প্রায় ছ’বছরের সারদা মামলায় তাঁকে বারবার জেরা করা হয়েছে। সারদা গোষ্ঠীর তছরুপ কাণ্ডে অন্যতম অভিযুক্ত দেবযানী মুখোপাধ্যায়কে হাজতে গিয়ে আবার জেরা করার প্রয়োজন হচ্ছে কেন, তার যথাযথ কারণ লিখিত ভাবে জানানোর জন্য সিবিআই-কে নির্দেশ দিলেন বারাসতে সিবিআইয়ের বিশেষ আদালতের বিচারক সোমনাথ চক্রবর্তী।
তদন্তের প্রয়োজনে দেবযানীকে জেলে গিয়ে জেরা করার অনুমতি চেয়ে সম্প্রতি ওই আদালতে আবেদন জানিয়েছিল সিবিআই। দেবযানীর আইনজীবী অয়ন চক্রবর্তী মঙ্গলবার আদালতে বলেন, ‘‘তদন্ত চলছে প্রায় ছ’বছর ধরে। মামলায় একাধিক চার্জশিট পেশ করা হয়েছে। আবার কেন দেবযানীকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে, সেটা বোঝা যাচ্ছে না।’’
দেবযানীকে নতুন করে জেরা প্রসঙ্গে সিবিআইয়ের আইনজীবীকে বিচারক এ দিন বলেন, ‘‘আদালত ডাকঘর নয়। আপনি একটি চিঠি দেবেন। আর আদালত তা পৌঁছে দেবে। জেরা করার কারণ আদালতকে স্পষ্ট করে জানাতে হবে।’’ সিবিআইয়ের আইনজীবী
চন্দনকুমার সিংহ বলেন, ‘‘জেরার কারণ খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তা প্রকাশ্যে আনা সম্ভব নয়।’’ তখন বিচারক নির্দেশ বলেন, ‘‘আবার জেরা করার কারণ কী, সেটা মামলার তদন্তকারী অফিসার মুখবন্ধ খামে আমার কাছে জমা দেবেন। আমি তা দেখে সন্তুষ্ট হলে তবেই জেরার
অনুমতি দেওয়া হবে।’’
সারদা-কাণ্ডে ২০১৩ সালের এপ্রিলে কাশ্মীরের সোনমার্গ থেকে ওই গোষ্ঠীর কর্ণধার সুদীপ্ত সেনের সঙ্গে দেবযানীকে গ্রেফতার করেছিল রাজ্য পুলিশ। সিবিআই সূত্রের খবর, সারদার বিভিন্ন তথ্যপ্রমাণ লোপাট করা হয়েছে বলে বয়ান দিয়েছেন দেবযানী। তথ্যপ্রমাণ লোপাটের অভিযোগ উঠেছে কলকাতার প্রাক্তন পুলিশ কমিশনার রাজীব কুমারের বিরুদ্ধে। সম্প্রতি শিলংয়ে রাজীবকে এই বিষয়ে জেরা করেছে সিবিআই। সেখানে রাজীব যা দাবি করেছেন, তার ভিত্তিতেই নতুন করে দেবযানীকে জেরা করতে চায় সিবিআই।
এ দিনই ওই আদালতে কলকাতার প্রাক্তন পুলিশ কমিশনার রাজীব কুমারের নাম সারদার মূল মামলায় অন্তর্ভুক্ত করার জন্য আবেদন জানান ওই মামলারই অন্যতম অভিযুক্ত, প্রাক্তন তৃণমূল সাংসদ কুণাল ঘোষ। তাঁর যুক্তি, রাজীবের নামে দীর্ঘদিন ধরে সারদার নথিপত্র নষ্টের অভিযোগ আনছে সিবিআই।
অথচ বারাসতে সারদার মূল মামলা (রেগুলার কেস নম্বর-৪) চললেও কেস রেকর্ডে রাজীবের নাম নেই। কুণাল বলেন, ‘‘সুপ্রিম কোর্টে একাধিক হলফনামা জমা দিয়ে রাজীবের নামে সারদার নথি নষ্ট করার অভিযোগ এনেছে সিবিআই। তা হলে মূল মামলায় রাজীবের নাম
থাকবে না কেন?’’
এ দিন কুণালের তরফে দু’টি হলফনামার প্রতিলিপি জমা দেওয়া হয়েছে ওই আদালতে। সারদার মূল মামলার নিরিখে রাজীবের বিরুদ্ধে সিবিআই কী ধরনের ব্যবস্থা নিচ্ছে, আদালতে এ দিন সেটাও জানতে চাওয়া হয়। বিচারক আবেদন গ্রহণ করে জানান, এই নিয়ে সিবিআইয়ের কাছে রিপোর্ট তলব করা হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy