কেন আত্মহত্যা করলেন অরিন্দম, তা নিয়ে সমস্ত সম্ভাবনা খতিয়ে দেখছে পুলিশ। দীর্ধ দিন ধরে পরিবারের সঙ্গে কোনও যোগাযোগ ছিল না অরিন্দমের। ফলে আত্মহত্যার পিছনে কোনওরকম অবসাদ কাজ করেছে কিনা সেই তদন্তও করছে পুলিশ। পাশাপাশি আত্মহত্যার ঘটনা ফেসবুকে লাইভ দেওয়ার পিছনে সুইসাইড নোট রেখে যাওয়ার মানসিকতা কাজ করতে পারে বলে জানাচ্ছেন মনোবিদেরা।
তাঁরা জানাচ্ছেন, দীর্ঘ দিন ধরে বিভিন্ন সম্পর্কের টানাপড়েনে ক্লান্ত হয়ে কেউ কী পথ বেছে নিচ্ছেন, তা আত্মীয়, বন্ধুদের জানিয়ে দেওয়ার সহজ মাধ্যম হিসেবে ফেসবুক লাইভ করে দেন। রবিবার শিলিগুড়ির পূর্ব বিবেকানন্দপল্লির ভাড়া বাড়ি থেকে অরিন্দম দত্ত নামের এক যুবকের দেহ উদ্ধার হয়। শনিবার রাত ১০টা নাগাদ তিনি ফেসবুক লাইভে আত্মহত্যার আগের মূহুর্তের ছবি রেখে গিয়েছেন।
উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মানসিক রোগের চিকিৎসা বিভাগের প্রধান নির্মল বেরা’র কথায়, ‘‘এ ধরনের ঘটনার পিছনে কোনও হতাশা, ক্ষোভ, না পাওয়ার যন্ত্রণা কাজ করতে পারে। অনেক ক্ষেত্রে তাঁরা মানসিক অবসাদের শিকার হয়ে এ সব করেন। সেটা কাউকে হয়তো বিশষে ভাবে জানাতে চাইছিল ওই যুবক। তবে সঠিক কী তা তদন্ত সাপেক্ষ।’’
অরিন্দমের আত্মীয় ও পরিচিতেরা জানিয়েছেন, বছর দশেক ধরেই তিনি পরিবার থেকে প্রায় বিচ্ছিন্ন। বাড়ি, দোকান বিক্রি হয়ে গিয়েছিল। অভিভাবকহীন ছিলেন। অনেক সময়ই পরিচয়, ঠিকানা নিয়ে মিথ্যার আশ্রয় নিয়েছেন। রোগের কারণে আরও ভেঙে পড়েন বলে জানাচ্ছেন আত্মীরাও। দু’দিন আগেই আর কারও সঙ্গে সম্পর্ক রাখবেন না বলে জানিয়ে দিয়েছিলেন।
মনোবিদ অদিতি মজুমদার সুইসাইড করার আগে ফেসবুকে তা ছড়ানোর ঘটনার পিছনে নানা সম্ভাবনা দেখছেন। তিনি জানান, ফেসবুকের মতো সোস্যাল সাইটের প্রতি আকষর্ণ অনেকেরই রয়েছে। তাঁর মতে, এ ধরনের ঘটনার অভিজ্ঞতা ওই যুবক অন্য কোথাও থেকে সঞ্চয় করেছে। প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য নিজের মৃত্যুর ভিডিও প্রিয়জনের কাছে পৌঁছে দিতে চেয়েছেন কি না সেটা একটা দিক হতে পারে বলে তিনি জানান।
অদিতি বলেন, ‘‘এখন তো সব কিছুই মানুষ ফেসবুকে দিয়ে দেখাতে চায়। একটা নেশার মতো। নিজের জন্মদিন, কী খাচ্ছেন, কোথাও ঘুরতে গিয়েছেন সবই ফেসবুকে পোস্ট হচ্ছে। সেই অভ্যেসেরই আরও একটি দিক এরকম লাইভ দেওয়া।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy