Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

সাধারণ উৎসবে এ বার বাজি পোড়ানো বন্ধ বেলুড় মঠে

শ্রীশ্রীরামকৃষ্ণদেবের জন্মতিথি উপলক্ষে আয়োজিত সাধারণ উৎসবের দিন বেলুড় মঠে বাজি পোড়ানো হয়ে আসছিল শতাধিক বছর ধরে।

—ফাইল চিত্র।

—ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৫ মার্চ ২০১৯ ০৪:৩৬
Share: Save:

বছর দুয়েক আগেই পৌষমেলায় আতসবাজির প্রদর্শনী তুলে দিয়েছে বিশ্বভারতী। এ বার সাধারণ উৎসবে বাজি বন্ধ রাখছে বেলুড় মঠও।

শ্রীশ্রীরামকৃষ্ণদেবের জন্মতিথি উপলক্ষে আয়োজিত সাধারণ উৎসবের দিন বেলুড় মঠে বাজি পোড়ানো হয়ে আসছিল শতাধিক বছর ধরে। এ বার আতসবাজির সেই প্রদর্শনী বন্ধ রাখা হচ্ছে। সম্প্রতি মঠ-চত্বরে বিজ্ঞপ্তি দিয়ে কর্তৃপক্ষ জানান, অনিবার্য কারণে (পরিবেশগত) ১৭ মার্চ, রবিবার সাধারণ উৎসবে কোনও রকম বাজি পোড়ানো হবে না।

রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনের সাধারণ সম্পাদক স্বামী সুবীরানন্দ বলেন, ‘‘শব্দ ও বায়ুদূষণ রুখতে এবং গঙ্গার ঘাটের সৌন্দর্যায়নের কাজ-সহ বিভিন্ন কারণে এ বছর আতসবাজি পোড়ানো বন্ধ রাখা হচ্ছে। আগামী বছর ফের বিষয়টি বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’’ বেলুড় মঠ সূত্রের খবর, সাধারণ উৎসবে পোড়ানো বাজিতে কতটা বায়ুদূষণ হচ্ছে, তা মাপার যন্ত্র বা পরিকাঠামো তাদের নেই। তাই এ বছর ওই ঐতিহ্যবাহী অনুষ্ঠান বাতিল করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

‘‘আদালতের নির্দেশকে মান্যতা দিয়ে পরিবেশ নষ্ট না-করে এবং মঠের ঐতিহ্য বজায় রেখে মঠ-কর্তৃপক্ষ যদি এই ব্যাপারে সরকারের সঙ্গে কথা বলতে চান, তা হলে আলোচনার মাধ্যমে কোনও পথ বেরোয় কি না, আমরা তা খতিয়ে দেখব,’’ বলেন পরিবেশমন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী।

৮ মার্চ শ্রীশ্রীরামকৃষ্ণদেবের ১৮৪তম জন্মতিথি পালন করা হবে। বেলুড় মঠ সূত্রের খবর, জন্মতিথির এক সপ্তাহ পরে প্রথম যে-রবিবার পড়ে, সেই দিনেই হয় সাধারণ উৎসব। শ্রীশ্রীরামকৃষ্ণদেবের মন্দিরে সন্ধ্যারতির পরে শ্রীশ্রীসারদা মায়ের ঘাটে বাজি পোড়ানো হত। বেলুড় মঠের কাজকর্ম শুরুর সময় থেকেই সাধারণ উৎসবে বাজি পোড়ানোর পরম্পরা চলে আসছে। তবে এর আগেও দু’বার বিভিন্ন কারণে আতসবাজির প্রদর্শনী স্থগিত রাখা হয়েছিল বলে জানান স্বামী সুবীরানন্দ।

পরিবেশকর্মী সুভাষ দত্ত জানান, যে-সব বাজিতে আলোর রোশনাই হয়, সেগুলোয় বায়ুদূষণ হয় অনেক বেশি। ক্ষতিও অনেক বেশি। বাতাসে সেই ধোঁয়া থেকে যায় দীর্ঘ ক্ষণ। এই বিষয়টি নিয়ে পরিবেশকর্মীদের আন্দোলনকে মান্যতা দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। এ বার আরও এক ধাপ এগিয়ে শীর্ষ আদালত জানিয়েছে, যে-সব বাজিতে ধোঁয়ার উপকরণ বেশি, সেগুলি পোড়ানো যাবে না।

‘‘কিন্তু এটা মাপবে কে? কতটা বায়ুদূষণ হচ্ছে, তা মাপার পরিকাঠামো এখনও তৈরি হয়নি বলেই গত বছর এই নির্দেশ শুধু দিল্লির ক্ষেত্রে প্রযোজ্য ছিল। তবে আগামী দিনে সর্বত্রই এটা নিয়ন্ত্রিত হবে বলে মনে করি,’’ বলেন সুভাষবাবু। পৌষমেলার সময় পরম্পরাগত ভাবে বাজির প্রদর্শনী হত শান্তিনিকেতনে। বিশ্বভারতী-কর্তৃপক্ষ ২০১৭ থেকে সেই প্রদর্শনী বন্ধ রেখেছেন। বেলুড় মঠ ও বিশ্বভারতীর এই পদক্ষেপ আগামী দিনে দৃষ্টান্ত হয়ে উঠবে বলে সুভাষবাবুর আশা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Belur Math Fire crackers বেলুড় মঠ
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE