Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
Tourists

সমাজের ‘বাধা’য় পুজোয় বন্ধ পাহাড়ের অংশ

প্রশাসনিক সূত্রের খবর, কালিম্পঙের লাভা, লোলেগাঁও, পেদং, আলগাড়ার মতো জনপ্রিয় অঞ্চলে কোনও হোম-স্টে বুকিং নিচ্ছে না। কোনও বুকিংয়ের খবর এলেই জানানো হচ্ছে, আপাতত নয়, নভেম্বর মাসের পর যোগাযোগ করুন।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

কৌশিক চৌধুরী 
শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ০৪ অক্টোবর ২০২০ ০৬:৫৮
Share: Save:

পুজোর মুখে সরকারি স্তরে উত্তরের পর্যটন শিল্পকে কিছুটা স্বাভাবিক করার চেষ্টা হচ্ছে। কিন্তু কার্যক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে, কালিম্পং জেলার পাহাড়ি এলাকা এবং সিকিমের একাংশ পুজোর আগে পর্যটকদের স্বাগত জানাতে প্রস্তুত নয়। সেখানকার হোম-স্টে, হোটেল, রিসর্ট মালিকেরা বুকিং প্রত্যাশীদের জানিয়ে দিচ্ছেন, আপাতত ১৫ নভেম্বর অবধি সমাজের সিদ্ধান্তে তাঁরা পর্যটকদের রাখতে পারবেন না। পাহাড়ি গ্রামীণ এলাকায় সংক্রমণ ছড়িয়ে গেলে তা ঠেকানো যাবে না বলেও তাঁরা যুক্তি দিচ্ছেন। তবে এই নিয়ে কোনও বিজ্ঞপ্তি বা নির্দেশিকা কোথাও কেউ জারি করেনি। ওই হোম স্টে, হোটেল, রিসর্ট এবং পর্যটন ব্যবসায়ীদের সূত্রের খবর, পুরোটাই মৌখিকভাবে জানিয়ে দেওয়া হচ্ছে।

এই অবস্থায় প্রশাসনের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। বিশেষ করে মুখ্যমন্ত্রী সম্প্রতি শিলিগুড়িতে প্রশাসনিক সভা থেকে পর্যটন শিল্প চালুর কথা বলেছেন। জিটিএ, প্রশাসন, পুলিশকে স্বাস্থ্যবিধি মানা, সানিটাইজেশনে নজর রেখে পর্যটকদের পুজোর স্বাগত জানাতে বলেছেন। কিন্তু কালিম্পং জেলার একাংশে তা উল্টোটাই হচ্ছে বলে অভিযোগ। এই নিয়ে যোগাযোগ করা হলে কালিম্পঙের জেলাশাসক আর বিমলা টেলিফোন ধরেননি। মেসেজের কোনও উত্তরও দেননি। জিটিএর চেয়ারম্যান পাহাড়ের পর্যটনের বিষয়টি অনীত থাপা দেখছেন বলে জানিয়েছেন।

প্রশাসনিক সূত্রের খবর, কালিম্পঙের লাভা, লোলেগাঁও,পেদং, আলগাড়ার মতো জনপ্রিয় অঞ্চলে কোনও হোম-স্টে বুকিং নিচ্ছে না। কোনও বুকিংয়ের খবর এলেই জানানো হচ্ছে, আপাতত নয়, নভেম্বর মাসের পর যোগাযোগ করুন। তেমনিই, পাশের রাজ্য সিকিমে শুধুমাত্র গ্যাংটক, রাবাংলা খোলা রয়েছে। বাকি সমস্ত জনপ্রিয় পর্যটন কেন্দ্রগুলি ৩০ নভেম্বর অবধি বন্ধ। লাচুং, লাচেনের পর্যটন সংগঠনের তরফে অবশ্য বিজ্ঞপ্তি দিয়ে করোনার বিরুদ্ধে লড়াই এবং এলাকার স্বাস্থ্য পরিকাঠামো খারাপ জানিয়ে সমস্ত বুকিং বন্ধ রাখার কথা জানানো হয়েছে।

সেপ্টেম্বর মাসেই কালিম্পংঙের একটি অংশে গিয়ে হোম-স্টে মালিকদের নিয়ে সচেতনতা প্রসারের কাজ করেছেন ইস্টার্ন হিমালয়া ট্রাভেল অ্যান্ড ট্যুর অপারের্টস অ্যাসোসিয়েশনের (এতোয়া) সদস্যরা। করোনার বিরুদ্ধে লড়াই করে এগনোর কথাও তাঁদের বলা হয়। এতোয়ার সভাপতি দেবাশিস মৈত্র বলেন, ‘‘আমরা ওঁদের বুঝিয়েছি। কিন্তু যা হয়েছে, তাতে আর কিছু করার নেই। বেশিরভাগ হোম-স্টে মালিক সমাজের বিরুদ্ধে যেতে পারেন না। আপাতত তাই ওই অঞ্চলের বেশিরভাগ হোম-স্টে পুজোয় বন্ধই থাকছে। সব জায়গায় আবার এমন হলে তো পুজোর মুখে বিপদ বাড়বে।’’ রাজ্য প্রশাসনের উত্তরবঙ্গের এক কর্তা জানিয়েছেন, কালিম্পংকে ঘিরে নতুন করে পাহাড়ের এক প্রান্তে কিছু লোকজনকে সংগঠিত করার চেষ্টা শুরু হয়েছে। হোম-স্টে, রিসর্ট কালিম্পঙের একটি বড় অংশের অর্থনীতির ভিত্তি। সেখানে সমাজের কথা বলে ব্যবসা বন্ধ করাটা খুব সহজ। ছ’মাস গিয়েছে। আবার বেশি দিন ব্যবসা বন্ধ থাকলে অর্থসঙ্কট হওয়াটা স্বাভাবিক। তাতে ক্ষোভ-বিক্ষোভ ছড়ানোর আশঙ্কা রয়েছে। করোনাকে সামনে রেখে লোকজনকে উস্কানোর চেষ্টা হচ্ছে কিনা, তা-ও প্রশাসন, পুলিশ এবং রাজ্য গোয়েন্দা দফতরের তরফে খোঁজখবর শুরু হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Tourists Hill stations
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE