একটা দিনও পেরোল না। কেন তারা কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে এসেছে, তার কৈফিয়ত চেয়ে কাটোয়ার বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়ের অনুগামীর বাড়িতে ঢুকে মারধর-ভাঙচুর করা হল। অভিযোগের তির তৃণমূলেরই কিছু লোকজনের দিকে, যদিও দলের নেতারা ‘দুষ্কৃতী’ বলে দায় সারছেন।
শুক্রবার ঘনিষ্ঠদের নিয়ে তৃণমূল ভবনে গিয়ে শাসকদলে যোগ দেন কাটোয়ার প্রভাবশালী কংগ্রেস নেতা রবিবাবু। কাটোয়া পুরসভার ন’জন কাউন্সিলর, দাঁইহাটের এক মাত্র কংগ্রেস কাউন্সিলর, খাজুরডিহি-সহ পাঁচ পঞ্চায়েতের প্রধান ও সদস্যরাও তাঁর সঙ্গেই দল পাল্টেছেন। আর, ওই রাতেই খাজুরডিহি পঞ্চায়েতের এক সদস্যকে মারধর ও বাড়ি ভাঙচুর করা হয় বলে অভিযোগ।
শনিবার সকালে আবার কাটোয়া ১ পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য শামিম শেখের বাড়িতে ঢুকে কয়েক জন মারধর এবং বাড়ি ভাঙচুর করে। তিনিও শুক্রবার দল পাল্টেছেন। দুই আক্রান্তই কাটোয়া থানায় লিখিত অভিযোগে জানিয়েছেন, কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দেওয়ায় অন্তত ২০-২৫ জন দুষ্কৃতী তাঁদের বাড়িতে ঢুকে মারধর করে। বাড়িতে ভাঙচুর চালায়। নির্দিষ্ট করে তাঁরা কারও নাম করেননি। তবে পুলিশকে বলেছেন, ‘‘ওরা বলছিল, ‘কেন তোরা তৃণমূলে যোগ দিয়েছিস?’ এই বলতে-বলতেই ওরা মারধর করতে থাকে।’’
এই হামলার জেরে তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীই শনিবার দুপুর থেকে দফায়-দফায় ব্যাপক বোমাবাজি শুরু করে। পুলিশের সামনেই সন্ধ্যা পর্যন্ত সেই বোমাবাজি চলে বলে অভিযোগ। সন্ধ্যার পরে বিশাল বাহিনী এলাকায় ঢুকলে বোমাবাজি বন্ধ হয়। বর্ধমানের পুলিশ সুপার কুণাল অগ্রবাল বলেন, “পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। এলাকায় তল্লাশি চলছে।”
কিন্তু কেন এই হামলা?
তৃণমূলেরই একটি মহলের মতে, এক সময়ে রবিবাবুর ছত্রচ্ছায়া থেকে বেরিয়ে কাটোয়ায় তৃণমূলের নেতা বনে গিয়েছিলেন কয়েক জন। তাঁদের অন্যতম অমর রাম এখন কাটোয়ার পুরপ্রধান। এখন ফের রবিবাবুর ছায়া মাথার উপরে চলে আসায় এঁদের কেউ-কেউ অস্বস্তিতে পড়ে গিয়েছেন। বর্ধমান জেলা কংগ্রেসের সভাপতি আভাস ভট্টাচার্যের দাবি, “এই ঘটনা তো প্রত্যাশিতই ছিল। কংগ্রেস ছেড়ে রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায় দলবল নিয়ে তৃণমূলে ঢুকেছেন, তাতে তৃণমূলের ক্ষমতাসীন গোষ্ঠীর গোসা হয়েছে। নিজেদের ক্ষমতা ধরে রাখতেই তারা তৃণমূলে ঢোকা লোকজনের উপরে হামলা চালাচ্ছে। আগামী দিনে এই ধরনের ঘটনা আরও বাড়বে।”
কাটোয়া শহর তৃণমূলের সভাপতি অমর রাম অবশ্য দাবি করেন, গ্রাম পঞ্চায়েত বা পঞ্চায়েত সমিতির সদস্যকে মারধরের ঘটনা তাঁর জানা নেই। তাঁর পাল্টা অভিযোগ, “হরিপুরের সমাজবিরোধীরা ১৯ নম্বর ওয়ার্ডে ঢুকে বোমাবাজি করেছে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy