শোভন-বৈশাখী আর সব্যসাচী বিজেপিতে যোগ দিতে পারেন, গত কয়েক মাসে সেই সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে বিভিন্ন সময়ে।— ফাইল চিত্র।
রাজনৈতিক মহলের জল্পনা উসকে দিয়ে এবার এক মঞ্চে বক্তব্য রাখতে উঠছেন কলকাতার প্রাক্তন মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়, তাঁর বান্ধবী বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায় এবং বিধাননগর পুরসভার মেয়র সব্যসাচী দত্ত। অরাজনৈতিক অনুষ্ঠান হলেও, লোকসভা নির্বাচনের ঠিক আগেই এই তিন জনের একসঙ্গে একটি অনুষ্ঠানে যাওয়া নিয়ে উঠছে প্রশ্ন। কারণ, এই তিন জনই বিজেপিতে যোগ দিতে পারেন, এই জল্পনা উঠেছে বিভিন্ন সময়ে।
যে অনুষ্ঠানে এই তিন জনের যাওয়া নিয়ে জল্পনা তৈরি হচ্ছে, সেই অনুষ্ঠানটি আগামী ৭ এপ্রিল। ‘বেঙ্গল থিংকস’ নামের একটি সংস্থার উদ্যোগে এই আলোচনা সভার বিষয়, ‘দ্য ইন্টারফেস অব রিলিজিয়ন, স্পিরিচুয়ালিটি অ্যান্ড পলিটিকস ইন টুডেজ বেঙ্গল’, অর্থাৎ ‘আজকের বাংলায় ধর্ম, আধ্যাত্মিকতা এবং রাজনীতির অন্তর্নিহিত সম্পর্ক’। এই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন কলকাতার প্রাক্তন মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়, সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন বিধাননগর পুরসভার মেয়র সব্যসাচী দত্ত। একই অনুষ্ঠানে বক্তা হিসেবে থাকবেন বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়। এ ছাড়া বক্তব্য রাখবেন ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘের দিব্যানন্দ মহারাজও।
অনুষ্ঠানটি সম্পূর্ণ অরাজনৈতিক, তবুও তৈরি হচ্ছে রাজনৈতিক জল্পনা। কারণ, শোভন-বৈশাখী আর সব্যসাচী বিজেপিতে যোগ দিতে পারেন, গত কয়েক মাসে সেই সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে বিভিন্ন সময়ে। এর মধ্যে শোভন- বৈশাখীকে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন জায়গায় এক সঙ্গে দেখতে পাওয়া গেলেও সব্যসাচীর উপস্থিতি নিয়েই উঠছে প্রশ্ন। কারণ, সাম্প্রতিককালে তাঁর বিজেপিতে যোগ দেওয়া নিয়েই সব থেকে বেশি জল্পনা তৈরি হয়েছে। কখনও মুকুল রায়ের সঙ্গে নিজের বাড়িতে লুচি-আলুর দম পর্ব, কখনও মারোয়াড়ি সমাজের অনুষ্ঠানে ‘ভারত মাতা কি জয়’ বলা, কখনও দলীয় অনুষ্ঠানে না যাওয়া, কখনও দলে নাও থাকতে পারেন— এই ধরনের ইঙ্গিত দিয়ে বিভিন্ন সময় জল্পনা উস্কে দিয়েছেন সব্যসাচী নিজেই। আবার বিধাননগরে তাঁর নিজের ওয়ার্ডে তৃণমূলের অনুষ্ঠানে তাঁকে না ডেকে পাল্টা বার্তা দিতেও পিছিয়ে থাকেনি উত্তর ২৪ পরগণা জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব।
আরও পড়ুন: সল্টলেকে তৃণমূলের হোলি সম্মিলনীতে আমন্ত্রিত সব নেতা, ব্রাত্য শুধু সব্যসাচী
আমন্ত্রণ পত্র।
এই পরিস্থিতিতে শোভন-বৈশাখীর সঙ্গে একই মঞ্চে সব্যসাচীও উপস্থিত থাকছেন, এটাই বেশি ভাবাচ্ছে রাজনৈতিক মহলকে। সেই প্রসঙ্গে এই অনুষ্ঠানের অন্যতম বক্তা বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায় জানাচ্ছেন, ‘‘আজকাল তো মানুষ ভাবে কম, বলে বেশি। আসলে বেশি ভাবা উচিত, কম বলা উচিত। আমি সেটাই বলতে যাচ্ছি।’ একই অনুষ্ঠানে তাঁর, শোভন চট্টোপাধ্যায় এবং সব্যসাচী দত্তের উপস্থিতি নিয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘‘আমি রাষ্ট্রবিজ্ঞানের বিশেষজ্ঞ হিসেবে এই অনুষ্ঠানে বলতে যাচ্ছি। দিব্যানন্দ মহারাজ তাঁর দৃষ্টিভঙ্গি থেকে বক্তব্য রাখবেন। আর শোভন চট্টোপাধ্যায় কলকাতার প্রাক্তন মহানাগরিক। এই অনুষ্ঠানে তাঁর ডাক পাওয়া আশ্চর্যের কিছু নয়। আর সব্যসাচী দত্তও এখন খুবই চর্চিত নাম। যুবসমাজের মধ্যে তাঁকে নিয়ে আগ্রহ আছে। তাঁর উপস্থিতিতেও আমি আপত্তির কিছু দেখছি না।’’
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে এই অনুষ্ঠানের আমন্ত্রিতদের তালিকায় অন্য কোনও তৃণমূল নেতার নাম নেই। তাহলে কি অরাজনৈতিক অনুষ্ঠানের মধ্যে দিয়েই শোভন-বৈশাখীর সঙ্গে রাজনৈতিক সংযোগ তৈরি হচ্ছে সব্যসাচীর? স্বাভাবিক ভাবেই উঠছে সেই প্রশ্ন।
(মালদহ, দুই দিনাজপুর, কোচবিহার, আলিপুরদুয়ার, দার্জিলিং, জলপাইগুড়ি, কালিম্পং সহ উত্তরবঙ্গের খবর, পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন জেলা খবর পড়ুন আমাদের রাজ্য বিভাগে।)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy