লগ্নি টানতে সদলবলে সিঙ্গাপুর গিয়েছেন তিনি। তাঁর নেতৃত্বে মুম্বই গিয়ে শিল্প-সম্মেলন করেছে রাজ্য সরকার। কলকাতা ও হলদিয়া শহরে তিন বার ‘বেঙ্গল লিডস’-এর আসর বসেছে তাঁরই উদ্যোগে। বিনিয়োগকারীদের সুবিধা করে দিতে আবেদনপত্রের বহর ৯১ থেকে ৭ পাতা করে, শিল্পের ছাড়পত্র ২১ দিনের মধ্যে দেওয়ার প্রতিশ্রুতিও দিয়েছে তাঁর সরকার। তবু চার বছরের শাসনকালে নতুন বড় শিল্পের জন্য বিনিয়োগ টানতে কার্যত ব্যর্থই হয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এ বার তাই মাঝারি ও ছোট শিল্পকে পাখির চোখ করে নতুন কিছু পদক্ষেপ করার কথা ঘোষণা করল রাজ্য সরকার।
বৃহস্পতিবার রাজ্য মন্ত্রিসভার শিল্প ও পরিকাঠামো বিষয়ক সাব কমিটির বৈঠক শেষে শিল্প তথা অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র জানান, এত দিন ছোট শিল্পের ব্যবসায়ীদের সরকারের কাছ থেকে ইএম-২ শংসাপত্র এবং ‘এলিজিবিলিটি কাম রেজিস্ট্রেশন সার্টিফিকেট’ নিতে হত। তার পরেই তাঁরা ভর্তুকির জন্য আবেদন করতে পারতেন। নতুন নিয়মে শুধু ইএম-২ শংসাপত্র থাকলেই ভর্তুকির আবেদন করা যাবে। আবার, কেউ ব্যবসার জন্য আবেদন করলে সঙ্গে সঙ্গেই তাঁকে একটি ‘প্রভিশনাল ট্রেড লাইসেন্স’ দেওয়া হবে। ওই লাইসেন্সটি হাতে থাকলে ব্যবসা শুরুর অন্যান্য যে সমস্ত সরকারি অনুমোদনের জন্য আবেদন করতে হয়, তা সহজেই করা যাবে। তার এক বছর পর যখন পাকা ট্রেড লাইসেন্স দেওয়া হবে, তার মেয়াদ থাকবে তিন বছরের। এখন প্রতি বছরই ট্রেড লাইসেন্স নবীকরণ করতে হয়।
শিল্পমন্ত্রীর আরও ঘোষণা, কোনও সংস্থা যদি পশ্চিমবঙ্গ শিল্পোন্নয়ন নিগম বা শিল্প পরিকাঠামো উন্নয়ন নিগমের হাতে থাকা শিল্পপার্কে কারখানা করতে চায়, তবে সংশ্লিষ্ট নিগমগুলির ম্যানেজিং ডিরেক্টরদের কাছ থেকে অফিস ও কারখানা তৈরির নকশার অনুমোদন নিয়ে হবে। তাদের অন্য কোথাও যেতে হবে না। পাশাপাশি, সংশ্লিষ্ট ব্যবসায় প্রয়োজনীয় জলের জন্য জেলা স্তরেই দায়িত্বপ্রাপ্ত অফিসারদের কাছ থেকে অনুমোদন নিতে পারবে। এ জন্য জলসম্পদ দফতরে আসতে হবে না। তিনি জানান, এত দিন নতুন
প্রকল্পের জন্য ‘রেজিস্ট্রেশন সার্টিফিকেট-১’ পেতে গেলে সরকারের বিভিন্ন দফতরের কাছ থেকেই মোট ২০টি অনুমোদন নিতে হত। নতুন নিয়মে ছ’টি ক্ষেত্রে অনুমোদন নিলেই চলবে। একই ভাবে ‘রেজিস্ট্রেশন সার্টিফিকেট-২’ পেতে ১৬-র পরিবর্তে পাঁচ জায়গায় অনুমোদন নিলেই চলবে। এই ব্যবস্থা বড় শিল্পের জন্যও প্রযোজ্য বলে তিনি জানান। শিল্পমন্ত্রীর ঘোষণা,
‘‘এখন থেকে ছোট-বড় দোকানদারেরা সকাল ৮টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত দোকান খুলে রাখতে পারবেন। তবে শ্রম আইন তাঁদের মেনে চলতে হবে।’’
এই ঘোষণার পর ফের জমির প্রশ্ন উঠেছে। জমি কোথা থেকে মিলবে, গত চার বছরে সেই প্রশ্ন তুলেছেন একাধিক বিনিয়োগকারী ও বণিকসভা। তাঁদের কাছে ‘ল্যান্ড ব্যাঙ্ক’-এর কথা বলেও চিঁড়ে ভেজেনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy