চিনের মানচিত্র ও চিনা জিনিস পুড়িয়ে কংগ্রেসের বিক্ষোভ। শিয়ালদাহ-এ। (ডান দিকে) তারাতলায় কংগ্রেসের বিক্ষোভ।—নিজস্ব চিত্র।
লাদাখ সীমান্তে সংঘর্ষের ঘটনার পরেই চিনের সঙ্গে সম্পর্কের প্রশ্ন তুলে এ দেশের কমিউনিস্ট পার্টিকে আক্রমণের পথে নেমে পড়েছে বিজেপি। কিন্তু সিপিএম কোনও দিনই চিনপন্থী বা রুশপন্থী ছিল না বলে ব্যাখ্যা দিয়েছেন দলের রাজ্য সম্পাদক ও পলিটব্যুরোর সদস্য সূর্যকান্ত মিশ্র।
সূর্যবাবু বলেছেন, ‘‘আমরা কোনও দিনই চিনপন্থী বা রুশপন্থী ছিলাম না। অরুণাচল নিয়ে চিনের দাবিকে আমরা বরাবরই প্রকাশ্যে অন্যায্য বলে এসেছি।’’ সেই সঙ্গেই তাঁর সংযোজন, ‘‘কিন্তু ডোনাল্ড ট্রাম্পের মতো আমরা চিনকে শত্রু বলে যুদ্ধ চাই না। পরমাণু অস্ত্র নিয়ে কে যুদ্ধ চায়? পৃথিবী শেষ হয়ে যাবে ওই পথে! আমরা তাই আলোচনার পথে শান্তির কথা বলেছি।’’ দ্বিপাক্ষিক আলোচনায় উত্তেজনা প্রশমনের দাবি জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছে সিপিএমের পলিটব্যুরোও।
প্রসঙ্গত, ১৯৬২ সালের চিন-ভারত যুদ্ধের সময়ে তৎকালীন অবিভক্ত কমিউনিস্ট পার্টিকে ‘চিনের দালাল’ আখ্যা শুনতে হয়েছিল। পার্টি নিষিদ্ধ ঘোষণা হওয়ার সময়ে জ্যোতি বসু-সহ নেতারা আত্মগোপনও করেছিলেন। ষাটের দশকেই কমিউনিস্ট পার্টি ভাগ হওয়ার পরে পুরনো সিপিআইকে সোভিয়েতপন্থী এবং সিপিএমকে চিনপন্থী বলে মনে করা হত রাজনৈতিক শিবিরে। চিনকে জড়িয়ে কোনও তিক্ত প্রসঙ্গ এলেই এখনও নানা মহল থেকে টেনে আনা হয় কমিউনিস্ট পার্টির যোগসূত্র!
এই পরিস্থিতিতেই লাদাখে নিহত সেনা জওয়ান রাজেশ ওরাং-এর পরিজনদের সঙ্গে দেখা করতে আজ, শুক্রবার বীরভূম যাচ্ছেন বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নান ও বাম পরিষদীয় নেতা সুজন চক্রবর্তী। কলকাতা ফিরে দিনদুয়েকের মধ্যে তাঁদের যাওয়ার কথা নিহত আর এক বাঙালি জওয়ান বিপুল রায়ের আলিপুরদুয়ারের বাড়িতেও। নিহত জওয়ানদের প্র্তি শ্রদ্ধা জানিয়েই মান্নান বৃহস্পতিবার বলেছেন, বাংলাদেশ, চিন, নেপাল বা ভূটান— প্রতিবেশি সব দেশের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক কেন তিক্ত হয়ে উঠল, তার জবাবদিহি মোদী সরকারকে করতে হবে।
সীমান্তে চিনা আগ্রাসনের প্রতিবাদের পাশাপাশি সাধারণ মানুষের দৈনন্দিন সমস্যাকে মিলিয়ে কংগ্রেসের বিক্ষোভও অব্যাহত। পেট্রল-ডিজেলের দফায় দফায় মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে এ দিন তারাতলায় দক্ষিণ কলকাতা জেলা কংগ্রেস, বড়বাজারে যুব কংগ্রেস বিক্ষোভ জমায়েত করেছে। আবার সুরেন্দ্রনাথ কলেজের সামনে প্রতিবাদ সভায় বিজেপির কায়দায় চিনের মানচিত্র ও চিনা পণ্য পুড়িয়ে প্রতিবাদে শামিল হয়েছিল মধ্য কলকাতা জেলা কংগ্রেস ও কলকাতা জেলা ছাত্র পরিষদ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy