—ফাইল চিত্র।
সেচের জন্য যত জল তার কাছে চাওয়া হচ্ছে, ততটা দেওয়ার ক্ষমতা নেই তিস্তার। এমনকী শুধু পশ্চিমবঙ্গের যা চাহিদা, সেটুকুও পূরণ করার অবস্থাতেও নেই সে। এই পরিস্থিতিতে বাংলাদেশকে তিস্তার জল দেওয়া দুরূহ বলেই ইঙ্গিত দিয়েছেন দেশের নদী-বিশেষজ্ঞেরা।
বৃত্তান্তটা সেই বিপুল চাহিদা আর স্বল্প জোগানেরই। এবং এ ক্ষেত্রে চাহিদা আর জোগানে ফারাকটা বিস্তর। নবান্ন সূত্রের খবর, তিস্তার জল দিয়ে ন’লক্ষ হেক্টর জমিকে সেচসেবিত করে তুলতে চায় পশ্চিমবঙ্গ। আর বাংলাদেশ চায় সাত লক্ষ হেক্টর জমিতে সেচের জল দিক তিস্তা। নদী-বিশেষজ্ঞদের মতে, এই ১৬ লক্ষ হেক্টর জমিতে সেচের জন্য নদীর জল দিতে গেলে শুখা মরসুমে তিস্তায় প্রতি সেকেন্ডে ১৬০০ ঘন মিটার জল থাকা দরকার। অথচ এখন থাকে প্রতি সেকেন্ডে ১৫০-২০০ ঘন মিটার জল। সিকিমে তিস্তার উপরে তৈরি জলবিদ্যুৎ প্রকল্প থেকে ছাড়া জল পশ্চিমবঙ্গের তিস্তা ব্যারাজ ধরে রাখতে পারে না। অর্থাৎ সেচের জন্য তিস্তার কাছে যতটা জল প্রত্যাশা করা হচ্ছে, বাস্তব অবস্থার সঙ্গে সেই চাহিদা মোটেই সামঞ্জস্যপূর্ণ নয় বলে মনে করছেন নদী-বিশেষজ্ঞেরা।
নদী-বিশেষজ্ঞ কল্যাণ রুদ্র এবং গঙ্গাকে নির্মল করার কাজে যুক্ত জাতীয় মিশনের টেকনিক্যাল ডিরেক্টর সন্দীপ মঙ্গলবার পরিবেশ বিষয়ক এক জাতীয় কর্মশালায় জানান, নদীর কাছে জলের চাহিদার পরিমাণ বাস্তব পরিস্থিতি অনুযায়ী নির্ধারণ করা উচিত। অবাস্তব চাহিদা পূরণ করতে হলে নদী মরে যাবে। এই প্রসঙ্গে কাবেরীর সঙ্গেই তিস্তার উল্লেখ করেন কল্যাণবাবু। যিনি ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে তিস্তার জলবণ্টন নিয়ে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের গড়া পরামর্শদাতা কমিটির প্রধান। তবে বাংলাদেশকে জল দেওয়া যাবে না— এ কথা সরাসরি বলেননি তিনি।
ন্যাশনাল এনভায়রনমেন্টাল ইঞ্জিনিয়ারিং রিসার্চ ইনস্টিটিউট (নিরি)-এর কলকাতা শাখা আয়োজিত এ দিনের কর্মশালায় কল্যাণবাবু জানান, গোটা দেশে যে-পরিমাণ চাষের জমিকে সেচসেবিত করার লক্ষ্য ঘোষণা করা হয়, বাস্তবে সেই পরিমাণ জল নদীগুলিতে নেই। কাবেরীর বেলায় এটা হয়েছে। তিস্তার ক্ষেত্রেও একই কথা প্রযোজ্য। নিরি-র অধিকর্তা রাকেশ কুমার জানান, দেশে অধিকাংশ নদীরই প্রবাহ কমে গিয়েছে বা তারা প্রবাহ হারিয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy