জঙ্গলমহলে কেন্দ্রীয় বাহিনীর টহল। —ফাইল চিত্র
আগেই দফায় দফায় আধাসেনাদের বেশ কয়েকটি বাহিনীকে তুলে নেওয়া হয়েছে পশ্চিমবঙ্গ থেকে। রাজ্য থেকে আবার ১৮ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী প্রত্যাহার করে নিতে চায় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। মঙ্গলবার নর্থ ব্লক থেকে এই মর্মে একটি বার্তা এসেছে নবান্নে।
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের এই সিদ্ধান্তে ক্ষুব্ধ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কোনও অবস্থাতেই এই বাহিনী ছাড়া হবে না বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য। শীঘ্রই কেন্দ্রকে সে-কথা জানিয়ে দেওয়া হবে বলে নবান্ন সূত্রের খবর। এই নিয়ে কেন্দ্র ও রাজ্যের মধ্যে নতুন করে সংঘাত বাধতে চলেছে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকেরা।
রাজ্যে এখন ৩৫ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী রয়েছে। তার মধ্যে ২৯ কোম্পানি সিআরপি এবং ছয় কোম্পানি নাগা বাহিনী। তার মধ্যে ১৮ কোম্পানি বাহিনী তুলে নেওয়ার কথা বলা হয়েছে কেন্দ্রের সাম্প্রতিক বার্তায়। এখন রাজ্যে যত কেন্দ্রীয় বাহিনী রয়েছে, তার পুরোটাই মোতায়েন করা আছে জঙ্গলমহলে। সেখান থেকে প্রায় অর্ধেক বাহিনী প্রত্যাহার করে নেওয়া হলে জঙ্গলমহলের নিরাপত্তা নিয়ে ফের উদ্বেগ বাড়বে বলে জানাচ্ছেন রাজ্যের স্বরাষ্ট্র দফতরের কর্তারা।
জঙ্গলমহলে মাওবাদীদের দাপটের সময় কেন্দ্রীয় বাহিনীর হাতে নিরাপত্তার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। দীর্ঘদিনের অভিযানে মাওবাদী তৎপরতা স্তিমিত হয়েছে। তার পরে দফায় দফায় আধাসেনা সরিয়েও নেওয়া হয়। তবে বেশ কিছু আধাসেনা এখনও মোতায়েন রয়েছে ওই সব অঞ্চলে। সম্প্রতি ঝাড়গ্রাম সফরে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী জঙ্গলমহলে ফের মাওবাদী তৎপরতার কথা জানিয়েছিলেন। বিশেষ করে প্রতিবেশী ঝাড়খণ্ড থেকে মাওবাদীরা কখনও কখনও এ রাজ্যে চলে আসছে বলে রাজ্য গোয়েন্দা বাহিনীর কাছে খবর রয়েছে। এই অবস্থায় কেন্দ্রীয় সরকার আবার সিআরপি তুলে নিতে চাওয়ায় মুখ্যমন্ত্রী ভীষণ ক্ষুব্ধ।
রাজ্যের স্বরাষ্ট্র দফতরের কর্তারা জানাচ্ছেন, দার্জিলিঙে গোলমাল কমে যাওয়ায় সেখান থেকে কেন্দ্রীয় বাহিনী তুলে নেওয়া হয়েছে আগেই। মাওবাদী দমনের জন্য বিশেষ অর্থসাহায্য পাওয়া জেলাগুলির তালিকায় এখন রয়েছে শুধু ঝাড়গ্রাম। অন্য জেলাগুলি তালিকায় না-থাকায় তারা আর কেন্দ্রীয় সাহায্য পায় না। এ বার জঙ্গলমহলের বিভিন্ন শিবিরে থাকা কেন্দ্রীয় বাহিনী প্রত্যাহার শুরু হলে ফের সেখানে মাওবাদী তৎপরতা বেড়ে যেতে পারে।
স্বরাষ্ট্র দফতরের এক শীর্ষ কর্তার কথায়, ‘‘আমরা কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানিয়ে দিল্লিকে চিঠি দেব। এই সিদ্ধান্ত মানা সম্ভব নয়।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy