Advertisement
১১ মে ২০২৪
Prashant Kishor

বাল্মীকির উপমা দেখিয়ে বামদের দোরে টিম পিকে

টিম পিকে যোগাযোগ করেছিল বলে দাবি করেছেন রাজ্যের প্রাক্তন বন প্রতিমন্ত্রী বনমালী রায়ও।

প্রশান্ত কিশোর। ফাইল চিত্র

প্রশান্ত কিশোর। ফাইল চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
জলপাইগুড়ি শেষ আপডেট: ২৭ অগস্ট ২০২০ ০৪:০৪
Share: Save:

বিরোধী দলে থাকাকালীন জলপাইগুড়ির তৃণমূল কর্মীদের মুখে রাত-দিন যে সিপিএম নেতার নামে নানা অভিযোগ শোনা যেত, তাঁকেও কি দলে আনতে চাইছে টিম পিকে? অন্তত নেতার তেমনই দাবি। ক্ষমতায় আসার পরে সিপিএমের পার্টি অফিস পুড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল তৃণমূলের বিরুদ্ধে। এই নেতার দাবি, তাঁকে পিকের দল আশ্বাস দিয়েছে, প্রয়োজনে সে জন্য এখন তৃণমূল ক্ষমাও চাইবে। একই ভাবে রাজ্যের প্রাক্তন এক মন্ত্রী, সিপিএমের প্রাক্তন সাংসদের কাছেও এমন প্রস্তাব নিয়ে পিকের দল গিয়েছিল বলে তাঁরা প্রত্যেকেই জানিয়েছেন। সকলেরই এক কথা— ‘‘না করে দিয়েছি।’’

সত্যি গিয়েছিল নাকি দল? এই প্রশ্নের জবাবে তৃণমূলের রাজগঞ্জের বিধায়ক খগেশ্বর রায়, যিনি এর কয়েকটি অভিযানের টিম পিকের সঙ্গে ছিলেন বলে জানা গিয়েছে, তিনি বলেন, “মনে রাখতে হবে, দস্যু রত্নাকরও এক দিন বাল্মীকি হয়েছিলেন।” খগেশ্বর জানান, তিনি ক্ষমা চাওয়া নিয়ে কিছু শোনেননি।

এক সময়ে এলাকার দোর্দণ্ডপ্রতাপ নেতা মোক্তাল হোসেন এখনও সিপিএমের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য। তাঁর দাবি, দিন কয়েক আগে তাঁকে তৃণমূলে যোগ দেওয়ার প্রস্তাব দেয় পিকের দল। মোক্তাল পাল্টা বলেন, ক্ষমতায় আসার পরে তৃণমূল কর্মীরা জলপাইগুড়ি লাগোয়া ভাঙামালি এলাকায় তাঁদের দলের লোকাল পার্টি অফিসটি পুড়িয়ে দেয় এবং সাত বছরে তা খুলতেও দেয়নি। উত্তরে কী বলে পিকে-র টিম? মোক্তাল হোসেনের কথায়, “পিকে টিমের প্রতিনিধি বলেন যে, পার্টি অফিস পোড়ানোর জন্য তৃণমূল নেতারা এসে ক্ষমা চাইবেন। আমি রাজি হলে রাজ্য দল থেকেও প্রতিনিধি এসে ক্ষমা চাইতে পারে বলে পিকে-র টিম জানিয়ে দেয়।”

আরও পড়ুন: ‘নিরাপদ’ দূরত্বে দিলীপ-তথাগত

একই ভাবে তাঁর সঙ্গেও টিম পিকে যোগাযোগ করেছিল বলে দাবি করেছেন রাজ্যের প্রাক্তন বন প্রতিমন্ত্রী বনমালী রায়ও। ধূপগুড়ির এই নেতার বক্তব্য, “আমাকে পিকে-র টিম থেকে ফোন করেছিল। বলল দেখা করবে। প্রথমে বুঝতেই পারিনি।” তিনি বলেন, ‘‘প্রশান্ত কিশোরের টিম শুনে আমি জিজ্ঞেস করি, তৃণমূলের সেই পিকে নাকি?’’ পরিচয় জানার পরে কী বললেন? বনমালীর জবাব, ‘‘দেখা করতে চেয়েছিল। আমি না করে দিয়েছি।’’ জলপাইগুড়ির প্রাক্তন সিপিএম সাংসদ মহেন্দ্র রায়ের বাড়িতে তো পিকে-র টিমের সঙ্গে জেলা তৃণমূলের চেয়ারম্যান তথা রাজগঞ্জের তৃণমূল বিধায়ক খগেশ্বর রায়ও গিয়েছিলেন। মহেন্দ্রবাবুও দাবি করেন, তিনি তৃণমূলে যোগ দেওয়ার প্রস্তাব নাকচ করেছেন।

আরও পড়ুন: কোন পথে কংগ্রেস, ফের চর্চা বাংলায়

যাঁদের বিরুদ্ধে একসময়ে অভিযোগের বন্যা বইয়ে দিতেন তৃণমূল নেতারা, এখন তাঁদের দলের টানার চেষ্টা করা হচ্ছে কেন? বাল্মীকির উপমা দিয়ে খগেশ্বর বলেন, ‘‘সিপিএমের নির্দেশে এক সময়ে হয়তো ওই নেতারা অনেক কাণ্ড ঘটিয়েছেন, তবে ব্যক্তিগত ভাবে তাঁরা দোষী নন। তৃণমূলে এলে তাঁরা আরও ভাল হতে পারবেন।’’ তবে তৃণমূল ক্ষমা চাইবে, এমন আশ্বাস কাউকে দেওয়ার কথা খগেশ্বরবাবু জানেন না বলে দাবি করেছেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Prashant Kishor TMC CPM
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE