Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪
মেয়েকে খুনের চেষ্টা

সন্তানদের মুখ চেয়ে বাবাকে বাঁচালেন সৎমা

সাত বছরের অষ্টমী আর পাঁচ বছরের রাহুলকে রেখে ঘর ছেড়ে চলে গিয়েছিলেন তাদের মা। বছর তিনেক আগের কথা। কিন্তু এই দুই খুদের দায় এড়াতে পারলেন না তাদের সৎমা। তাদের মুখের দিকে তাকিয়েই স্বামীর বিরুদ্ধে আনা তাঁর সদ্যোজাত সন্তানকে খুনের চেষ্টার অভিযোগ তুলে নিলেন দক্ষিণ দিনাজপুরের ডাবরা এলাকার যমুনা মোহান্ত।

নিজস্ব সংবাদদাতা
বালুরঘাট শেষ আপডেট: ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ ০২:৪৫
Share: Save:

সাত বছরের অষ্টমী আর পাঁচ বছরের রাহুলকে রেখে ঘর ছেড়ে চলে গিয়েছিলেন তাদের মা। বছর তিনেক আগের কথা। কিন্তু এই দুই খুদের দায় এড়াতে পারলেন না তাদের সৎমা। তাদের মুখের দিকে তাকিয়েই স্বামীর বিরুদ্ধে আনা তাঁর সদ্যোজাত সন্তানকে খুনের চেষ্টার অভিযোগ তুলে নিলেন দক্ষিণ দিনাজপুরের ডাবরা এলাকার যমুনা মোহান্ত।

স্থানীয় সূত্রের খবর, সোমবার বালুরঘাট হাসপাতালে হইচই জোড়েন শিবু মোহান্তের দ্বিতীয় পক্ষের স্ত্রী যমুনা। অভিযোগ, শিবু তাঁর শিশুকন্যাকে বিষ খাইয়ে মারার চেষ্টা করেছেন। শুনে হাসপাতালে ভিড় জমে যায়। শুরু হয় গোলমালও। অভিযুক্তকে থানায় নিয়ে আসে পুলিশ।

যমুনা মোহান্তির ১ মাস ২১ দিনের অসুস্থ শিশুকে প্রথমে হিলি গ্রামীণ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। সেখান থেকে ওই দিন দুপুরেই বালুরঘাট হাসপাতালে আনা হয়। তখনই সেখানে শিবু পৌঁছলে শুরু হয় গোলমাল। কিন্তু বিকেলে শিশুটি সুস্থ হওয়ার পর তাকে নিয়ে বালুরঘাট থানায় যান যমুনাদেবী। দুপুরের অভিযোগ তুলে স্বামীকে মুক্তি দেওয়ার জন্য পুলিশকে আবেদন জানান তিনি।

জানা গিয়েছে, প্রথম পক্ষের স্ত্রী চলে যাওয়ার পরে যমুনাদেবীকে বিয়ে করলেও দ্বিতীয় পক্ষে সন্তান চাননি। তাই অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ার পর স্বামীর মনোভাব বুঝেই মালদহে বাপের বাড়িতে চলে গিয়েছিলেন যমুনা। সেখানেই শিশুকন্যার জন্ম দেন। বাড়ি ফেরার পর থেকেই দু’জনের ঝগড়া চলছিল বলে প্রতিবেশীরা জানান।

যমুনাদেবীর অভিযোগ, রবিবার সকালে তিনি হঠাৎ দেখেন, শিশুটি ছটফট করছে, বমি করছে। মেয়ের মুখে কীটনাশকের গন্ধ পান তিনি। সে সময় বাড়িতে শিবু ছাড়া অন্য কেউ ছিলেন না। তাই সন্দেহ বাড়ে। পরে প্রতিবেশীদের সাহায্যে অসুস্থ শিশুকে হাসপাতালে নিয়ে যান।

বালুরঘাট থানার আইসি সঞ্জয় ঘোষ বলেন, ‘‘সোমবার হাসপাতাল চত্বরে ছিলেন শিবু। সে সময় তাঁর স্ত্রীয়ের অভিযোগ শুনে লোকজন মারমুখী হয়ে শিবুকে ঘিরে ধরে। যমুনাদেবীর মৌখিক অভিযোগের ভিত্তিতে শিবুকে আটক করি আমরা।’’ পরে যমুনাদেবীই স্বামীর বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগ নেই বলে লিখিত জানান।’’

কর্তব্যরত পুলিশ ও শ্বশুরবাড়ির আত্মীয়দের সামনেই যমুনাদেবী বলেন, ‘‘আমার বাচ্চা বেঁচে গিয়েছে। তাই স্বামীর বিরুদ্ধে আর অভিযোগ নেই।’’ কিন্তু ফের যদি এমন ঘটে? যমুনাদেবী বলেন, ‘‘আগের পক্ষের আরও দু’টি বাচ্চা রয়েছে। শিবুই তো রোজগেরে। ও জেলে থাকলে বাচ্চাদের কে দেখবে? তাই অভিযোগ থেকে স্বামীকে মুক্তি দিলাম।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Step Mother Children
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE