মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।ছবি: সংগৃহীত
এক দিকে পাহাড় থেকে কেন্দ্রীয় বাহিনী তুলে নেওয়া নিয়ে নিজেদের অসন্তোষ। অন্য দিকে, ত্রিপাক্ষিক নিয়ে আপত্তি। পাহাড় সমস্যা নিয়ে কেন্দ্রকে পরপর দু’টি চিঠি দিল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার।
পাহাড় সমস্যা মেটাতে এখন পর্যন্ত ত্রিপাক্ষিক বৈঠকে রাজি নয় রাজ্য। এর আগে কেন্দ্রের ডাকা বৈঠকে গরহাজির থেকে নিজেদের অবস্থান বুঝিয়ে দিয়েছিল তারা। সম্প্রতি বিমল গুরুঙ্গের চাপে ফের এই বৈঠক ডাকার তোড়জোড় করছে কেন্দ্র। দেড় মাস আগে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহ বিষয়টির বাস্তব অবস্থা খতিয়ে দেখতে মন্ত্রক কর্তাদের নির্দেশ দেন। সেই মতো বৈঠকের ক্ষেত্র তৈরির চেষ্টা করছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। নবান্ন সূত্রে খবর, শুক্রবার চিঠি দিয়ে রাজ্য বুঝিয়ে দিল, গুরুঙ্গকে নিয়ে কোনও বৈঠক চাইছে না তারা।
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রসচিবকে লেখা সেই চিঠিতে রাজ্যের মুখ্যসচিব মলয় দে স্পষ্ট জানিয়েছেন, দার্জিলিং নিয়ে ত্রিপাক্ষিক বৈঠকের তাঁরা বিরোধী। রাজ্যের বক্তব্য, জিটিএ-র মেয়াদ শেষ হয়ে গিয়েছে। তদারকি কর্তৃপক্ষ হিসেবে এখন কাজ করছে তারা। এই অবস্থায় দার্জিলিং থেকে তৃতীয় পক্ষ হিসেবে তাদের বৈঠকে আসার কোনও সাংবিধানিক এক্তিয়ার নেই।
আরও পড়ুন:দুর্যোগের খামখেয়ালে হাঁটা নিয়ে ভাবিত মমতা
প্রশ্ন হল, জিটিএ কেন ত্রিপাক্ষিকে যাবে? সেখানে তো মোর্চাকে ডাকা হবে। এর জবাবও রয়েছে মুখ্যসচিবের চিঠিতে। সেখানে তিনি জানিয়েছেন, জিটিএ-র ছাড়া অন্য কারও বৈঠকে যোগ দেওয়ার ‘স্ট্যাটাস’ নেই। ফলে সাংবিধানিক ভাবে অন্য কাউকে বৈঠকে ডাকাটাও অনুচিত।
বিনয় তামাঙ্গ যখন জিটিএ-র কেয়ারটেকার প্রধান হিসেবে পাহাড়ে নিজের প্রভাব বিস্তার করছেন, তখন ত্রিপাক্ষিককেই খড়কুটো মনে করে বাঁচতে চাইছিলেন গুরুঙ্গ। এই বৈঠক ডাকা নিয়ে শরিক হিসেবে দিল্লির উপরে সমানে চাপ তৈরি করছে গুরুঙ্গ-শিবির। গোপন ডেরায় থেকে পাঠানো এক অডিও বার্তায় শুক্রবারও তিনি জানিয়েছেন, ত্রিপাক্ষিকে যোগ দেবেন। এখন রাজ্য সরাসরি বৈঠকটি নিয়েই আপত্তি তোলার পরে গুরুঙ্গের ভবিষ্যৎ নিয়ে অনিশ্চয়তা রয়েই গেল।
পাহাড় নিয়ে আর একটি চিঠিতে দার্জিলিং থেকে আধা সেনা তুলে নেওয়ার বিরোধিতা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। রাজনাথ সিংহকে লেখা চিঠিতে তিনি প্রশ্ন তুলেছেন, কেন এমন সিদ্ধান্ত? সম্প্রতি পাহাড় থেকে আধা সেনা তুলে নেওয়া নিয়ে কেন্দ্র-রাজ্য দ্বন্দ্ব আদালত অবধি পৌঁছয়। প্রথমে কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে কেন্দ্রের সিদ্ধান্ত স্থগিত হয়ে যায়। পরে সুপ্রিম কোর্ট জানায়, সাত কোম্পানি সরিয়ে নেওয়া হোক। বাকি আট কোম্পানি আধা সেনা এক মাস পাহাড়ে থাকবে।
মমতার চিঠিতে বলা হয়েছে, পশ্চিমবঙ্গে ৭২ জনকে কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা দেওয়া হয়। তাঁদের সকলের কার কতটা নিরাপত্তা প্রয়োজন, তা প্রশ্নাতীত নয় বলেই মমতার বক্তব্য। তা সত্ত্বেও তা দেওয়া হচ্ছে। এখানেই মুখ্যমন্ত্রীর প্রশ্ন, তা হলে কেন দার্জিলিং থেকে নিরাপত্তাবাহিনী তুলে নেওয়া হল? একই সঙ্গে তাঁর বক্তব্য, কেন্দ্রের ওই সিদ্ধান্ত সমর্থনযোগ্য নয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy