Advertisement
০৮ মে ২০২৪
Joint Entrance Examination

পড়া ফেলে রাখলে হবে না, বলছে জয়েন্টের কৃতীরা

বেশির ভাগই রাজ্যের বাইরে গিয়ে পড়তে চায়।

—নিজস্ব চিত্র।

—নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৮ অগস্ট ২০২০ ০২:৫৫
Share: Save:

প্রথম দশের প্রথম তিন জন বাদে বাকি সাত জনই জানিয়ে দিয়েছে, তারা এখন তাকিয়ে আছে জয়েন্ট অ্যাডভান্সের দিকে। করোনা পরিস্থিতিতে জয়েন্ট অ্যাডভান্স পরীক্ষা ক্রমশ পিছিয়ে যাওয়ায় মাঝে মাঝে হতাশ লাগছে তাদের। তবে লক্ষ্যে তারা অবিচল। চতুর্থ থেকে দশম স্থানাধিকারীদের প্রায় প্রত্যেকেই আইআইটি-তে পড়তে চায় কম্পিউটার সায়েন্স নিয়ে। তাদের দ্বিতীয় পছন্দ, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়। তবে বেশির ভাগই রাজ্যের বাইরে গিয়ে পড়তে চায়। শুধু সপ্তম স্থানাধিকারী সোহম সমাদ্দার জানিয়েছে, সে চেন্নাই বা বিদেশের কোথাও গিয়ে অঙ্ক নিয়ে পড়তে চায়। অঙ্কের অলিম্পিয়াডেও অংশগ্রহণ করেছে সে।

সাউথ পয়েন্ট স্কুলের ছাত্র, হাওড়ার ক্যারি রোড এলাকার বাসিন্দা উৎসব বসু চতুর্থ হয়েছে। তার ইচ্ছে কম্পিউটার সায়েন্স অথবা অ্যাস্ট্রো-ফিজ়িক্স নিয়ে পড়া। ওই পড়ুয়ার বক্তব্য, এখন জয়েন্ট অ্যাডভান্সের প্রস্তুতি চলছে ঠিকই, কিন্তু করোনা অতিমারি এবং আমপানের জেরে একটু হলেও প্রস্তুতিতে বাধা পড়ছে। উৎসব বলল, ‘‘আমপানের পরে সেই যে বাড়ির ইন্টারনেট খারাপ হল, এখনও সেই লাইন ঠিক হয়নি। তাই ডেস্কটপে পড়াশোনা করতেই পারছি না। পুরোটাই মোবাইলের ভরসায়। মোবাইলেই শিক্ষকদের সঙ্গে ভিডিয়ো কলে কথা বলে সবটা করতে হচ্ছে।’’ পড়াশোনার ধরাবাঁধা কোনও সময় ছিল না উৎসবের। সে গান গাইতে ভালবাসে। যে দিন পড়তে ইচ্ছে করে না, সে দিন অনেকটা সময় ধরে গান গায়।

পঞ্চম স্থান পাওয়া পূর্ণেন্দু সেন দুর্গাপুরের ডিএভি মডেল স্কুল থেকে এ বার ৯৬.৬ শতাংশ নম্বর নিয়ে দ্বাদশ শ্রেণির পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছে। পূর্ণেন্দুর মা দীপ্তি সেন বললেন, ‘‘ভাল ফল করবে, আশা করেছিলাম। এতটা ভাল করবে, ভাবিনি।’’ পূর্ণেন্দু জানায়, দিনে ১০-১২ ঘণ্টা পড়াশোনা করত সে। সে-ও কম্পিউটার সায়েন্স নিয়ে পড়তে চায়। জয়েন্ট অ্যাডভ্যান্সের প্রস্তুতি নিচ্ছে। আইআইটি-তে পড়ার ইচ্ছে তারও। পড়াশোনার বাইরে সে ছোট থেকেই গল্পের বই পড়তে ভালবাসে। ছবিও আঁকে।

দিল্লি পাবলিক স্কুলের (রুবি পার্ক) ছাত্র, ষষ্ঠ স্থানাধিকারী অঙ্কুর ভৌমিক থাকে ভিআইপি রোডের একটি আবাসনে। অঙ্কুর জানিয়েছে, দ্বাদশ শ্রেণির বোর্ডের পরীক্ষায় সে ৯৭.৬ শতাংশ নম্বর পেয়েছিল। জয়েন্ট অ্যাডভান্সের জন্য এখন সে অনলাইন ক্লাস করছে নিয়মিত। অঙ্কুরের মা মিনা ভৌমিক বললেন, ‘‘ছেলের এই সাফল্যে খুব খুশি আমি। অঙ্কুর মাঝেমধ্যেই ভাইরাল জ্বরে অসুস্থ হয়ে পড়ে। তখন খুব বাড়াবাড়ি হয়। ওকে খুব দূরে পড়তে পাঠানোর ইচ্ছে নেই আমার।’’

গার্ডেন হাইস্কুলের ছাত্র, সপ্তম স্থান দখল করা সোহম সমাদ্দার জানায়, সে অঙ্ক নিয়ে পড়তে চায়। ২০১৯ সালে সে অঙ্কের অলিম্পিয়াডে যোগ দিয়েছিল। সেখানে বেশ কয়েক রাউন্ড পর্যন্ত এগোতেও পেরেছিল। কী ভাবে সাফল্য এল? সোহমের উত্তর, ‘‘খুব পরিকল্পনা করে ধরে-বেঁধে পড়িনি। তবে পড়া ফেলে রাখিনি। যেটা আজকের পড়া, সেটা আজই করেছি। কাল করব বলে ফেলে রাখিনি। পড়ার ফাঁকে গেম খেলেছি, গল্পের বই পড়েছি।’’

বেহালার আর্য বিদ্যামন্দির থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করা, ওই এলাকারই বাসিন্দা অরিত্র মিত্র অষ্টম স্থান পেয়েছে। উচ্চ মাধ্যমিকে সে ৯৭.২ শতাংশ নম্বর পেয়েছিল। তবে তার মতে, উচ্চ মাধ্যমিকের সব পরীক্ষা দিতে পারলে ফল আরও ভাল হত। যাদবপুরে সে কম্পিউটার সায়েন্স নিয়ে পড়তে চায়। জয়েন্ট অ্যাডভান্স দেওয়ার প্রস্তুতিও নিচ্ছে সে। অরিত্র বলল, ‘‘গল্পের বই পড়েছি। ইউটিউবে ভিডিয়ো দেখেছি। কিন্তু পড়াটাও ফেলে রাখিনি। শেষ বেলায় পড়ে বেরিয়ে যাব, এটা ভাবলে কিন্তু জয়েন্টে ভাল ফল করা যায় না।’’

সেন্ট জোনস স্কুলের ছাত্র, কাঁকুড়গাছির গিরিক মাসকারা নবম স্থান পেয়েছে। সে জানিয়েছে, জয়েন্ট অ্যাডভান্সের জন্য পড়তে এখন তার অনলাইন ক্লাসই ভরসা। তবে তাতে কোনও অসুবিধা হচ্ছে না তার।

শিবপুরের মন্দিরতলার বাসিন্দা, দশম স্থানাধিকারী অর্ক দত্ত রাজস্থানের কোটায় গিয়েছিল জয়েন্ট অ্যাডভান্সের প্রস্তুতি নিতে। সেখানকারই লালবাহাদুর শাস্ত্রী স্কুল থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পাশ করেছে সে। অর্কও কম্পিউটার সায়েন্স নিয়ে পড়তে চায়। অর্ক বলল, ‘‘জয়েন্ট অ্যাডভান্সের প্রস্তুতি ভাল করে নিয়েছিলাম বলে এই জয়েন্ট পরীক্ষার ফলও ভাল হয়েছে। তবে প্রথম দশের মধ্যে থাকব, এতটা ভাবতে পারিনি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Joint Entrance Examination Students Education
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE