Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪
Visva-Bharati University Wall Issue

‘অপব্যাখ্যা’, পাঁচিল-কাণ্ডে দাবি সুভাষের

পৌষমেলার মাঠ ঘেরার নিয়ে যখন সরগরম শান্তিনিকেতন, তখনই সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে সুভাষবাবুর দাবি, পরিবেশ আদালতের নির্দেশের ‘অপব্যাখ্যা’ করছে বিশ্বভারতী

শান্তিনিকেতনে পরিবেশকর্মী সুভাষ দত্ত। নিজস্ব চিত্র

শান্তিনিকেতনে পরিবেশকর্মী সুভাষ দত্ত। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা 
শান্তিনিকেতন শেষ আপডেট: ২৩ অগস্ট ২০২০ ০৩:৩৪
Share: Save:

তাঁর দায়ের করা একটি মামলার ভিত্তিতেই পৌষমেলায় পরিবেশবিধি সংক্রান্ত নানা মতামত জানিয়েছিল জাতীয় পরিবেশ আদালত। কিন্তু, এখন সেই আদালতের রায়কেই বিশ্বভারতী হাতিয়ার করছে পৌষমেলার মাঠ ঘিরে দেওয়ার যুক্তি হিসাবে—এমনই দাবি পরিবেশকর্মী সুভাষ দত্তের। বিশ্বভারতীর বিভিন্ন জায়গা পাঁচিল দিয়ে ঘিরে দেওয়ার বিরুদ্ধে তিনি আদালতের দ্বারস্থ হওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলেও জানান সুভাষবাবু।

পৌষমেলার মাঠ ঘেরার নিয়ে যখন সরগরম শান্তিনিকেতন, তখনই সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে সুভাষবাবুর দাবি, পরিবেশ আদালতের নির্দেশের ‘অপব্যাখ্যা’ করছে বিশ্বভারতী। পরিবেশ আদালত কখনওই বিশ্বভারতীকে মেলার মাঠ পাঁচিল দিয়ে ঘিরে দেওয়ার আদেশ দেয়নি। বরং বিশ্বভারতী গ্রিন ট্রাইবুনালকে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল যে, তারা মেলার মাঠকে পৃথক ভাবে চিহ্নিত করবে ও তার চারপাশে ব্যারিকেড করবে। এই পুরো ঘটনার সঙ্গে ইটের পাঁচিল তোলার কোনও সম্পর্ক নেই বলেই সুভাষবাবু জানিয়েছেন।

এ দিন শান্তিনিকেতনের সাংবাদিক বৈঠকে তিনি বলেন, “ডিমার্কেশন ও ব্যারিকেড এবং ইটের প্রাচীর তোলা এক জিনিস নয়। বিশ্ববিদ্যালয় আইন না জানতে পারে, কিন্তু ইংরেজি না বুঝতে পারাটাও অভিপ্রেত নয়।’’

একই সঙ্গে সুভাষবাবু জানান, বিশ্বভারতী চলতি বছর ৮ জুলাই বীরভূমের জেলাশাসককে লিখিত ভাবে জানিয়েছে যে, তারা পৌষমেলা আয়োজন করতে অপারগ। সে ক্ষেত্রে মেলার মাঠ ঘেরার কোনও প্রাসঙ্গিকতাই থাকে না বলে এই পরিবেশকর্মী মনে করেন। তাঁর অভিযোগ, ‘‘শান্তিনিকেতন ট্রাস্ট বা বিশ্বভারতীর টাকা প্রকৃতপক্ষে সাধারণ মানুষের টাকা। সেই টাকা পাঁচিল দেওয়ার নামে অপব্যয় করছেন উপাচার্য। যে ভাবে তিনি তাঁর কাজকর্ম পরিচালনা করছেন, তাতে মনে হচ্ছে উনি কোনও বহুজাতিক সংস্থার ম্যানেজিং ডিরেক্টর অথবা কোনও রাজনৈতিক নেতা।’’

তবে, জনরোষের নামে পৌষমেলার মাঠে গত সোমবার যে ভাঙচুর হয়েছে, তারও বিরোধিতা করেছেন সুভাষবাবু। তাঁর দাবি, “সোমবারের তাণ্ডব পূর্বপরিকল্পিত ও সংগঠিত।’’ একই সঙ্গে এ দিন তিনি পৌষমেলা ও বসন্ত উৎসবের দায়িত্ব রাজ্য সরকারকে নিজের হাতে নেওয়ার অনুরোধ জানিয়ে চিঠি দিয়েছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ও বীরভুমের জেলাশাসককে। তিনি বলেন, “এমন ঐতিহ্যশালী, ঐতিহাসিক অনুষ্ঠান পরিবেশবিধির মান্যতা দিতে না পারায় বন্ধ করে দিচ্ছেন বর্তমান কর্তৃপক্ষ। কিন্তু, বোলপুর-শান্তিনিকেতনের বিকল্প স্থানে প্রশাসনিক স্তরে অনুষ্ঠানগুলি পালিত হলে জনস্বার্থ রক্ষিত হবে।’’ সুভাষবাবুর মতে, গোটা সমস্যার কারণ হল, বিশ্বভারতীতে রাজনীতি ঢুকে গিয়েছে এবং তা আগে থেকেই।

জেলাশাসক মৌমিতা গোদারা বসু বলেন, ‘‘এখনও আমার হাতে চিঠি পৌঁছয়নি। চিঠি পেলে বিষয়টি সরকারের নজরে আনব।’’

বিশ্বভারতী-কাণ্ডের প্রতিবাদে এ দিন সিউড়িতে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন অখিল ভারতীয় বিদ্যার্থী পরিষদের নেতাকর্মীরা। শনিবার সকাল এগারোটা নাগাদ জনা পঁচিশ নেতাকর্মী সিউড়ি বাস স্ট্যান্ড এলাকায় বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন। হামলাকারীদের ধিক্কার জানানো এবং ঘটনার সিবিআই তদন্তের দাবিতে তাঁরা বিক্ষোভ প্রদর্শন দেখান বলে এবিভিপির তরফে দাবি করা হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE