গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ
রাজ্যে এক দিনে ফের করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ২ হাজার ছাড়াল। সোমবার সন্ধ্যায় রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের বুলেটিন অনুযায়ী, এ দিন নতুন করে কোভিড-১৯ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ২ হাজার ২৮২ জন। সব মিলিয়ে এখনও পর্যন্ত এ রাজ্যে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা গিয়ে পৌঁছল ৪৪ হাজার ৭৬৯-এ। গত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে ৩৫ জনের। এখনও পর্যন্ত মোট মৃতের সংখ্যা ১ হাজার ১৪৭।
২৪ ঘণ্টায় আক্রান্তের সংখ্যা প্রতি দিন যে ভাবে বেড়ে চলেছে, তাতে উদ্বিগ্ন হয়ে এ দিনই ফের নতুন করে লকডাউনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য সরকার। বলা হয়েছে, এ বার থেকে সপ্তাহে দু’দিন করে রাজ্যে সম্পূর্ণ লকডাউন করা হবে। তার মধ্যেই প্রশাসনের চিন্তা বাড়াল পজিটিভিটি রেট অর্থাৎ সংক্রমণের হার, রবিবার সংক্রমণের হার যেখানে ১৬.৯ শতাংশ ছিল, এ দিন তা বেড়ে ১৭.৪ শতাংশে এসে ঠেকেছে।
প্রতিদিন কত জন রোগীর করোনা টেস্ট করা হচ্ছে এবং তার মধ্যে কত জনের রিপোর্ট পজিটিভ আসছে, সেটাকেই বলা হয় পজিটিভিটি রেট বা সংক্রমণের হার। স্বাস্থ্য দফতরের বুলেটিন অনুযায়ী, এখনও পর্যন্ত মোট ৭ লক্ষ ১৬ হাজার ৩৬৫ জনের লালারসের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে এ রাজ্যে, যার মধ্যে সোমবারই ১৩ হাজার ৮১ জনের পরীক্ষা হয়েছে। বেশি সংখ্যক মানুষের পরীক্ষা হওয়াতেই সংক্রমণের হার বেড়েছে বলে মত বিশেষজ্ঞদের।
(গ্রাফের উপর হোভার বা টাচ করলে প্রত্যেক দিনের পরিসংখ্যান দেখতে পাবেন।)
আরও পড়ুন: সপ্তাহে ২ দিন রাজ্যে সম্পূর্ণ লকডাউন, এ সপ্তাহে বৃহস্পতি এবং শনিবার
তবে গত ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বাড়লেও, কলকাতায় এ দিন আক্রান্তের সংখ্যা সামান্য কমেছে। রবিবার কলকাতায় ৬৬২ জন নতুন করে কোভিড-১৯ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছিলেন। সেই তুলনায় গত ২৪ ঘণ্টায় কলকাতায় নতুন করে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ৬৪৫ জন। সবমিলিয়ে কলকাতায় এখনও পর্যন্ত ১৩ হাজার ৯৮৯ জন প্রাণঘাতী ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। করোনায় আক্রান্ত হয়ে এখনও পর্যন্ত কলকাতায় মৃত্যু হয়েছে ৫৯২ জনের, যার মধ্যে গত ২৪ ঘণ্টায় ১৬ জন প্রাণ হারিয়েছেন।
(চলন্ত গড় কী এবং কেন তা লেখার শেষে আলাদা করে বলা হয়েছে।)
কলকাতা লাগোয়া দুই ২৪ পরগনার পরিস্থিতিও যথেষ্ট উদ্বেগজনক। গত ২৪ ঘণ্টায় উত্তর ২৪ পরগনায় ৫৭৪ জন নতুন করে সংক্রমিত হয়েছেন। দক্ষিণ ২৪ পরগনায় নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন ১৬৪ জন। হাওড়া এবং হুগলিতে এই সংখ্যাটা যথাক্রমে ২১৩ ও ১৮১।
উত্তরবঙ্গের দার্জিলিঙে এ দিন ৪৩ জন নতুন করে সংক্রমিত হয়েছেন। উত্তর দিনাজপুরে আক্রান্ত হয়েছেন ৪৪ জন। তবে কালিম্পঙে এ দিন নতুন করে কেউ সংক্রমিত হননি।
তবে আক্রান্তের সংখ্যা যেমন বাড়ছে, তেমনই বেশি সংখ্যক রোগীর সুস্থ হয়ে ওঠাও খানিকটা স্বস্তিদায়ক। স্বাস্থ্য দফতরের বুলেটিন অনুযায়ী, এখনও পর্যন্ত এ রাজ্যে ২৬ হাজার ৪১৮ জন চিকিৎসা পেয়ে সুস্থ হয়ে উঠেছেন, যার মধ্যে গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়ে উঠেছেন ১৫৩৫ জন। তাতে সুস্থতার হার বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫৯.১ শতাংশ, রবিবার যা ছিল ৫৮.৫৬ শতাংশ।
আরও পড়ুন: দ্বিতীয় পর্যায়ে সফল অক্সফোর্ডের টিকা, আর এক ধাপ পরেই চূড়ান্ত অনুমতি?
(চলন্ত গড় বা মুভিং অ্যাভারেজ কী: একটি নির্দিষ্ট দিনে পাঁচ দিনের চলন্ত গড় হল— সেই দিনের সংখ্যা, তার আগের দু’দিনের সংখ্যা এবং তার পরের দু’দিনের সংখ্যার গড়। উদাহরণ হিসেবে—পশ্চিমবঙ্গে দৈনিক নতুন করোনা সংক্রমণের লেখচিত্রে ১৮ মে-র তথ্য দেখা যেতে পারে। সে দিনের মুভিং অ্যাভারেজ ছিল ১২৮। কিন্তু সে দিন নতুন আক্রান্তের প্রকৃত সংখ্যা ছিল ১৪৮। তার আগের দু’দিন ছিল ১১৫ এবং ১০১। পরের দুদিনের সংখ্যা ছিল ১৩৬ এবং ১৪২। ১৬ থেকে ২০ মে, এই পাঁচ দিনের গড় হল ১২৮, যা ১৮ মে-র চলন্ত গড়। ঠিক একই ভাবে ১৯ মে-র চলন্ত গড় হল ১৭ থেকে ২১ মে-র দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যার গড়। পরিসংখ্যানবিদ্যায় দীর্ঘমেয়াদি গতিপথ সহজ ভাবে বোঝার জন্য এবং স্বল্পমেয়াদি বড় বিচ্যুতি এড়াতে এই পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy