সোমেন মিত্র
লোকসভা ভোটে জোটের আলোচনায় যাওয়ার আগে রাহুল গাঁধীর নির্দেশ, বাংলায় সংগঠনকে নিজের পায়ে দাঁড়ানোর দিকেই সবার্ধিক নজর দিতে হবে। রাজ্য নেতাদের চলতে হবে ঐক্যবদ্ধ ভাবে। ‘পার্টি লাইন’ বেঁধে সেই সুরেই কথা বলতে হবে সকলকে। এই লক্ষ্য মাথায় রেখে পুজোর আগেই কলকাতায় দলের নেতাদের জরুরি বৈঠকে ডাকছেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সোমেন মিত্র।
প্রথমে সর্বভারতীয় কংগ্রেসের সহ-সভাপতি এবং তার পরে পূর্ণাঙ্গ সভাপতি হওয়ার পর থেকে রাহুল বাংলায় দলের নেতাদের অন্তর্দ্বন্দ্বের বিস্তর নালিশ শুনেছেন। এখন কড়া হাতে রাশ ধরে সব রাজ্যেই দলকে এক সুতোয় গাঁথতে চাইছেন তিনি। দিল্লির তুঘলক লেনের বাড়িতে রাহুল প্রদেশ কংগ্রেসের নতুন নেতৃত্বের সঙ্গে আলোচনায় তাঁর ওই মনোভাব পরিষ্কার করে দেওয়ার পরে শনিবার রাতেই ঘর গুছোনোর জন্য বাংলায় বৈঠক ডাকার সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছেন সোমেনবাবু। ঠিক হয়েছে, আগামী ৯ অক্টোবর বিধান ভবনে সাংগঠনিক ভাবে আশু কর্তব্য ঠিক করতে ওই বৈঠক হবে। এআইসিসি-র তরফে বাংলার দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা গৌরব গগৈয়ের সঙ্গে দিল্লিতে দু’বার বৈঠক হয়েছে সোমেনবাবুর। গৌরব এবং বাংলায় তাঁর সহকারী তিন এআইসিসি সম্পাদককেও রাজ্য কংগ্রেসের ঘর গুছোনোর বৈঠকের কথা জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।
বাংলায় দলের মধ্যে অবিশ্বাসের বাতাবরণ যে একেবারেই কাঙ্খিত নয়, এ বার প্রদেশ নেতাদের তা স্পষ্টই বুঝিয়ে দিয়েছেন রাহুল। বাংলা থেকে নেতারা এআইসিসি-র কাছে দরবার করতে আসার প্রেক্ষিতে তাঁদের বলা হয়েছিল, কলকাতায় ফিরে তৎকালীন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীর সঙ্গে আলোচনায় বসতে। শনিবারের বৈঠকে অধীরবাবুর কাছে রাহুল জানতে চান, কেউ কি তাঁর সঙ্গে কথা বলেছিলেন? অধীরবাবু জানান, কেউ তাঁর কাছে আসেননি। মন্তব্য করতে যাচ্ছিলেন এক নেতা। তাঁকে থামিয়ে দেন সোমেনবাবুই। আবার মাথা নুইয়ে জোট হবে না এবং পার্টি লাইন চাই— রাহুলের এই কথা শুনেই ইদানীং কালের ‘তৃণমূলপন্থী’ আবু হাসেম (ডালু) খান চৌধুরী বলতে শুরু করেন, লোকসভায় জেতা বা হারা নিয়ে তাঁরা বিচলিত নন!
সোমেনবাবুর বক্তব্য, ‘‘পুজোর পরে এক দিন বাংলায় এসে রাজ্যের সর্বস্তরের পদাধিকারীদের সঙ্গে আলোচনা এবং কর্মী সম্মেলন করার অনুরোধ জানানো হয়েছে রাহুলজি’কে। কংগ্রেসকে সাংগঠনিক ভাবে শক্তিশালী করাই তাঁর অন্যতম প্রধান লক্ষ্য। আমরাও তাঁকে বলেছি, নবনিযুক্ত প্রদেশ কংগ্রেস কমিটি এই লক্ষ্যে ঐক্যবদ্ধ ভাবে কাজ করবে।’’
এআইসিসি-র পরামর্শে আপাতত ঠিক হয়েছে, লোকসভা ভোটের আগে রাজ্যে সক্রিয়তা বাড়াতেই হবে কংগ্রেসকে। দলীয় সূত্রের খবর, রাহুল বলেছেন, বাংলার ৪২টা লোকসভা আসনের একটাও কংগ্রেস না পেতে পারে! কিন্তু আত্মমর্যাদা বিসর্জন দিয়ে জোট হবে না, সংগঠনের আগে কোনও কিছুর অগ্রাধিকারও থাকবে না। এ সবের জেরেই আপাতত কলকাতা এবং আশেপাশের এলাকায় কর্মসূচি নিয়ে দৃশ্যমানতা বাড়াতে চায় বাংলার কংগ্রেস।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy