ফাইল চিত্র
লোকসভা ভোটের পর রাজ্য এবং কেন্দ্রীয় সরকারের জমিতে গড়ে ওঠা ১১৯টি কলোনির সমস্ত জমির ‘কার্যত’ রায়তি অধিকার সেখানকার বাসিন্দাদের হাতে তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ভূমি দফতর। গত ৩ সেপ্টেম্বর রাজ্য মন্ত্রিসভার ৭১তম বৈঠকে সেই নীতিতে চূড়ান্ত সিলমোহর পড়েছে। কিন্তু যে শর্তে কলোনির বাসিন্দাদের জমির অধিকার দেওয়া হচ্ছে, তা নিয়ে ফের বিতর্ক তৈরি হয়েছে বলে ভূমি দফতরের একাংশই জানাচ্ছে। যদিও আইনে হাত-পা বাঁধা থাকায় ভূমি দফতর অন্য কোনও উপায়ে জমির অধিকার দেওয়ার শর্ত বদলাতে অক্ষম বলে দফতরেরকর্তারা জানাচ্ছেন।
ভূমি দফতর ১১৯টি কলোনিতে বসে থাকা বাসিন্দাদের হাতে জমির ‘ফ্রি হোল্ড টাইটেল ডিড’ তুলে দিতে চায়। সেই চুক্তিপত্রের শর্তে বলা হয়েছে, পারিপার্শ্বিক নানা কারণে পূর্ব পাকিস্তান থেকে এক সময় বহু মানুষ রাজ্যে এসে থাকতে শুরু করেছিলেন। নিজেদের নিয়ন্ত্রণে ছিল না এমন পরিস্থিতি তৈরি হওয়ার কারণে পূর্ব পাকিস্তান থেকে আসা মানুষেরা শহর ও গ্রামীণ এলাকার রাজ্য বা কেন্দ্রীয় সরকারি জায়গায় আস্তানা তৈরি করেছিলেন। সরকার তাঁদের ‘উদ্বাস্তু’ হিসাবে মেনে নিয়েছে। এমন উদ্বাস্তুরা ১১৯টি কলোনিতে রয়েছে। মন্ত্রিসভা তাঁদেরই জমির অধিকার দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সরকারি চুক্তিপত্রে ‘বাংলাদেশ’ থেকে আসা মানুষের কোনও উল্লেখ নেই। ফলে ১৯৭১-এর যুদ্ধের পর যাঁরা এ দেশে চলে এসে সরকারি জমিতে বাড়ি-ঘর
বানিয়ে রয়েছেন, তাঁদের কী হবে তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
লোকসভা ভোটে মতুয়া, রাজবংশী এবং উদ্বাস্তু এলাকায় ধাক্কা খেয়েছিল তৃণমূল কংগ্রেস। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ভোটের আগে মতুয়া-নমশূদ্র-সহ বাংলাদেশিদের নাগরিকত্বের আশ্বাস দেওয়ায় সীমান্তঘেঁষা বেশ কয়েকটি আসনে জিতেছিল বিজেপি। লোকসভা ভোটের পরে রাজ্য সরকার কলোনির জমি আইনি কাগজ সেখানকার বাসিন্দাদের হাতে তুলে দিতে চেয়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছিল।
কিন্তু সম্প্রতি ফ্রি হোল্ড টাইটেল ডিডের যে চুক্তিপত্র সরকার প্রকাশ করেছে তাতে শুধুমাত্র ১৯৭১ এ বাংলাদেশ যুদ্ধের আগে (পূর্ব পাকিস্তান থেকে) যাঁরা এ রাজ্যে এসে সরকারি জমিতে বসেছিলেন, তাঁদের জমির কাগজপত্র পাকা করে দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। সেই সিদ্ধান্ত নবান্ন নিয়েছিল, ২০১৯-এর ২৩ ডিসেম্বর। ভূমি দফতরে বাংলাদেশ থেকে আসা অনেকেই জানতে চেয়েছেন, পূর্ব পাকিস্তান থেকে আসা মানুষদের রাজ্য জমির অধিকার দিচ্ছে, কিন্তু ১৯৭১ সালে যাঁরা এ রাজ্যে এসে কলোনি তৈরি করেছেন, তাঁদের কী হবে? কারণ, সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনে তাঁরা তো এখন দেশের নাগরিক। রাজ্য কি তাঁদের জমির অধিকার দেবে না?
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy