয়া থেকে যুদ্ধবাজ একদল পর্তুগিজকে নিয়ে এসেছিলেন। জলপথে বর্গি আক্রমণ ঠেকানোর পুরস্কার স্বরূপ সেই পর্তুগিজরা পেয়েছিলেন নিষ্কর জমি মীরপুর। এখন গ্রামে যে শ’দুয়েক পরিবারের বাস, তাঁরা কালের নিয়মে বাঙালি হয়ে গেলেও পূর্বপুরুষের দেশটা ভুলতে পারেননি।
আর তাই শনিবার উরুগুয়ের কাছে হেরে বিশ্বকাপ থেকে পর্তুগালের বিদায় মানতে পারছে না মীরপুর। মহিষাদল রাজ কলেজের টিমে স্ট্রাইকার হিসেবেই খেলেন জিমি। তাঁর কথায়, ‘‘গভীর রাত পর্যন্ত গোটা গ্রাম খেলা দেখেছে। কত আশা ছিল বিশ্বকাপ এ বার রোনাল্ডোর হাতে উঠবে। সব মাটি হয়ে গেল।’’ গেঁওখালি স্কুলের ছাত্র সুমন পেরেরার গলাতেও হতাশা। সে বলে, ‘‘আগের ম্যাচগুলোয় তো সিআর সেভেন একাই দলকে জেতাল। কিন্তু উরুগুয়ের সঙ্গে কিচ্ছু করতে পারল না।’’ রবিবার ছুটির দিনেও গোটা গ্রাম কেমন নিঝুম।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy