মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।
বিজেপির রথের পথে তৃণমূল রাজনৈতিক বাধা দেবে না। শুক্রবার দলীয় সভায় এ কথা স্পষ্ট করে দিয়েছেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে যে দিন যে এলাকায় বিজেপির রথ যাবে, তার পরের দিন ওই পথেই তৃণমূল ‘পবিত্রযাত্রা’ করবে বলেও ঘোষণা করেছেন মমতা। বস্তুত, রথের মোকাবিলায় এটাই তৃণমূলের রাজনৈতিক কর্মসূচি। অবশ্য মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে তিনি জানিয়ে রেখেছেন, ওই রথযাত্রা ঘিরে আইনশৃঙ্খলার বা প্রশাসনিক কোনও সমস্যা হলে প্রশাসন তা দেখে নেবে।
আগামী ৫ ডিসেম্বর তারাপীঠ থেকে, ৭ ডিসেম্বর কোচবিহার থেকে এবং ৯ ডিসেম্বর গঙ্গাসাগর থেকে দলের কেন্দ্রীয় নেতাদের উপস্থিতিতে রথ বার করবে বিজেপি। সেই রথকে কোনও ভাবে না আটকানোর নির্দেশ দিয়ে শুক্রবার নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে দলীয় সভায় মমতা বলেন, ‘‘এই রথকে পাত্তা দেবেন না। এটা রথযাত্রা নয়, রাবণযাত্রা। ওটা যুদ্ধ করার রথ। এ সব নকল যাত্রা। এই রথ যে দিন যাবে, কেউ কোথাও কোনও রকম ঝগড়া বা গোলমাল করবেন না। বাধা দেবেন না। কোথাও
কোনও রকম গোলমাল হলে প্রশাসন ব্যবস্থা নেবে।’’
এই সূত্রেই রাজ্যের সব জেলা থেকে আসা নেতা-কর্মীদের সামনে তিনি বললেন, ‘‘যে সময়ে, যে পথে রাবণযাত্রা যাবে, ঠিক তার পরের দিন একই সময়ে তৃণমূল পবিত্রযাত্রা, শান্তিযাত্রা, একতাযাত্রা করবে। পবিত্রযাত্রায় ফেস্টুনে লিখবেন, বিজেপি হটাও, দেশ বাঁচাও।’’
গেরুয়া শিবিরের এই রথে রাজ্যের কোনও মঙ্গল হবে না বলেই মন্তব্য করেছেন তৃণমূল নেত্রী। তাঁর কথায়, ‘‘রথ তো নয়, বিলাসবহুল শীতাতপনিয়ন্ত্রিত পাঁচতারা হোটেল। এই রথেই থাকা, খাওয়া, ঘোরার ব্যবস্থা থাকছে। এতেই বিলাসবহুল শক্তির প্রদর্শন করবে ওরা।’’
তৃণমূল নেত্রীর বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে বিজেপির সর্বভারতীয় সম্পাদক রাহুল সিংহর প্রতিক্রিয়া, ‘‘পবিত্রযাত্রা বার করে রথযাত্রাকে মোকাবিলা করার চেষ্টা করছে তৃণমূল। পুরুলিয়ায় অমিত শাহের সভার পরে একই ভাবে মোকাবিলার চেষ্টা করেছিল ওরা। মাঠের এক তৃতীয়াংশও ভরাতে পারেনি। পবিত্রযাত্রা তৃণমূলের শ্মশানযাত্রা হবে।’’ সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তীর কটাক্ষ, ‘‘খাল কেটে বাংলায় বিজেপির কুমির মমতাই এনেছিলেন। মানুষের কাছে তার জন্য হাতজোড় করে ক্ষমা চান। নিজেকে আগে পবিত্র করুন। তার পরে পবিত্রযাত্রা করবেন।’’ প্রদেশ কংগ্রেসের প্রচার কমিটির চেয়ারম্যান অধীর চৌধুরীরও বক্তব্য, ‘‘সাম্প্রদায়িকতাকে রুখতে পারে ধর্মনিরপেক্ষতা। কিন্তু যে বিজেপিকে দিদি একদিন বাংলায় এনেছিলেন, এখন তাদেরই ঘরে ঘরে পৌঁছে দিতে চাইছেন! তাঁর এই যাত্রার ফলে বিজেপির রথই নিখরচায় প্রচার পেল।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy