Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

পুলিশকে ‘সবক’ শেখাতে তৎপরতা তৃণমূলে, ‘পক্ষপাতদুষ্ট’দের নামের তালিকা তৈরি

সোমবার নবান্নে মন্ত্রী ও পুলিশ প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী নিজেই পুল‌িশের একাংশের ভূমিকা নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেন।

ছবি: সংগৃহীত।

ছবি: সংগৃহীত।

নুরুল আবসার
উলুবেড়িয়া শেষ আপডেট: ১২ জুন ২০১৯ ০৫:০৩
Share: Save:

পুলিশের নিচুতলার কর্মী এবং সিভিক ভলান্টিয়ারদের একাংশ বিজেপির পক্ষপাতদুষ্ট—এমনই অভিযোগ হাওড়া গ্রামীণ এলাকার তৃণমূল নেতাদের। ওই পক্ষপাতদুষ্টদের ‘শায়েস্তা’ করতে ইতিমধ্যে গোপন তালিকাও তৈরি করে ফেলেছেন রাজ্যের শাসক দলের নেতারা। সেটা তুলে দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে জেলা ও রাজ্য পুলিশের শীর্ষ কর্তাদের হাতে।

গ্রামীণ জেলা তৃণমূলের এক বড় মাপের নেতা জানান, প্রথম পর্যায়ে গ্রামীণ জেলা পুলিশ কর্তাদের বলা হবে তালিকায় থাকা পুলিশ কর্মী এবং সিভিক ভলান্টিয়ারদের নিরপেক্ষভাবে কাজ করার জন্য। তাতেও কাজ না হলে দলের রাজ্য নেতৃত্বের কাছে সেই তালিকা পাঠিয়ে রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ চাওয়া হবে। তালিকা পাঠানো হবে রাজ্য পুলিশের শীর্ষ কর্তাদের কাছেও।

সোমবার নবান্নে মন্ত্রী ও পুলিশ প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী নিজেই পুল‌িশের একাংশের ভূমিকা নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেন। কয়েকজন মন্ত্রীও পুলিশের একাংশের ভূমিকা নিয়ে যে সন্তুষ্ট নন তা প্রকাশ্যে জানিয়ে দেন। এই বৈঠকের আগে থেকেই অবশ্য পুলিশ এবং সিভিক ভলান্টিয়ারদের একাংশের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবিতে ক্ষোভ জানিয়েছিলেন হাওড়া গ্রামীণের একাধিক তৃণমূল নেতা। সোমবার মুখ্যমন্ত্রী পুলিশের বিরুদ্ধে উষ্মা প্রকাশ করায় খুশি তাঁরা।

জেলা তৃণমূল সূত্রে খবর, ক্ষোভের শুরু মূলত উদয়নারায়ণপুর থেকে। এ বার লোকসভা নির্বাচনে উদয়নারায়ণপুরে তৃণমূলের লিড আছে প্রায় ৩৭ হাজার ভোটের। জেলা তৃণমূলের একটি সূত্রের খবর, বর্তমানে গ্রামীণ জেলায় দলের দুর্গ ওই উদয়নারায়ণপুর। ২০১৮ সালে লোকসভার উপনির্বাচনে এখান থেকে তৃণমূল লিড পেয়েছিল ১ লক্ষ ১০ হাজার ভোটের। কিন্তু এ বারে সেই লিড কমে যাওয়ার পরই তৃণমূল নেতৃত্বের কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়ে। তাঁদের বক্তব্য, ফল প্রকাশের পর থেকেই বিজেপি উদয়নারায়ণপুরের নানা জায়গায় গোলমাল শুরু করেছে। এমনকি তৃণমূলের একটি দলীয় কার্যালয়ে হামলা চালানোর অভিযোগও উঠেছে বিজেপির বিরুদ্ধে।

তৃণমূল নেতারা জানান, এ ক্ষেত্রে পুলিশের নিচুতলার কর্মী এবং সিভিক ভলান্টিয়ারদের একটা অংশের পরিবর্তিত ভূমিকা তাঁরা লক্ষ্য করছেন। এক নেতার ব্যখ্যা, ‘‘পুলিশের নিচুতলার কর্মীদের একটা অংশ বিজেপি কর্মীদের তাতাচ্ছে। তার ফলে বিজেপির মধ্যে এই ধারণা জন্মাচ্ছে, প্রশাসনে তৃণমূলের আর নিয়ন্ত্রণ নেই।’’ শুধু তাই নয়, হামলাকারীদের পুলিশ ধরতে গেলে নিচুতলার পুলিশ কর্মী ও সিভিক ভলান্টিয়ারদের একাংশ গ্রামেখবর দিয়ে দিচ্ছে। ফলে অভিযুক্তদের ধরাই যাচ্ছে না।

গ্রামীণ জেলা তৃণমূলের এক নেতা বলেন, ‘‘পুলিশ কর্মী এবং সিভিক ভলান্টিয়ারদের পক্ষপাতমূলক আচরণের প্রমাণ-সহ নামের তালিকা তৈরি হচ্ছে। কাজ চূড়ান্ত পর্যায়ে।’’ সরকারিভাবে অবশ্য এই তালিকা নিয়ে তৃণমূল নেতারা মন্তব্য করেননি।

উদয়নারায়ণপুরের বিধায়ক সমীর পাঁজা বলেন, ‘‘পুলিশ প্রশাসনের আচরণ নিরপেক্ষ হওয়া দরকার। অল্প কিছুটা হলেও সেই নিরপেক্ষতায় ঘাটতি দেখা যাচ্ছে। এটা কাম্য নয়।’’

গ্রামীণ জেলা তৃণমূল সভাপতি পুলক রায় বলেন, ‘‘আমরা প্রতিটি খুঁটিনাটি বিষয়ে নজর রাখছি, যাতে প্রতিকূল পরিস্থিতি তৈরি হলে প্রশাসনিক ও রাজনৈতিকভাবে মোকাবিলা করা যায়।’’

বিজেপির পক্ষ থেকে অশান্তি করার অভিযোগ উড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। মন্তব্য করতে চাননি গ্রামীণ জেলা পুলিশ কর্তারা।

এবার শুধু খবর পড়া নয়, খবর দেখাও। সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের YouTube Channel - এ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

TMC BJP
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE