Advertisement
০৫ মে ২০২৪

খাবার ঠিকঠাক আছে তো, বছরে চার পরীক্ষা স্কুলের

বছরে চার-চার বার ওই পরীক্ষা দিতে হবে প্রতিটি স্কুলকে। পরীক্ষা মানে ১৪ দফা প্রশ্নাবলির উত্তর-সহ চার বার নির্দিষ্ট ঘোষণাপত্র পূরণ করে স্কুলশিক্ষা দফতরে পাঠাতে হবে স্কুল-কর্তৃপক্ষকে।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

মধুমিতা দত্ত
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৯ নভেম্বর ২০১৭ ০৪:১৮
Share: Save:

দিনের দিন ওয়েবসাইটে হিসেব দাখিল, তত্ত্বাবধায়ক নিয়োগের মতো হরেক ব্যবস্থা সত্ত্বেও মিড-ডে মিল নিয়ে অভিযোগের স্রোত কমছে না। এই পরিস্থিতিতে এ বার থেকে স্কুলে দুপুরের খাবারের গুণমান ও স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে রীতিমতো প্রশ্নপত্র পাঠিয়ে স্কুল-কর্তৃপক্ষের পরীক্ষার ব্যবস্থা করছে রাজ্য সরকার।

বছরে চার-চার বার ওই পরীক্ষা দিতে হবে প্রতিটি স্কুলকে। পরীক্ষা মানে ১৪ দফা প্রশ্নাবলির উত্তর-সহ চার বার নির্দিষ্ট ঘোষণাপত্র পূরণ করে স্কুলশিক্ষা দফতরে পাঠাতে হবে স্কুল-কর্তৃপক্ষকে। তাতে জানাতে হবে মিড-ডে মিলের মান ঠিকঠাক আছে কি না, খাওয়ার জায়গা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন কি না ইত্যাদি।

স্কুলশিক্ষা দফতরের খবর, স্কুলে দুপুরের খাবার নিয়ে বারে বারেই নানা ধরনের অভিযোগ উঠছে। তার মধ্যে আছে: যত জন পড়ুয়া, খাতায়-কলমে তার থেকে সংখ্যাটা অনেক বাড়িয়ে দেখানো, চাল বা ডিম চুরি, ঘেরা পরিচ্ছন্ন জায়গার বদলে পড়ুয়াদের রাস্তায় বা খোলা মাঠে বসিয়ে খাওয়ানো ইত্যাদি। শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় নিজে এই নিয়ে বহু বার ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। এই বিষয়ে জেলাশাসকদের মনোযোগ দেওয়া উচিত বলেও মন্তব্য করেছেন। কয়েকটি স্কুলে তদন্তও হয়েছে। কিন্তু সমস্যার সুরাহা বিশেষ হয়নি।

তাই মিড-ডে মিল বণ্টনে স্বচ্ছতা বজায় রাখতে সম্প্রতি রোজকার খাবারের হিসেব স্কুলশিক্ষা দফতরের ওয়েবসাইটে দেওয়ার ব্যবস্থা হয়েছে। সেই সঙ্গে স্কুলে ঘুরে ঘুরে মিড-ডে মিল বণ্টনে নজরদারি করার জন্য ৭৩১ জন সুপারভাইজার নিয়োগের সিদ্ধান্তও নিয়েছে রাজ্য সরকার। এই সব ব্যবস্থার পাশাপাশি মিড-ডে মিলে দেওয়া খাদ্যের গুণমান কেমন, এ বার সরকারের নির্দিষ্ট ঘোষণাপত্রে স্কুল-কর্তৃপক্ষের তরফে নিয়মিত তা জানানো বাধ্যতামূলক করা হল।

মোট ১৪ দফা প্রশ্নের উত্তর দিতে হবে স্কুল-কর্তৃপক্ষকে। তার মধ্যে থাকছে: চাল, ডাল, আনাজপাতি, ডিম ও মাংসের গুণমান কেমন। বাসনকোসন পরিচ্ছন্ন কি না। রাঁধুনি অ্যাপ্রন, দস্তানা, টুপি পরেন কি না। রান্নার পরে পড়ুয়াদের পাতে দেওয়ার আগে তা চেখে দেখা হয় কি না। রান্নাঘর ও খাওয়ার জায়গা নিয়মিত পরিষ্কার করা হয় কি না ইত্যাদি।

স্কুলশিক্ষা দফতরের এক আধিকারিক বুধবার জানান, আসলে সরকার চাইছে না, মিড-ডে মিল বণ্টনের বিষয়ে কোনও ত্রুটিবিচ্যুতি থাকুক। নির্দিষ্ট প্রশ্নের উত্তর-সহ নিয়মিত ঘোষণাপত্র দাখিলের বিষয়টি আবশ্যিক করায় স্কুল-কর্তৃপক্ষ নিজের নিজের প্রতিষ্ঠানের সুনাম রক্ষায় এই বিষয়ে দায়বদ্ধতার তাগিদ আরও বেশি করে অনুভব করবেন বলেই আশা করা হচ্ছে।

শিক্ষক মহলের একাংশ কিন্তু মিড-ডে মিলের দায়দায়িত্ব স্কুল-কর্তৃপক্ষের হাত থেকে সরিয়ে নেওয়ার কথাই নতুন করে তুলছে। তাদের বক্তব্য, পঠনপাঠনের বাইরে গিয়ে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের পক্ষে এই খাবারের ভার নেওয়া সম্ভব নয় বলে বারে বারেই জানানো হয়েছে। পড়ুয়াদের খাবারের বিষয়টি দেখভাল করার জন্য আলাদা ব্যবস্থা করার দাবি দীর্ঘদিনের। বঙ্গীয় শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী সমিতির সহ-সাধারণ সম্পাদক স্বপন মণ্ডল এ দিন বলেন, ‘‘এই দায়িত্ব কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে সরিয়ে নিলে স্কুলের পক্ষেই ভাল।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Mid Day Meal মিডডে মিল
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE