—ফাইল চিত্র।
তাপপ্রবাহের রক্তচক্ষু কয়েক দিন আগেও রাজ্যের পশ্চিমাঞ্চলকে তটস্থ করে রেখেছিল। রবিবার দেখা গেল, রীতিমতো ‘উল্টো হাওয়া’ বইতে শুরু করেছে পারদের রেখচিত্রে! তাপের লড়াইয়ে কলকাতা এগিয়ে গিয়েছে বাঁকুড়া ও শ্রীনিকেতনের থেকে!
এর মধ্যে আশ্বাসবাণী শোনাচ্ছে হাওয়া অফিস। আলিপুর আবহাওয়া দফতরের অধিকর্তা গণেশকুমার দাস এ দিন জানান, আজ, সোমবার থেকেই ঝড়বৃষ্টির পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে। ‘‘সোম থেকে বুধবারের মধ্যে ঝড়বৃষ্টি হতে পারে গাঙ্গেয় বঙ্গে। কলকাতাতেও তার সম্ভাবনা রয়েছে,’’ বলেন গণেশবাবু। একই সঙ্গে তিনি জানাচ্ছেন, কালবৈশাখী হলে রাতের দিকে স্বস্তি মিলতে পারে। কিন্তু দিনের তাপমাত্রা এখন যা রয়েছে, তার থেকে খুব বেশি কমবে না। আবহবিদদের কেউ কেউ বলছেন, বিহারে একটি ঘূর্ণাবর্ত রয়েছে। সেটি সরে গেলেই পশ্চিমবঙ্গের পশ্চিমাঞ্চলে তাপমাত্রা ফের মাথাচাড়া দিতে পারে।
হাওয়া অফিসের খবর, কলকাতায় এ দিন সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৬.১ ডিগ্রি সেলসিয়াস, স্বাভাবিকের থেকে এক ডিগ্রি বেশি। কিন্তু বাঁকুড়ার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা (৩৫.৯ ডিগ্রি) ছিল এই সময়ের স্বাভাবিকের থেকে তিন ডিগ্রি নীচে। স্বাভাবিকের থেকে পারদ এক ডিগ্রি নীচে রয়েছে বীরভূমের শ্রীনিকেতন (৩৫.৬ ডিগ্রি)-এও। সাধারণ ভাবে ওই সব জায়গায় কলকাতার থেকে তাপমাত্রা বেশি থাকে অনেকটাই। আসানসোলের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা (৩৬.২ ডিগ্রি) এ দিন কার্যত কলকাতার সমান ছিল।
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
দক্ষিণবঙ্গে ভোটের উত্তাপ চরমে। গ্রীষ্মও যেন আগুন ঝরাচ্ছিল। পশ্চিমাঞ্চল তো বটেই, কলকাতার উপকণ্ঠেও দিনের তাপমাত্রা ছিল ৪০ ডিগ্রি ছুঁইছুঁই! মুর্শিদাবাদে টানা দিন তিনেক তাপপ্রবাহও বয়েছে! এই পরিস্থিতিতে পুরুলিয়া, পশ্চিম মেদিনীপুর, বাঁকুড়ায় রবিবার, ভোটের দিন আবহাওয়া কেমন থাকবে, তা নিয়ে জোর জল্পনা চলছিল। শেষ পর্যন্ত এ দিন অবশ্য তপনতাপের তেজ কিছুটা কম মালুম হয়েছে। অনেকে বলছেন, ভোটের তেজ এ দিন গরমের তেজকে হারিয়ে দিয়েছে!
কিন্তু বঙ্গের পশ্চিমাঞ্চলে প্রকৃতির মতিগতি এমন বদলে গেল কেন?
আবহবিদেরা জানাচ্ছেন, বিহারের উপরে একটি ঘূর্ণাবর্ত থাকায় মেঘ রয়েছে ওই এলাকায়। বৃষ্টিও হয়েছে। তাই গরম হাওয়া বাংলার পশ্চিমাঞ্চলে ঢুকতে পারছে না। ঘূর্ণাবর্তের জেরে বৃষ্টি হচ্ছে উত্তর-পশ্চিম ভারতেও। তার ফলে সেখান থেকেও ‘লু’ বা প্রচণ্ড গরম বাতাস বয়ে পূর্ব ভারতের দিকে আসতে পারছে না। এই সব মিলিয়েই তাপের প্রবাহে লাগাম পড়েছে। অঙ্কের হিসেবে তাপমাত্রা কিছু কমলেও তাপের জ্বলুনি কিছুমাত্র কম অনুভূত হচ্ছে না। প্রশ্ন উঠছে, মে মাসের তো প্রায় মাঝামাঝি হয়ে গেল। এখনও সে-ভাবে কালবৈশাখী এল না কেন? তীব্র দহনজ্বালায় শান্তিবারি ঢালতে কবে আসবে সে?
আবহাওয়া অধিকর্তা গণেশবাবু ঝড়বৃষ্টির সম্ভাবনার আশ্বাসের সঙ্গে সঙ্গেই জানান, কালবৈশাখী হলে রাতে কিছুটা স্বস্তি মিললেও দিনের তাপমাত্রার খুব হেরফের হবে না।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy