রাস্তা হোক বা সেতু, পাথরের গুণগত মানের উপরেই নির্ভর করে যে-কোনও নির্মাণকাজের স্থায়িত্ব। তাই পাথরের গুণগত মান নিয়ে আর কোনও রকম ছেলেখেলা চলবে না! রাস্তা, সেতু-সহ বিভিন্ন ধরনের নির্মাণকাজে এ বার নির্দিষ্ট গুণমানের পাথর ব্যবহারের বিধি আরোপ করল পূর্ত দফতর। মঙ্গলবার এই বিষয়ে নির্দেশ দিয়েছেন পূর্তসচিব অর্ণব রায়।
মূলত উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন নির্মাণে নিম্ন মানের সামগ্রী ব্যবহারের প্রসঙ্গ টেনে এই নির্দেশ দিয়েছেন পূর্তসচিব। দীর্ঘদিন ধরেই রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে বেশ কিছু নির্মাণকাজে নিম্ন মানের সামগ্রী ব্যবহার নিয়ে অভিযোগ উঠছে। পূর্ত দফতরের মঙ্গলবারের নির্দেশিকা সেই সব অভিযোগেই অনেকাংশে সিলমোহর দিল বলে সংশ্লিষ্ট মহলের অভিমত।
পূর্ত দফতরের নির্দেশিকায় সচিব উল্লেখ করেছেন, উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন নির্মাণকাজে স্থানীয় নদীগর্ভ থেকে তুলে আনা সামগ্রী ব্যবহার করা হচ্ছে। যা সাদা রঙের এবং গঠনগত ভাবে দুর্বল। কারও কারও মতে, নদীগর্ভ থেকে দেদার সাদা রঙের নুড়িপাথর তুলে নির্মাণকাজে ব্যবহার করা হচ্ছে। সেই সব নুড়িপাথর অত্যন্ত নিম্ন মানের বলে সংশ্লিষ্ট আধিকারিকদের অভিমত। এই ধরনের সামগ্রী নির্মাণ ক্ষেত্রে গ্রহণযোগ্য নয় বলেও নির্দেশিকায় উল্লেখ করেছেন পূর্তসচিব। সেই জন্যই ওই ধরনের সামগ্রী ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছেন তিনি।
পূর্তসচিবের নির্দেশ, সব বিভাগীয় রাস্তা, সেতু এবং অন্যান্য নির্মাণকাজে সরকার অনুমোদিত পাকুড় ও পাঁচামির পাথর বা সমতুল্য সামগ্রী ব্যবহার করতে হবে। পাকুড়ের পাথর বেশ মজবুত বলে বিশেষজ্ঞদের অভিমত। তাতে লোহা অনেক কম থাকে। পাকুড়ের পাথর দেখতেও ভাল হয় বলে জানান নির্মাণ ক্ষেত্রের সঙ্গে যুক্ত সংশ্লিষ্ট ইঞ্জিনিয়ারেরা। এক ইঞ্জিনিয়ার বলেন, ‘‘পাকুড়ের পাথর অনেক বেশি পরিষ্কার হয়।’’ তবে বর্ষায় পাকুড়ের সামগ্রীতে কাদা লেগে থাকে। তা ধুয়ে পরীক্ষার পরে নির্মাণে ব্যবহার করা হয়। অন্য এক ইঞ্জিনিয়ার বলেন, ‘‘আমরা সব সামগ্রীই পরীক্ষা করি। পরীক্ষার পরে তা ব্যবহারের ছাড়পত্র মেলে। খারাপ হলে সেই সামগ্রী বাতিল করা হয়।’’
এক সময় রামপুরহাট, নলহাটি থেকে পাথর আসত। সেই পাথরের থেকে পাকুড়ের নুড়ি অনেক বেশি মজবুত বলে জানাচ্ছেন সংশ্লিষ্ট আধিকারিকেরা। পূর্তসচিবের নতুন নির্দেশের প্রতিলিপি ওই দফতরের পদস্থ কর্তাদের কাছে পাঠিয়ে তা দ্রুত রূপায়ণ করতে বলা হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy