প্রতীকী ছবি।
জঙ্গলমহলের শবরপল্লিতে মৃত্যুর ঘটনাকে হাতিয়ার করে ময়দানে নামল বিরোধীরা। লালগড়ের পূর্ণাপানি গ্রামের জঙ্গলখাসে এসে শুক্রবার মৃতদের পরিজনদের সঙ্গে দেখা করেছেন বিজেপি নেতারা। কংগ্রেস ও সিপিএমের যৌথ প্রতিনিধি দল আজ, শনিবার সেখানে যাচ্ছে। বিধানসভার চলতি অধিবেশনেও অনাহার প্রসঙ্গে সরব হওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে তারা। শাসক তৃণমূলের নেতারা অবশ্য পাল্টা বলছেন, অসুখে মানুষ মারা যাওয়ার মৃত্যুর ঘটনা নিয়ে ‘অপপ্রচার’ চালাচ্ছে বিরোধীরা।
পূর্ণাপানি গ্রামে এ দিন গিয়েছিলেন রাজ্য বিজেপির সাধারণ সম্পাদক সায়ন্তন বসু, যুব মোর্চার প্রাক্তন সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত ঠক্করেরা। সায়ন্তনের অভিযোগ, ‘‘কেন্দ্র টাকা দিচ্ছে। চাল, ডাল, গম দিচ্ছে। আর তৃণমূলের লোকেরা টাকা লুট করছে।’’ তবে স্থানীয় সূত্রের খবর, গ্রামে মৃত এক জনের পরিবার বিজেপি নেতাদের জিজ্ঞাসা করেন, এত দিন কোথায় ছিলেন? বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ এ দিনই গোপীবল্লভপুরে এসেছিলেন জগদ্ধাত্রী পুজোর উদ্বোধনে। লালগড়ে না গেলেও ওই অনুষ্ঠানের মঞ্চ থেকেই দিলীপবাবু বলেন, ‘‘লালগড়ের ঘটনা উৎসবের আনন্দ ফিকে করে দিয়েছে। শবরদের মৃত্যুর ঘটনা চাপা দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে। বলা হচ্ছে, চিকিৎসা করায়নি, তাই মারা গিয়েছে। ওষুধ নেই, ডাক্তার নেই। চিকিৎসা করাবে কী করে?’’
বিধানসভা চত্বরে প্রায় একই সুরে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে তোপ দেগেছেন বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নান ও বাম পরিষদীয় নেতা সুজন চক্রবর্তী। তাঁদেরও অভিযোগ, শবরদের মৃত্যুর আসল ঘটনা চাপা দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে। এক দিকে যখন অনাহারে মৃত্যুর অভিযোগ আসছে, মুখ্যমন্ত্রী তখন উৎসবে যোগ দিতে যাচ্ছেন হেলিকপ্টারে! কংগ্রেসের বিধায়ক অসিত মিত্র, সুখবিলাস বর্মা, সুদীপ মুখোপাধ্যায় এবং সিপিএমের খগেন মুর্মু, সুজিত চক্রবর্তী, প্রদীপ সাহারা আজ কলকাতা থেকে জঙ্গলখাসে যাচ্ছেন। তাঁদের সঙ্গে যোগ দেবেন সিপিএমের ঝাড়গ্রাম জেলা সম্পাদক পুলিনবিহারী বাস্কে। আগামী সপ্তাহেই বাম ও কংগ্রেস শবরদের মৃত্যু নিয়ে বিধানসভায় দৃষ্টি আকর্ষণী প্রস্তাব আনবে। বিরোধী দলনেতা মান্নান জানিয়েছেন, সরকারের ‘আচরণ’ দেখে তাঁদের কর্মপদ্ধতি ঠিক করবেন। প্রয়োজনে ওই প্রশ্নেই মুলতবি প্রস্তাব আসবে।
বিরোধীদের যাবতীয় অভিযোগ উড়িয়ে তৃণমূলের ঝাড়গ্রাম জেলা চেয়ারম্যান সুকুমার হাঁসদা অবশ্য বলেন, ‘‘উৎসবের রং ফিকে হয়নি। অসুখে লোক মারা গিয়েছে। বিরোধীরা অপপ্রচার করছে।’’ এলাকা ঘুরে এসে সিপিআই (এম-এল) লিবারেশনের একটি প্রতিনিধিদল আবার পাল্টা প্রশ্ন তুলেছে, মদ
খেয়ে এবং ওষুধ না খেয়ে মৃত্যুর যে ব্যাখ্যা সরকার দিয়েছে, তার মানে দাঁড়ায় ওই শবরেরা ‘গণ-আত্মহত্যা’ করছেন!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy