প্রতীকী ছবি।
চিকিৎসার গাফিলতির অভিযোগে কোঠারি মেডিক্যাল সেন্টারের সাত চিকিৎসকের বিরুদ্ধে চার্জশিট জমা পড়ল আলিপুর আদালতে। গত ৭ মে আলিপুর থানার তরফে অভিযুক্ত সাত চিকিৎসকের বিরুদ্ধে অবহেলার জেরে মৃত্যু, প্রতারণা, জালিয়াতি-সহ চিকিৎসা সংক্রান্ত নথি লোপাটের মতো একাধিক ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে আলিপুর আদালতে।
পুলিশ সূত্রের খবর, ২০১৪ সালের ৫ মার্চ সকালে কোঠারি মেডিক্যাল সেন্টারের স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ অজয় রায়ের কাছে ব্যারাকপুরের বাসিন্দা পেশায় শিশুচিকিৎসক অরুণিমা সেনের ‘ল্যাপারোস্কপিক ডাই টেস্ট’ (জরায়ুতে ভ্রুণ জন্মানোর ক্ষেত্রে ডিম্বনালীতে ডিম্বাণু ও শুক্রাণুর নিষেকপ্রক্রিয়া বাধা পেয়েছে কি না জানতে পেটের নাভিতে ফুটো করে ক্যামেরা ঢুকিয়ে পরীক্ষা করা) অস্ত্রোপচার হয়। পুলিশ জানিয়েছে, ওই দিন বেসরকারি হাসপাতালের ওটি-তে ঢোকানোর মিনিট কুড়ি পর জানানো হয় রোগী হৃদ্রোগে আক্রান্ত হন এবং পরে মারা যান। এই ঘটনায় দোষী চিকিৎসকদের শাস্তির দাবি জানিয়ে অরুণিমার স্বামী সোমরাজ সেন আলিুপুর থানায় অভিযোগ দায়ের করেন।
রোগীর মৃত্যুর তদন্তে গাফিলতির অভিযোগ রয়েছে কি না, তা জানতে আলিপুর থানার তরফে ময়নাতদন্তের রিপোর্ট-সহ চিকিৎসা সংক্রান্ত যাবতীয় নথি রাজ্য মেডিক্যাল কাউন্সিল ও স্বাস্থ্য ভবনে পাঠানো হয়। কিন্তু তারা অরুণিমার মৃত্যুতে চিকিৎসকের কোনও গাফিলতি নেই বলে আলিপুর থানাকে জানায়। এই রিপোর্ট জানার পর মৃতার স্বামী নিরপেক্ষ ভাবে বিশেষজ্ঞদের দিয়ে পুনরায় বিবেচনা করানোর আর্জি জানিয়ে ফের আলিপুর আদালতে মামলা দায়ের করেন। পুলিশ সূত্রের খবর, আলিপুর আদালত বাঁকুড়া মেডিক্যাল কলেজের কাছে মতামত জানতে চাইলে তারা জানিয়ে দেয়, অরুণিমাদেবীর মৃত্যুর পিছনে চিকিৎসকদের গাফিলতি রয়েছে। তদন্তে আরও জানা গিয়েছে, অরুণিমার অস্ত্রোপচারের সময় নির্মলা জয়সওয়াল নামে এক ‘ভুয়ো’ চিকিৎসকও উপস্থিত ছিলেন। অভিযোগ, অস্ত্রোপচারের সময়কার বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্যও আদালতে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জমা দেননি বলে জানিয়েছেন অভিযোগকারীর আইনজীবী শিবশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়।
গত ৭ মে আলিপুর আদালতের মুখ্য বিচারবিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেটের এজলাসে কোঠারি মেডিক্যাল সেন্টারের সুপার রাজেশ চট্টোপাধ্যায়-সহ চিকিৎসক সমীর রায়, জ্যোৎস্না বসু, নির্মলা জয়সওয়াল, স্নেহাপ্রিয়া চৌধুরী, চাঁদরতন দামানি এবং সত্যেন্দ্র সহায়ের বিরুদ্ধে চার্জশিট জমা পড়েছে। মৃতের বাবা পেশায় চিকিৎসক অর্ধেন্দুনারায়ণ ঘোষের অভিযোগ, তাঁর মেয়ে বিয়ের আগে থেকেই পেটে ব্যথার সমস্যা নিয়ে চিকিৎসক সমীর রায়কে দেখাতেন। এ ক্ষেত্রে ‘ল্যাপারোস্কপিক ডাই টেস্ট’ করার কোনও প্রয়োজনই ছিল না। দোষী চিকিৎসকদের কঠোর শাস্তির দাবি জানিয়েছেন তিনি।
অভিযুক্ত চিকিৎসক সমীর রায় বলেন, ‘‘আমি কোনও ভুল করিনি। আমি আইনি পথেই লড়াই চালিয়ে যাব।’’ কোঠারির মেডিক্যাল সেন্টারের সুপার রাজেশ চট্টোপাধ্যায় কোনও মন্তব্য করতে চাননি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy