—ফাইল চিত্র।
সেতু (ব্রিজ) রক্ষণাবেক্ষণের জন্য বিশেষজ্ঞ কমিটি তৈরির কথা আগেই বলেছেন। এ বার পুরোদস্তুর ব্রিজ নিগম (ব্রিজ কর্পোরেশন) তৈরির পরিকল্পনার কথা জানালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
একই সঙ্গে তিনি অবশ্য ইঙ্গিত দিয়েছেন যে, বড় বড় ব্রিজ তৈরির ভার পূর্ত দফতরের উপরেই থাকবে। উল্লেখ্য, সম্প্রতি মাঝেরহাট ব্রিজের দুর্ঘটনার পরে সরকারি তদন্ত রিপোর্টে পূর্ত দফতরের দিকে আঙুল তোলা হয়। মুখ্যমন্ত্রী নিজেও তা জানিয়েছেন। তার পরেও বড় ব্রিজ তৈরির ভার ওই দফতরের হাতেই রেখে দেওয়া অনেকের মতে তাৎপর্যপূর্ণ।
সোমবার মিলানে মমতা বলেন, এত দিন জেলা পরিষদ, গ্রাম পঞ্চায়েতগুলি অনেক ব্রিজ তৈরি করেছে। অথচ তার জন্য প্রয়োজনীয় দক্ষতা কিংবা উপযু্ক্ত পরিকাঠামো তাদের নেই। সেই কারণেই এ বার ব্রিজ নিগম তৈরির কথা ভাবা হচ্ছে। এই নিগমে কাঁরা থাকবেন কিংবা ঠিক কোন কোন কাজ এর এক্তিয়ারে থাকবে, সেই বিষয়গুলি এখনও চূড়ান্ত হয়নি। মুখ্যমন্ত্রী কলকাতায় ফেরার পরে আলোচনার মাধ্যমে সেই সমস্ত কিছু চূড়ান্ত হবে।
পোস্তা, শিলিগুড়ির পরে ফের কাকদ্বীপে ভেঙে পড়েছে নির্মীয়মাণ ব্রিজ। পিছু ছাড়ছে না মাঝেরহাট ব্রিজ বিতর্কও। এই পরিস্থিতিতে মুখ্যমন্ত্রীর ইঙ্গিত, এই সমস্যার দীর্ঘ মেয়াদি সমাধান খুঁজছে তাঁর সরকার। যে কারণে সম্প্রতি ফ্রাঙ্কফুর্টেও তিনি বলেছিলেন, ‘‘অনেক ব্রিজ যখন তৈরি হয়েছিল, তখন এক রকম ওজন বহনের ক্ষমতা মাথায় রেখে তা গড়া হয়েছিল। কিন্তু এখন তার উপরে চাপ বহু গুণ বেড়েছে। তাই সব ব্রিজের রক্ষণাবেক্ষণের জন্য আমরা একটি বিশেষজ্ঞ কমিটি তৈরি করছি।’’
এ দিন সে কথা মনে করিয়ে মমতা বলেন, ‘‘ব্রিজ রক্ষণাবেক্ষণের জন্য বিশেষজ্ঞ কমিটি গড়ার কথা ইতিমধ্যেই বলেছি। যাতে ব্রিজের স্বাস্থ্য নিয়মিত পরীক্ষা, রক্ষণাবেক্ষণ এবং যত্নে কোনও ত্রুটি না থাকে।’’ এখন সমস্যার পাকাপোক্ত সমাধানের জন্য নিগম গড়াতেও জোর দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
মাঝেরহাটে ব্রিজ ভেঙে পড়ার পর থেকে বিরোধীরা যে নাগাড়ে তাঁকে নিশানা করছেন, তা বিলক্ষণ জানেন মুখ্যমন্ত্রী। যে কারণে সরাসরি সে প্রসঙ্গ না তুলেও তিনি বলেছিলেন, ‘‘এক-একটা ব্রিজ ১০০-২০০ বছরের পুরনো। আমরা নতুন কিছু তৈরির চেষ্টা করছি। রাস্তা হয়েছে। সেতু হয়েছে। এখন বিরোধীরা চিৎকার করছেন। তাঁদের তো জানা উচিত যে, কোন ব্রিজ তাঁদের আমলে তৈরি।’’
একই সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছিলেন, অনেক ব্রিজই পঞ্চায়েত বা জেলা পরিষদ তৈরি করে। কিন্তু সিদ্ধান্ত হয়েছে যে, এখন থেকে ৫০ মিটারের বেশি লম্বা যে কোনও ব্রিজ পিডব্লিউডি-ই তৈরি করবে। দৈর্ঘ্য ৫০ মিটারই হবে কি না, তা চূড়ান্ত এখনও হয়নি। কিন্তু মোটের উপর একেবারে ছোট কোনও ব্রিজ ছাড়া অন্য প্রায় সব ব্রিজ তৈরিরই দায়িত্ব বর্তাবে পিডব্লিউডি-র উপরে।
উপযুক্ত দক্ষতা ও পরিকাঠামো ছাড়াই জেলা পরিষদ এবং পঞ্চায়েতের ব্রিজ তৈরির সমস্যার কথা এ দিন ফের তুলেছেন মুখ্যমন্ত্রী। ব্রিজ নিগম তৈরির পরিকল্পনার কথাও উঠে এসেছে সেই সূত্রেই। তবে ব্রিজ নিগম, ব্রিজ রক্ষণাবেক্ষণের বিশেষজ্ঞ কমিটি এবং পিডব্লিউডি-র মধ্যে দায়িত্ব কী ভাবে ভাগাভাগি হবে এবং কোন বিষয় কার এক্তিয়ারে থাকবে, সেই বিষয়টি চূড়ান্ত হবে মুখ্যমন্ত্রী ফেরার পরেই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy