Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪

বাইরেও ঘর, নয়া নীতি রাজ্যের

বছর পাঁচেক আগেও হাতে গোনা কিছু ‘হোম স্টে’ ছিল দার্জিলিঙে। উত্তরবঙ্গ জুড়ে সেই সংখ্যাটা এখন পাঁচশো ছাড়িয়েছে। শুধু পাহাড়ে নয়, সমতলেও এই ব্যবসা ধীরে ধীরে পর্যটক টানছে। হোটেলের দমবন্ধ পরিবেশ ছেড়ে অচেনা এক পরিবারের সঙ্গে থেকে, তাঁদের হাতের রান্না খাওয়ার লোভে ভ্রমণপিপাসুরা ভিড় জমাচ্ছেন হোম স্টে-তে।

দেবজিৎ ভট্টাচার্য
কলকাতা শেষ আপডেট: ০১ জানুয়ারি ২০১৭ ০২:৫৫
Share: Save:

বছর পাঁচেক আগেও হাতে গোনা কিছু ‘হোম স্টে’ ছিল দার্জিলিঙে। উত্তরবঙ্গ জুড়ে সেই সংখ্যাটা এখন পাঁচশো ছাড়িয়েছে। শুধু পাহাড়ে নয়, সমতলেও এই ব্যবসা ধীরে ধীরে পর্যটক টানছে। হোটেলের দমবন্ধ পরিবেশ ছেড়ে অচেনা এক পরিবারের সঙ্গে থেকে, তাঁদের হাতের রান্না খাওয়ার লোভে ভ্রমণপিপাসুরা ভিড় জমাচ্ছেন হোম স্টে-তে। তাই ‘ঘরের বাইরে ঘর’— এই স্লোগান সামনে রেখে একটি নীতি তৈরি করেছে রাজ্যের পর্যটন দফতর। নাম দেওয়া হয়েছে, ‘ওয়েস্ট বেঙ্গল হোম স্টে ট্যুরিজম পলিসি, ২০১৭’। সেটি এখন মন্ত্রিসভার অনুমোদনের অপেক্ষায়।

পর্যটন দফতরের আশা, পর্যটকেরা যে ভাবে হোম স্টে-র দিকে ঝুঁকছেন, তাতে আগামী দিনে তা হোটেলের সঙ্গে পাল্লা দেবে। গত কয়েক বছরে সিকিম, দার্জিলিং ও জলপাইগুড়িতে এই ব্যবসা সাড়া ফেলেছে। সেখানকার ‘ইস্টার্ন হিমালয় ট্র্যাভেল অ্যান্ড ট্যুর অপারেটর্স অ্যাসোসিয়েশন’-এর কার্যকরী সভাপতি সম্রাট সান্যাল বলেন, ‘‘ভবিষ্যতে এই বন্দোবস্তের দিকেই সকলে ঝুঁকবে। ঘরোয়া পরিবেশ, ঘরোয়া রান্নাই এখন সকলের পছন্দ।’’

দক্ষিণবঙ্গ এখনও পিছিয়ে। কেবল পুরুলিয়ার অযোধ্যা ও বীরভূমের শান্তিনিকেতনকে ঘিরে কিছু হোম স্টে চালায় দু’-একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা। পর্যটন দফতরের এক কর্তা বলেন, ‘‘কেরল, উত্তরাখণ্ড ও ছত্তীসগ়ঢ়ের মতো রাজ্য অনেক আগেই হোম স্টে চালু করেছে। আশা, নতুন নীতি চালু হলে পাহাড় ও জঙ্গলমহলে অনেকে এই ব্যবসার দিকে ঝুঁকবে।’’

প্রস্তাবিত নীতিতে বলা হয়েছে, হোম স্টে খুললে মালিককে সেই বাড়িতে থাকতে হবে। না হলে লাইসেন্স নয়। এক পর্যটন-কর্তা বলেন, ‘‘হোম স্টে-র বাড়িতে মালিক না থাকলে এর উদ্দেশ্যই ব্যর্থ হবে, সেটা রিসর্ট হয়ে যাবে।’’ নীতিতে এ-ও বলা হয়েছে, একটি বাড়িতে সর্বোচ্চ ছ’টি ঘর হোম স্টে-র কাজে ব্যবহার করা যাবে। ঘরের মাপ কী হবে, ক’টা শয্যা থাকবে — প্রস্তাবিত নীতিতে তা-ও রয়েছে। তবে, ঘরের ভাড়া নির্ধারণ করার ক্ষেত্রে নাক গলাবে না পর্যটন দফতর। পাশাপাশি হোম স্টে-র পরিচ্ছন্নতা ও স্বাস্থ্যকর দিকগুলো নিয়ে বলা হয়েছে, ঘর লাগোয়া বাথরুম অবশ্যই থাকতে হবে। থাকতে হবে কমোড, শাওয়ার ও হাত ধোওয়ার বেসিন। স্বাস্থ্যবিধিসম্মত শৌচালয় তৈরিতে উৎসাহ দিতে এক জন হোম স্টে মালিককে সরকার দু’টো বাথরুম তৈরির জন্য ৬৬ হাজার টাকা ভর্তুকি দেবে। এলাকার লোকজনকে নিয়ে তৈরি কোনও সংস্থা বা সমবায় এই ব্যবসা করতে চাইলেও পর্যটন দফতরের অনুমোদন মিলবে। শুধু তাই নয়, এই ব্যবসায় যুক্ত লোকজনকে কারিগরি শিক্ষা দফতরের মাধ্যমে নিখরচায় ইংরেজি শেখা থেকে আতিথেয়তার প্রশিক্ষণ দেবে পর্যটন দফতর। দফতরের নিজস্ব ওয়েবসাইটে সব হোম স্টে-র নাম-ঠিকানার তালিকা রাখা হবে বলে জানিয়েছেন এক পর্যটনকর্তা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

West Bengal Home Stay Tourism Policy
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE