শোভন, বৈশাখী, অমিত শাহ। ফাইল চিত্র।
অবশেষে বরফ গলতে চলেছে। দলে যোগদানের প্রায় ১৪ মাস পরে বিজেপি-তে ‘সক্রিয়’ হওয়ার পথে শোভন চট্টোপাধ্যায়-বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়। সৌজন্যে: দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী তথা বিজেপি-র সর্বোচ্চ নেতা অমিত শাহের বঙ্গসফর।
বৃহস্পতিবার রাতেই কলকাতায় অমিতের সঙ্গে বৈঠকে বসছেন শোভন-বৈশাখী। এর আগে যে ভাবে নরেন্দ্র মোদী, অমিত, জেপি নড্ডাদের একাধিক কর্মসূচি এড়িয়ে গিয়েছিলেন কলকাতার প্রাক্তন মেয়র, তাতে এই নৈশবৈঠক ‘বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ’ বলে মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকেরা।
দু’দিনের সফরে বুধবার পশ্চিমবঙ্গে এসেছেন অমিত। তাঁর সফরের প্রথম দিন কেটেছে বাঁকুড়ায়। শুক্রবারের কর্মসূচি কলকাতায়। বাঁকুড়ার কর্মসূচি সেরে এ দিন সন্ধ্যায় কলকাতায় চলে এসেছেন তিনি। রাতে নিউটাউনের একটি হোটেলে থাকবেন। সেই হোটেলেই রাতে শোভন-বৈশাখীর ডাক পড়েছে।
গত জানুয়ারিতে মোদী বেশ কিছু কর্মসূচি নিয়ে বাংলায় এসেছিলেন। মোদীর সেই সফর হোক বা শহিদ মিনারে শাহের জনসভা অথবা নড্ডার নানা কর্মসূচি— প্রতিটিতেই শোভন-বৈশাখীকে ডাকা হয়েছে বিজেপি-র তরফে। কিন্তু কখনও ‘শারীরিক অসুস্থতা’র কারণে, কখনও ‘ব্যক্তিগত প্রয়োজনে’ রাজ্যের বাইরে থাকায় সে সব কর্মসূচিতে দেখা যায়নি শোভন-বৈশাখীকে।
বস্তুত, কয়েক সপ্তাহ আগে সল্টলেকে পূর্বাঞ্চলীয় সংস্কৃতি কেন্দ্রে (ইজেডসিসি) দুর্গাপুজোর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানেও তাঁদের দেখা যায়নি। মোদী দিল্লি থেকে ভার্চুয়ালি পুজোর উদ্বোধন করেন। রাজ্য বিজেপি-র গোটা নেতৃত্ব সেখানে ছিলেন। ছিলেন কেন্দ্রীয় নেতৃত্বও। ওই অনুষ্ঠানে শোভন-বৈশাখীকে আনার জন্য পঞ্চমীর রাত পর্যন্ত চেষ্টা হয়েছিল বিজেপি-র তরফে। অতিথি তালিকাতেও তাঁদের নাম রাখা হয়েছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সেখানেও তাঁদের দেখা যায়নি। অমিতের এই সফরে ছবি বদলে গেল। বিজেপি নেতৃত্বের উদ্যোগ এ বার আর অবহেলা করলেন না রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী তথা বেহালা পূর্বের বিধায়ক।
অমিতের সঙ্গে দেখা করতে যাওয়ার কথা বৈশাখী স্বীকার করেছেন। আনন্দবাজার ডিজিটালকে তিনি বলেছেন, ‘‘অমিত শাহ শহরে এসেছেন। এর আগে ওঁর সঙ্গে ব্যক্তিগত ভাবে দেখা করা হয়ে ওঠেনি। এ বার অমিত শাহজি, বিএল সন্তোষজির সঙ্গে গিয়ে দেখা করে আসব।’’
বিজেপি সূত্রে জানা গিয়েছে, শোভন-বৈশাখীকে অমিতের সঙ্গে বৈঠকে বসাতে বিশেষ ভাবে উদ্যোগী হয়েছিলেন দলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক তথা পশ্চিমবঙ্গের পর্যবেক্ষক কৈলাস বিজয়বর্গীয় এবং কেন্দ্রীয় সম্পাদক তথা এ রাজ্যের সহকারী পর্যবেক্ষক অরবিন্দ মেনন। শোভন-বৈশাখীকে ‘সক্রিয়’ করে তুলতে তাঁরা অনেক দিন ধরেই তৎপর। এ দিন রাতে তাঁদের শাহ সমীপে হাজির করার নেপথ্যেও কৈলাস এবং মেননের ভূমিকাই সবচেয়ে বেশি বলে জানা গিয়েছে।
আরও পড়ুন: উখাড় কর ফেক দিজিয়ে: অমিত ।। ভদ্রতার সীমা রাখুন: মমতা
আরও পড়ুন: প্রভুর ভোজনের পরেও পাল্টায়নি হাওড়ার জগদীশের জীবনযাত্রা
ভূমিকা অবশ্য রাজ্য বিজেপি-র নতুন সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) অমিতাভ চক্রবর্তীরও রয়েছে। অমিতাভের পূর্বসূরি সুব্রত চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে শোভন-বৈশাখীর সম্পর্ক ‘মধুর’ বলেই জানতেন দলের অন্দরের লোকজন। সম্প্রতি সুব্রতর অপসারণে সেই সমীকরণও বদলায়। বদলাতে উদ্যোগী হন অমিতাভই। শোভন-বৈশাখীর কাছে সদর্থক বার্তা পৌঁছয়। ফলে ‘সক্রিয়’ হওয়ার পথ শোভনদের জন্য সহজ হয়ে ওঠে বলেই রাজ্য বিজেপি-র একাংশের মত। বৃহস্পতিবার রাতে শাহের সঙ্গে সাক্ষাতের পরে শোভনদের ময়দানে নেমে পড়াটা সময়ের অপেক্ষা বলেই তাঁরা আশাবাদী।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy