Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪

পণ্যবাহী ট্রাকের ধাক্কা, মৃত ছ’জন

পুলিশ জানায়, ঘটনাস্থলেই মারা যান ৫ জন। হাসপাতালের পথে আরও এক জনের মৃত্যু হয়। তাঁদের নাম নূর মহম্মদ মোল্লা (৪৫), শান্তি শেখ (৩০), আনামত শেখ (২৫), সামসুদ শেখ (৪২), শামানি মোল্লা (৫০) এবং নুরুল মণ্ডল (৪৫)।

দুর্ঘটনায় দুমড়ে-মুচড়ে যাওয়া গাড়ি। নিজস্ব চিত্র

দুর্ঘটনায় দুমড়ে-মুচড়ে যাওয়া গাড়ি। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
দুবরাজপুর শেষ আপডেট: ২৬ জানুয়ারি ২০১৯ ০৪:০৫
Share: Save:

মিনি ট্রাকের সঙ্গে পণ্যবোঝাই ট্রাকের মুখোমুখি সংঘর্ষে মৃত্যু হল ৬ জনে। আহত আরও ৬। আহতদের মধ্যে মিনিট্রাকের চালক সহ দু’জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। শুক্রবার সকাল সওয়া ৬টা নাগাদ দুর্ঘটনাটি ঘটে দুবরাজপুর থানা এলাকার, আউলিয়া–গোপালপুর মোড়ে পানাগড়–দুবরাজপুর ১৪ নম্বর রাজ্য সড়কে।

পুলিশ জানায়, ঘটনাস্থলেই মারা যান ৫ জন। হাসপাতালের পথে আরও এক জনের মৃত্যু হয়। তাঁদের নাম নূর মহম্মদ মোল্লা (৪৫), শান্তি শেখ (৩০), আনামত শেখ (২৫), সামসুদ শেখ (৪২), শামানি মোল্লা (৫০) এবং নুরুল মণ্ডল (৪৫)। সকলেরই বাড়ি পূর্ব বর্ধমানের আউশগ্রাম ২ ব্লকের অমরপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের বেলেমাঠে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বীরভূমের বিভিন্ন প্রান্তে ধান কেনার উদ্দেশ্যে এ দিন ভোর সাড়ে তিনটে নাগাদ আউশগ্রাম ২ ব্লকের অমরপুর পঞ্চায়েত এলাকা তাঁরা রওনা দেন। মিনিট্রাকে ছিলেন শেখ শাহদত নামে এক ধান ব্যবসায়ী, চালক জনি মোল্লা ও ১০ জন শ্রমিক।

যান্ত্রিক ত্রুটি, অসর্কতা না কি ভোরে ঘুমে চোখ জড়িয়ে গিয়েছিল চালকের— দুর্ঘটনার সেই কারণ স্পষ্ট নয়। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, গোপালপুর গ্রামে ঢোকার মুখেই ওই গাড়ি এক মুহূর্তের জন্য নিয়ন্ত্রণ হারিয়েছিল। সেই সময়ই উল্টোদিক থেকে আসা ট্রাকের সঙ্গে সেটির মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষের অভিঘাত এতই তীব্র ছিল যে মিনিট্রাক কার্যত গুঁড়িয়ে যায়। ক্ষতিগ্রস্ত হয় পণ্যবোঝাই ট্রাকটিও।

উদ্ধারকাজে হাত লাগান পুলিশকর্মী ও স্থানীয় বাসিন্দারা। আহতদের সিউড়ি জেলা হাসপাতালে পাঠানো হয়। সিউড়ি হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, আঘাত মারাত্মক হওয়ায় শাহদত শেখ, জনি মোল্লা সহ ৪ জনকে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজে পাঠানো হয়েছে।

দুর্ঘটনায় জখম শ্রমিক নিয়ামত শেখ বলেন, ‘‘ধান কেনার জন্যে গ্রাম থেকে বেরিয়েছিলাম। কী করে দু’টো গাড়ি মুখোমুখি হয়ে গেল বুঝতেই পারলাম না। রাস্তায় ছিটকে পড়লাম। কিছুক্ষণ বেহুঁশ ছিলাম। জ্ঞান ফিরলে দেখি, শরীরে যন্ত্রণা হচ্ছে। রক্তে ভেসে যাচ্ছিল অন্যদের শরীর। আর ভাবতে পারছি না।’’

গ্রামে সেই দুঃসংবাদ পৌঁছতেই সিউড়ি হাসপাতালে পৌঁছন হতাহতদের পরিজন ও গ্রামের মানুষ। কান্নায় ভেঙে পড়েন মৃতের আত্মীয় পরিজনেরা। তাঁদেরই এক জন প্রৌঢ় সবুর শেখ। তিনি বলেন, ‘‘কয়েক ঘন্টা আগে ভোরে সুস্থ-সবল ছেলেগুলো বেরিয়ে এল। ভাবতেই পারছি না ওরা বেঁচে নেই।’’

আউশগ্রামের অমরপুর এলাকার অশোক সাহা, শেখ ইবাদত, গোলাম মোল্লা বলেন— ‘‘দুর্ঘটনার এই এলাকা থেকে ওই গাড়ির পিছনে যাওয়া একটি গাড়ির লোকেরা দুর্ঘটনার খবর দেন। ওরা বলেছিল, যে ভাবে দু’টি গাড়ি মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়েছে তাঁতে কেউ সম্ভবত বেঁচে নেই। এ কথা শুনে এসে শুনলাম ৬ জন কোনও ভাবে প্রাণে বেঁচেছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Death Accident truck
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE