প্রতীকী ছবি।
অনিশ্চয়তার জন্য এমনিতেই কমবেশি ভয় ছিল বদলি নিয়ে। এখন ‘ট্রান্সফার অন অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ গ্রাউন্ড’ শব্দবন্ধটিই আতঙ্কের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে শিক্ষকদের কাছে।
অভিযোগ, বদলির এই নতুন নীতির জন্যই নাকি শাসক দলের শিক্ষক সংগঠনের কাছে হুমকির মুখে পড়ছে বিরোধী শিক্ষক সংগঠন। বিরোধী শিবির পাল্টা বলছে, শিক্ষকদের ধৈর্যচ্যুতি ঘটলে খুব একটা ভাল হবে না। শিক্ষা শিবিরের বক্তব্য, শিক্ষার উন্নতির থেকে এখন প্রাধান্য পাচ্ছে ক্ষমতার আস্ফালন। তারই পরিণামে স্কুলশিক্ষকদের এই সদাত্রস্ত অবস্থা। এর প্রতিবাদে একযোগে পথে নামছে বিভিন্ন বাম শিক্ষক সংগঠন।
বিকাশ ভবনের এক কর্তা জানান, অতীতে তিনটি পদ্ধতিতে বদলি হত। সাধারণ, বিশেষ আর আপস বদলি। কিন্তু সম্প্রতি সরকার ‘ট্রান্সফার অন অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ গ্রাউন্ড’ নামে একটি বদলি নীতি চালু করেছে। এতে ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে মধ্যশিক্ষা পর্ষদকে। অর্থাৎ সরকার মনে করলে প্রশাসনিক ও শিক্ষার স্বার্থে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের যখন-তখন রাজ্যের যে-কোনও প্রান্তে বদলি করতে পারবে।
অভিযোগ, এটাকেই হাতিয়ার করছে তৃণমূল শিক্ষক সংগঠন। বঙ্গীয় শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী সংগঠনের সহ-সাধারণ সম্পাদক স্বপন মণ্ডল বলেন, ‘‘রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে খবর আসছে, শাসক-সমর্থক শিক্ষক সংগঠন বিরোধীদের হুমকি দিচ্ছে, তাদের কথামতো না-চললে দূরে ছুড়ে ফেলে দেবে।’’ এর বিহিত চেয়ে হুমকির সুরে তিনি বলেন, ‘‘সরকার শিক্ষকদের ধৈর্য দেখেছে, ধৈর্যচ্যুতি দেখেনি। সেটা যদি ঘটে, শিক্ষা ক্ষেত্রের পক্ষে মোটেই ভাল হবে না।’’
নিখিল বঙ্গ শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক কৃষ্ণপ্রসন্ন ভট্টাচার্য অভিযোগ করেন, শাসক দলের শিক্ষক সংগঠন হুমকি দেখিয়ে তাদের সংগঠনের সদস্য হতে বাধ্য করাচ্ছে। ‘‘জনসমর্থন নেই। তাই সংগঠন বাড়াতে শাসক দলের শিক্ষক সংগঠনকে বদলি নীতির আশ্রয় নিতে হচ্ছে। এটা দুর্ভাগ্যের,’’ বলেন কৃষ্ণপ্রসন্নবাবু। তিনি জানান, ১৮ অগস্ট কলকাতার রাস্তায় নেমে এর প্রতিবাদ জানানো হবে। জবাব দেওয়া হবে সেখান থেকেই।
বিকাশ ভবনের এক কর্তা জানান, বদলি হতে গেলেও পর্ষদকে দফতরের পরামর্শ নিতে হয়। বদলি নীতিতে স্বচ্ছতা রাখার চেষ্টা করা হয়। তাই আতঙ্কিত হওয়ার কারণ নেই। যদিও বিকাশ ভবনেরই অন্দরের খবর, বদলির জন্য এখনও সুপারিশ-তদ্বির কাজ করে। তবে সাধারণ বদলি আপাতত বন্ধ রয়েছে। পশ্চিমবঙ্গ তৃণমূল মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি দিব্যেন্দু মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘এ-সবই মিথ্যে অভিযোগ। এর সঙ্গে আমাদের কোনও সম্পর্ক নেই। বদলি নীতি নিয়ে আমরা মাথা ঘামাই না। কারণ সব জায়গাতেই বদলির ব্যবস্থা রয়েছে। এ ক্ষেত্রেও থাকবে। এতে ক্ষোভ-বিক্ষোভের কী আছে?’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy