সঞ্জয় রায়
ডানকুনির সঞ্জয় রায়ের মৃত্যুর ঘটনায় অ্যাপোলো হাসপাতালের অভিযুক্ত কয়েক জনের বিরুদ্ধে যথেষ্ট তথ্যপ্রমাণ হাতে রয়েছে পুলিশের। তার পরেও তাঁদের গ্রেফতার করা হবে কি না, তার জন্য নবান্নের নির্দেশের অপেক্ষায় রয়েছে লালবাজার।
পুলিশের একটি অংশের দাবি, তদন্তে সঞ্জয়ের চিকিৎসার সঙ্গে সরাসরি যুক্ত তিন চিকিৎসক এবং প্রশাসনিক স্তরের বেশ কয়েক জনের বিরুদ্ধে জোর করে টাকা আদায় এবং ভুল চিকিৎসার সুনির্দিষ্ট প্রমাণ মিলেছে। এমনকী হুমকি দেওয়া থেকে শুরু করে বাড়ানো-চড়ানো বিলের প্রমাণও রয়েছে তদন্তকারীদের হাতে। দফায় দফায় ওই অভিযুক্তদের ডেকে জেরা করেছেন পুলিশের শীর্ষ কর্তারা।
মাস দুয়েকের টানা তদন্তে যথেষ্ট তথ্যপ্রমাণ হাতে আসার পরেও কেন অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না? লালবাজার সূত্রের দাবি, দুটি সম্ভবনা খোলা রাখছেন তদন্তকারীরা। এক—অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট জমা দিয়ে তাঁদের হেফাজতে নেওয়ার আবেদন করা। অথবা, অভিযুক্তদের গ্রেফতার করে তার পরে চার্জশিট জমা দেওয়া। ঠিক কী করা হবে, তার জন্যই নবান্নের দিকে তাকিয়ে লালবাজার।
গত ২৫ ফেব্রুয়ারি এক চিকিৎসক-সহ ওই হাসপাতালের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করাছিল সঞ্জয়ের পরিবার। তার ভিত্তিতে অবহেলায় মৃত্যু এবং তোলাবাজির মামলা শুরু করে পুলিশ। সেই মামলায় একে একে তলব করা হয় সঞ্জয়ের চিকিৎসার সঙ্গে সরাসরি যুক্ত ওই হাসপাতালের ১৬ জন চিকিৎসককে। চিকিৎসা সংক্রান্ত বিভিন্ন নথি খতিয়ে দেখার পর এবং দফায় দফায় চিকিৎসকদের জেরার পর তাঁদের মধ্যে তিন জনকে দোষী মনে করছেন তদন্তকারীরা।
পুলিশ রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে— ওই তিন চিকিৎসকের কথায় সঞ্জয়ের এমন বেশ কিছু পরীক্ষা করানো হয়, যার কোনও প্রয়োজনই ছিল না। পাশাপাশি চিকিৎসক এবং প্রশাসনিক কর্তাদের একাংশের পরামর্শে যে ভুয়ো বিল তৈরি করা হয়েছিল, তার প্রমাণও হাতে পেয়েছেন তদন্তকারীরা। পুলিশ সূত্রের খবর, যে সব চিকিৎসক তাঁকে দেখতেই আসেননি, তাঁদের ফি-ও জুড়ে দেওয়া হয়েছে বিলে।
পুলিশ জানিয়েছে, সব কিছুর পরে ফের ওই হাসপাতালের কর্তাদের ডেকে কথা বলেছেন তদন্তকারীরা। চিকিৎসা সংক্রান্ত কয়েকটি বিষয় নিয়ে এখনও কিছুটা অস্বচ্ছতা রয়েছে তাঁদের। বিশেষজ্ঞদের কাছে সেগুলি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
পুলিশের একটি অংশের দাবি, তদন্তে অ্যাপোলোর বিরুদ্ধে তথ্য বিকৃতি ও জাল নথি পেশের অভিযোগ নির্দিষ্ট প্রমাণ মিলেছে। ‘অ্যাঞ্জিও এম্বোলাইজেশন’ পরীক্ষার জন্য টাকা নেওয়া হলেও তা যে আদৌ করাই হয়নি, সে প্রমাণও মিলেছে। পুলিশ চাওয়ায় ওই পরীক্ষার জাল সিডি জমা দেওয়া হয়েছিল বলে তদন্তকারীদের দাবি। এ ছাড়া সঞ্জয়কে ওষুধের মাত্রাতিরিক্ত ডোজ দেওয়ায় তাঁর লিভার ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে পড়েছিল বলেও তদন্তে জানা গিয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy