Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪
Congress

আরও নামে নয়া মোড় প্রদেশ সভাপতির দৌড়ে

সোমেন মিত্রের প্রয়াণের পরে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতির দায়িত্ব নতুন কাউকে দেওয়ার জন্য এআইসিসি-র কাছে প্রস্তাব দিয়েছেন লোকসভায় দলের নেতা অধীর চৌধুরী।

প্রদীপ ভট্টাচার্য, অধীর চৌধুরী এবং আব্দুল মান্নান। এই তিন জনের বাইরেও আলোচনায় অনেক নতুন নাম।—ফাইল চিত্র।

প্রদীপ ভট্টাচার্য, অধীর চৌধুরী এবং আব্দুল মান্নান। এই তিন জনের বাইরেও আলোচনায় অনেক নতুন নাম।—ফাইল চিত্র।

সন্দীপন চক্রবর্তী
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৬ অগস্ট ২০২০ ০১:৫৬
Share: Save:

প্রদেশ কংগ্রেসের নতুন সভাপতি ঠিক করার জন্য এআইসিসি সক্রিয় হতেই নতুন মোড় নিল গোটা প্রক্রিয়া! প্রথম দফায় দলের তিন বর্ষীয়ান নেতাকে নিয়েই আলোচনা হচ্ছিল। কিন্তু এখন প্রস্তাবিত তালিকায় যোগ হয়েছে আরও নাম।

কংগ্রেস সূত্রের খবর, সোমেন মিত্রের প্রয়াণের পরে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতির দায়িত্ব নতুন কাউকে দেওয়ার জন্য এআইসিসি-র কাছে প্রস্তাব দিয়েছেন লোকসভায় দলের নেতা অধীর চৌধুরী। তাঁর নিজের পছন্দ বহরমপুরের বিধায়ক এবং বিধানসভায় কংগ্রেসের সচতেক মনোজ চক্রবর্তী। কিন্তু এই নামে আবার আপত্তি রয়েছে প্রদেশ কংগ্রেসের বাকি নেতাদের। তাঁদের বক্তব্য, সংগঠনের বাইরেও জনপ্রিয় মুখ এবং ওজনদার নেতা হিসেবে অধীরবাবু ফের প্রদেশ সভাপতি হতেই পারেন। কিন্তু ‘যুদ্ধং দেহি’ মনোভাবের মনোজবাবু ওই পদের উপযুক্ত নন। এই পরিস্থিতিতে আবার প্রদেশ কংগ্রেসের তিন কার্যকরী সভাপতি আবু হাসেম (ডালু) খান চৌধুরী, নেপাল মাহাতো এবং শঙ্কর মালাকারও নিজেদের বিধান ভবনে প্রতিষ্ঠিত করতে সক্রিয় হয়েছেন বলে দলীয় সূত্রের খবর। তার ফলে, পরিস্থিতি সব মিলিয়ে বেশ জটিল! কার্যকরী সভাপতি থাকলেও এই দৌড়ে ঢোকার আগ্রহ দেখাননি একমাত্র দীপা দাশমুন্সি।

বাংলার ভারপ্রাপ্ত এআইসিসি নেতা গৌরব গগৈ সোমেনবাবুর মৃত্যুর পরেই কলকাতায় এসে প্রদেশ কংগ্রেস নেতাদের সঙ্গে কথা বলেছিলেন। তখন সম্ভাব্য নতুন সভাপতি হিসেবে অধীর, প্রদীপ ভট্টাচার্য এবং আব্দুল মান্নানের নাম গিয়েছিল তাঁর কাছে। এআইসিসি-কে প্রাথমিক ভাবে বিষয়টি জানিয়েছেন গৌরব। তার পরে এআইসিসি-র সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) কে সি বেণুগোপাল বাংলার কংগ্রেস নেতাদের মতামত নিতে শুরু করেছেন। তাঁদের অধিকাংশেরই মত, লোকসভায় দলনেতা এবং পাবলিক অ্যাকাউন্টস কমিটির (পিএসি) চেয়ারম্যান— দিল্লিতে এই জোড়া দায়িত্বের জন্য অধীরবাবু যদি বিধান ভবনের ভার আর না নিতে পারেন, তা হলে প্রদীপবাবু এবং মান্নানের মধ্যে কাউকে বেছে নেওয়া হোক। কিন্তু কংগ্রেসের ভাঙা বাজারেও যে সব জেলার ‘লবি’ এখনও জোরালো, তাদের মধ্যে মুর্শিদাবাদ চাইছে মনোজবাবুকে প্রদেশ সভাপতির আসনে বসাতে। সোমেনবাবু যেমন রাজ্যসভায় সনিয়া গাঁধীর প্রার্থী দেবপ্রসাদ রায়কে হারিয়ে বিক্ষুব্ধ প্রার্থীকে জিতিয়ে এনেছিলেন, বহরমপুর বিধানসভা কেন্দ্র থেকে অধীরবাবুও তেমনই ২০০৬ সালে কংগ্রেসের ‘সরকারি’ প্রার্থীকে হারিয়ে নির্দল মনোজবাবুকে বিধায়ক করিয়েছিলেন। মনোজবাবু প্রদেশ সভাপতি হলে অধীরবাবুরে হাতেই যে রিমোট থাকবে, কংগ্রেসে তা কারও অজানা নয়! আবার মালদহ জেলার লবি বলতে শুরু করেছে, বরকত গনি খানের ভাই ডালুবাবুই বা দায়িত্ব পাবেন না কেন?

কংগ্রেসের এক নেতার কথায়, ‘‘দল ছোট হয়ে এলেও প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি পদের একটা ওজন আছে। যিনি দায়িত্ব পাবেন, তাঁকে যেমন দলের সকলকে নিয়ে চলার দক্ষতা রাখতে হবে, তেমনই বাম নেতৃত্বের সঙ্গে সমন্বয় করতে হবে। আবার প্রয়োজনে তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্বের সঙ্গে কথা বলতে হবে। এই সব দিক বিবেচনা করেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে।’’ দলীয় সূত্রের ইঙ্গিত, এআইসিসি-র সাংগঠনিক দায়িত্বে কিছু রদবদল করতে পারেন রাহুল গাঁধী, যা আটকে রয়েছে রাজস্থানে সঙ্কটের জন্য। গৌরব ও বেণুগোপালের পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট পাওয়ার পরে প্রদেশ কংগ্রেসের সভাপতির দায়িত্বও ঠিক হয়ে যেতে পারে এবং তা সম্ভবত অগস্টের শেষ সপ্তাহে সোমেনবাবুর স্মরণ-সভার আগেই।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE