গোয়ালতোড়ে এই পোস্টার ঘিরেই শোরগোল। নিজস্ব চিত্র
পরিবহণমন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারীকে হুমকি দিয়ে কয়েক দিন আগেই পোস্টার পড়েছিল মেদিনীপুর গ্রামীণের মুড়াকাটা এলাকায়। এ বার মাওবাদী নামাঙ্কিত পোস্টার মিলল গোয়ালতোড়ের আমলাশুলিতে।
রবিবার সকালে আমলাশুলি পঞ্চায়েতের জুনশোল ও আউলিয়া গ্রামের জঙ্গল এলাকায় সাদা কাগজে লাল কালিতে হাতে লেখা কয়েকটি পোস্টার দেখতে পান স্থানীয় বাসিন্দারা। তাঁরাই আমলাশুলি ফাঁড়িতে খবর দেন। পোস্টারগুলিতে লেখা ছিল ‘জঙ্গলমহল মাওবাদী সংগঠন (সিপিআই) জিন্দাবাদ’, ‘মাওবাদী (সিপিআই) জিন্দাবাদ’। পুলিশ এসে পোস্টারগুলি নিয়ে যায়।
মাওবাদী সন্দেহে মঙ্গলবার রাতে গোয়ালতোড়ের ফুটবল ময়দানের পাশের জঙ্গল থেকে সব্যসাচী গোস্বামী, সঞ্জীব মজুমদার, অর্কদীপ গোস্বামী ওরফে বিজয় ও টিপু সুলতান ওরফে স্বপন নামে চার জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তার পরে ফের এই পোস্টার উদ্ধারের ঘটনা জঙ্গলমহলে নতুন করে মাওবাদী কার্যকলাপের জল্পনা উস্কে দিয়েছে। জেলা পরিষদ স্থানীয় তৃণমূল সদস্য চন্দন সাহা বলেন, ‘‘আমলাশুলির জুনশোল, আউলিয়া এলাকায় কয়েকটি পোস্টার দেখা গিয়েছে বলে খবর পেয়েছি। তবে এই সব এলাকায় কখনওই মাওবাদী কার্যকলাপ ছিল না। মনে হচ্ছে, এটা বিরোধী কোনও রাজনৈতিক দলের চক্রান্ত।’’ আর বিরোধীদের দাবি, এটা তৃণমূলেরই কোন্দলের ফল।
পুলিশ অবশ্য জঙ্গলমহলে মাওবাদী কার্যকলাপ নিয়ে তদন্ত শুরু করেছে। শান্তিনিকেতনের পশ্চিম গুরুপল্লির বাসিন্দা ধৃত টিপুকে নিয়ে শনিবার রাতে তাঁদের নিউ টাউনের ফ্ল্যাটে পুলিশ তল্লাশি চালায়। সম্ভবত টিপুর ব্যবহৃত ল্যাপটপের খোঁজেই এই তল্লাশি। তবে পুলিশ সরকারি ভাবে এই বিষয়ে মুখ খুলতে চায়নি। ২০১৩ সালে পাঠভবন থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করে টিপু বিশ্বভারতীর অর্থনীতি বিভাগে ভর্তি হলেও পড়া শেষ করেননি। তিনি এখন
সংস্কৃত বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলার ছাত্র। বিশ্বভারতীতে পড়ার সময় নকশালপন্থী ছাত্র সংগঠন এবং মানবাধিকার সংগঠন এপিডিআরের সঙ্গে যোগাযোগ ছিল তাঁর।
টিপুর বাবা কামালউদ্দিন রবিবার বলেন, ‘‘আমাদের বাড়িতে ছেলের কোনও ট্যাব বা ল্যাপটপ নেই। তাই ও-সব পাঠানোরও কোনও ব্যাপার নেই। পুলিশকে ফোন করে সে-কথা বলে দিয়েছি।’’ তাঁদের নিউ টাউনের ফ্ল্যাট থেকে নতুন করে কোনও কিছু বাজেয়াপ্ত করা হয়নি বলেও জানান কামালউদ্দিন। ৎতাঁর কথায়, ‘‘ছেলের সঙ্গে কেমন ব্যবহার করা হচ্ছে, তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছি। শুক্রবার ওর সঙ্গে দেখা করেছি। ছেলের গায়ে হাত না-দিতে অনুরোধ করেছি আধিকারিকদের।’’ মানবাধিকার সংগঠন এপিডিআর-এর তরফে রঞ্জিত শূরের অভিযোগ, পুলিশ আইন না-মেনে রাতবিরেতে তল্লাশি চালাচ্ছে। ভয়ের পরিবেশ তৈরি করছে। এই নিয়ে তাঁরা মানবাধিকার কমিশনের দ্বারস্থ হবেন বলে জানান। তবে পুলিশের দাবি, যা করা হয়েছে,
আইন মেনেই হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy