Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪
State News

বুথে বুথে শান্তিবাহিনী গড়ার নির্দেশ, আরও যা যা বললেন মুখ্যমন্ত্রী...

এটা বিজেপি-র একটা মর্ডান ডিজাইন হয়ে গিয়েছে। ট্রেন্ড হয়ে গিয়েছে। মানুষকে এই ট্রেন্ড থেকে আমরা সতর্ক থাকতে বলছি একটাই কারণে, বললেন মুখ্যমন্ত্রী

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ।—ফাইল চিত্র।

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ।—ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৫ জুলাই ২০১৭ ১৮:৪২
Share: Save:

আমাদের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় না এঁটে উঠতে পেরেই চক্রান্ত করছে।

চক্রান্তটা তারা রাজনৈতিক ভাবে করতে পারে না, সামাজিক ভাবেও লড়তে পারে না, অর্থনৈতিক ভাবেও লড়তে পারে না, উন্নয়নের প্রতিযোগিতাতেও পারে না। তাই তারা চক্রান্ত করে। শুধুই মিথ্যা কথা বলে।

ফেসবুক আমি নিজেও ভালবাসি। আমি নিজেও করি।

ফেসবুককে ভুল ভাবে ব্যবহার করা হচ্ছে। মিথ্যা প্রচার চালানো হচ্ছে। গুজব ছড়ানো হচ্ছে। অপপ্রচার করা হচ্ছে।

আরও পড়ুন

এ বার তোপ কেন্দ্র থেকে, মমতাকে তীব্র আক্রমণ মুখতার আব্বাস নকভির

আমি গঙ্গাসাগর মেলার সময় দেখেছিলাম, একটি ফোটো দেওয়া হয়েছিল টুইটারে। বলা হয়েছিল পদপিষ্ট হয়ে মারা গিয়েছে। ওই ঘটনাই ঘটেনি। কিন্তু, মিথ্যা ভাবে দেখানো হয়েছিল। আমরা পরে আইডেন্টিফাই করেছিলাম, ওটা ভুল ফোটো ছিল।

তার কিছু দিন পর বাংলাদেশে একটা ঘটনা ঘটেছে। ফেসবুকে সেটা পোস্ট করেছে। টুইটারেও পোস্ট করেছে। বলছে, দেখো বাংলাতে অত্যাচার চলছে। সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা চলছে। কিন্তু বাংলাতে ঘটনাটা ঘটেইনি। কখনও বিভিন্ন দেশের ফোটো নিয়ে, বিভিন্ন রাজ্যের ফোটো নিয়ে বাংলার ঘটনা বলে চালিয়ে দিয়েছে।

এটা বিজেপি-র একটা মর্ডান ডিজাইন হয়ে গিয়েছে। ট্রেন্ড হয়ে গিয়েছে। মানুষকে এই ট্রেন্ড থেকে আমরা সতর্ক থাকতে বলছি একটাই কারণে।

দেখুন, আগুন নেভানো খুব শক্ত। কিন্তু আগুন লাগিয়ে দেওয়া খুব সহজ। আগুন লাগিয়ে দেওয়ার জন্য একটা দেশলাই যথেষ্ট।

কিন্তু আমরা তো নিশ্চয়ই আমাদের ঘর সামলাবো। আমাদের পাড়া রক্ষা করব। আমাদের এলাকা রক্ষা করব।

একটা লোক আগুন লাগিয়ে দেবে, তা হলে আমার ঘরটা কে তৈরি করবে?

এলাকার ছাত্র, যৌবন, ক্লাব, মন্দির কমিটি, মসজিদ কমিটি থেকে শুরু করে যারা আছেন, সকল নাগরিক, শান্তিপূর্ণ পরিবেশে যাঁরা থাকতে ভালবাসেন, সভ্য নাগরিক, তাঁরাই এটা রক্ষা করতে পারেন।

এক জন আগুন লাগিয়ে দেবে, আর সরকারের পয়সা আছে, তাই সারিয়ে দেবে? বার বার তো এই জিনিস হয় না।

সুতরাং আমরা মনে করি যে, পাড়া প্রতিবেশিরাই আমাদের সবচেয়ে বড় বন্ধু। পাড়ার শান্তি পাড়ার লোকেরাই রাখতে পারে। পল্লির শান্তি পল্লিবাসীরাই রক্ষা করতে পারেন। এলাকার শান্তি এলাকার মানুষই রক্ষা করতে পারেন।

এবং সে জন্য আজকে আমরা একটা প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত নিয়েছি।

গতকালই আমি শুনছিলাম, হাজরা মোড়ের কাছে একটা মিটিং করে এমন এমন কথা বলা হয়েছে... এটা যদি ছড়িয়ে পড়ত, তা হলে দাঙ্গা বাধতে পারত।

এটা বিজেপি করছে, ডাইরেক্টলি দলের পতাকা নিয়ে।

একটা রাজনৈতিক দল কখনও রাজ্যে ক্ষমতায় আসে। কখনও কেন্দ্রে। কিন্তু, কোনও রাজনৈতিক দলের অধিকার নেই এলাকায় দাঙ্গা বাধানোর। বা ক্ষমতা ব্যবহার করে সরকারের মেশিনারি মিসইউজ করে গুজব ছড়ানো।

তাই আমরা একটা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, যাতে কেউ এলাকায় গিয়ে উস্কানি দিচ্ছেন কি না, কেউ এলাকায় গিয়ে কোনও দাঙ্গা হাঙ্গামার চক্রান্ত করছে কি না, কেউ এলাকায় গিয়ে মানুষকে ভুল বুঝিয়ে ভাগাভাগি করছে কি না, আগুন জ্বানিয়ে দিচ্ছে কি না, প্রগতির স্বার্থে, শান্তির স্বার্থে আমরা আজকে একটা প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত নিয়েছি।

সেটা হচ্ছে প্রতি বুথে বুথে, লোকাল থানাগুলো, ছাত্রদের নিয়ে যুবদের নিয়ে, পাড়ার শান্তিপ্রিয় নাগরিকদের নিয়ে, একটা করে শান্তিবাহিনী তৈরি করবে।

আমার পাড়ার শান্তি আমি রক্ষা করব। আপনার শান্তি আপনি নিজে রক্ষা করুন। প্রশাসন আপনার সঙ্গে আছে। প্রশাসন আপনার পাশে আছে।

এটা আমরা আগামী ১৫ দিনের মধ্যেই করব। ২০ জন করে এক একটা বাহিনীতে থাকবেন। প্রত্যেকটা বুথে একটা করে শান্তি বাহিনী তৈরি করা হচ্ছে এ সব দিকে নজর দেওয়ার জন্য।

আমি শুনতে পাচ্ছি, বাইরে থেকেও কিছু লোকজন নিয়ে আসা হচ্ছে। যারা জলসার নাম করে, কোথাও মিটিং করার নাম করে, কোথাও গোরক্ষার নাম করে, কোথাও নানা রকম ভাবে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতিকে বিষাক্ত করে তুলে সংহতিটাকে নষ্ট করার জন্য, শান্তিটাকে নষ্ট করার জন্য আগুন নিয়ে খেলছে।

এই খেলাটাকে বন্ধ করার জন্য প্রশাসনিক স্তরে প্রত্যেকটা থানার আন্ডারে যতগুলো বুথ আছে প্রত্যেকটা বুথে, আমাদের ৬০ হাজারের কাছে বুথ আছে, প্রত্যেকটা বুথে আগামী ১৫ দিনের মধ্যে আমরা শান্তিবাহিনী তৈরি করব।

প্রশাসন যেমন খেলাধূলা করে, আইন শৃঙ্খলাও সামলায়, সাংস্কৃতিক প্রোগ্রামও করে, রক্তদান কর্মসূচিও করে, তেমন শান্তিবাহিনী তৈরি করাও একটা বড় কর্মসূচি।

এই চক্রান্তের বিরুদ্ধে সতর্কতা মূলক ব্যবস্থা নিতে আমরা ক্লাবগুলোকেও অনুরোধ করব, আমরা সকলকে অনুরোধ করব এলাকায় শান্তি রক্ষা করতে শান্তিবাহিনীর সঙ্গে থাকুন।

মোটামুটি এখন পরিস্থিতি শান্ত আছে।

আমরা শান্তি চাই।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE