Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
Rapid Antigen test

আধ ঘণ্টার মধ্যেই ১৩ করোনা রোগী শনাক্ত, প্রতি দিনই হবে অ্যান্টিজেন টেস্ট

করোনা রোগী শনাক্তকরণে এ ভাবেই কলকাতার ১৬টি বরোয় প্রতি দিন অ্যান্টিজেন টেস্ট হবে।

অ্যান্টিজেন টেস্টের সূচনায় উপস্থিত কলকাতা পুরসভার প্রশাসক ফিরহাদ হাকিম। —নিজস্ব চিত্র।

অ্যান্টিজেন টেস্টের সূচনায় উপস্থিত কলকাতা পুরসভার প্রশাসক ফিরহাদ হাকিম। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ৩০ জুলাই ২০২০ ১৫:৪৮
Share: Save:

লক্ষ্য, কম সময়ে করোনা রোগীদের চিহ্নিত করা। সে কথা মাথায় রেখে বৃহস্পতিবার থেকে কলকাতায় শুরু হল অ্যান্টিজেন টেস্ট। প্রথম দিনে শহরে ৮৩ জনের জনের নমুনা পরীক্ষার পর মাত্র আধ ঘণ্টার মধ্যে জানা গেল, ১৩ জন করোনা পজিটিভ।

করোনা রোগী শনাক্তকরণে এ ভাবেই কলকাতার ১৬টি বরোয় প্রতি দিন অ্যান্টিজেন টেস্ট হবে। দৈনিক আটশো থেকে এক হাজার জনের টেস্টের পরিকল্পনা রয়েছে পুরসভার। এ দিন চেতলায় ৫০ এবং উত্তর কলকাতায় ৩৩ জনের টেস্ট হয়। পরীক্ষার পর যাঁরা করোনা পজিটিভ হলেন, তাঁদের বিষয়ে সম্পূর্ণ তথ্য স্বাস্থ্যভবনে পাঠানো হয়েছে।

করোনা রোগীদের শনাক্তকরণে আরটিপিসিআর টেস্ট সময় সাপেক্ষ। দুই থেকে তিন দিন লেগে যাচ্ছে পরীক্ষার রিপোর্ট পেতে। অ্যান্টিজেন টেস্টের মাধ্যমে এক সঙ্গে ১০ জনের টেস্ট করা সম্ভব মাত্র আধ ঘণ্টার মধ্যেই। করোনার উপসর্গ না থাকলেও অনেকেই আক্রান্ত হচ্ছেন। তাঁদের চিহ্নিত করার ক্ষেত্রেও অ্যান্টিজেন টেস্ট গুরুত্বপূর্ণ। তবে এতে ফলস নেগেটিভ রিপোর্ট আসার সম্ভাবনা রয়েছে। সে ক্ষেত্রে আরটিপিসিআর-এ মাধ্যমে কোভিড-১৯ পরীক্ষা সব থেকে কার্যকর বলেই মনে করেন চিকিৎসকেরা।

আরও পড়ুন: কংগ্রেস রাজনীতিতে এক অধ্যায়ের অবসান, প্রয়াত সোমেন মিত্র

আরও পড়ুন: সোমেনের মৃত্যুতে শোকবার্তা মমতা-অধীরের, কঠিন সময়ে পাশে পেয়েছি বললেন রাহুল​

চেতলায় অহীন্দ্র মঞ্চে অ্যান্টিজেন টেস্টের সূচনায় উপস্থিত ছিলেন কলকাতা পুরসভার প্রশাসক ফিরহাদ হাকিম। করোনা রোগীকে শনাক্ত করতে আরটিপিসিআর পদ্ধতির বিকল্প নেই। তবে কোনও এলাকায় করোনার প্রভাব কতটা, তার একটি সামগ্রিক ধারণা পেতে র‍্যাপিড অ্যান্টিবডি এবং অ্যান্টিজেন টেস্ট করার পক্ষে চিকিৎসকেরা। বিভিন্ন দেশে আরটিপিসিআর-এর পাশাপাশি অ্যান্টিজেন এবং অ্যান্টিবডি টেস্ট করা হচ্ছে।

কিট-এর মাধ্যমে এ বার কলকাতা-সহ রাজ্যের বিভিন্ন এলাকায় অ্যান্টিজেন টেস্ট করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। অ্যান্টিজেন টেস্টেও গলা এবং নাক থেকে নমুনা সংগ্রহ করা হয়ে থাকে।

ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন (আইএমএ)-এর রাজ্য সম্পাদক শান্তনু সেন বলেন, “কোভিডের শুরুতে র‌্যাপিড অ্যান্টিবডি টেস্ট করতে পারলে ভাল হত। কিন্তু আইসিএমআর ত্রুটিযুক্ত কিট পাঠানোর জন্য তা করা যায়নি। পরে আর কিটও পাঠায়নি। এখন রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের উদ্যোগেই র‌্যাপিড অ্যান্টিজেন টেস্ট শুরু হয়েছে। এতে কম খরচে, কম সময়ে বেশি করোনা রোগী শনাক্ত হবে। এটা খুব ভাল উদ্যোগ।” তিনি আরও বলেন, ‘‘যাঁরা পজিটিভ হবেন, তাঁদের আর নতুন করে পরীক্ষা করতে হবে না। কিন্তু যাঁরা নেগেটিভ হবেন, তাঁদের আবার টেস্ট করাতে হবে নিশ্চিত হওয়ার জন্য।’’

বৃহস্পতিবার সকালে চেতলায় স্থানীয় বাসিন্দাদের অ্যান্টিজেন টেস্ট করা হল। —নিজস্ব চিত্র।

মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর (জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ) শঙ্কারনাথ ঝা বলেন, “অ্যান্টিজেন টেস্টের মাধ্যমে কেউ করোনা আক্রান্ত কি না, তা দ্রুত শনাক্ত করা সম্ভব। আরটিপিসিআর টেস্টের মাধ্যমে করতে গেলে তার থেকে বেশি সময় লাগবে। তবে অ্যান্টিজেন টেস্টে ফলস নেগেটিভ আসতে পারে। ফলে আরও নিশ্চিত হতে আরটিপিসিআর টেস্টের বিকল্প কম।”

রাজ্যে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৬৫ হাজার ছাড়িয়েছে। মৃত্যু হয়েছে ১ হাজার ৪৯০ জনের। কলকাতার পরিস্থিতি উদ্বেগজনক। মোট আক্রান্ত ২০ হাজার ছাড়িছে। মৃত্যু হয়েছে ৭২৩ জনের। এক দিকে যেমন সপ্তাহে দু’দিন লকডাউন করে করোনা সংক্রমণের রাশ টানতে চাইছে রাজ্য। তেমনি আরটিপিসিআর, অ্যান্টিজেন টেস্টের মাধ্যমে দ্রুত করোনা রোগীদের শনাক্ত করে চিকিৎসা এবং প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করতেও উদ্যোগী সরকার।

(জরুরি ঘোষণা: কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীদের জন্য কয়েকটি বিশেষ হেল্পলাইন চালু করেছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। এই হেল্পলাইন নম্বরগুলিতে ফোন করলে অ্যাম্বুল্যান্স বা টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত পরিষেবা নিয়ে সহায়তা মিলবে। পাশাপাশি থাকছে একটি সার্বিক হেল্পলাইন নম্বরও।

• সার্বিক হেল্পলাইন নম্বর: ১৮০০ ৩১৩ ৪৪৪ ২২২
• টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-২৩৫৭৬০০১
• কোভিড-১৯ আক্রান্তদের অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবা সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-৪০৯০২৯২৯)

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE