প্রতীকী ছবি।
সতীদাহ প্রথা রদ করতে উদ্যোগী হয়েছিলেন রামমোহন। তখন তো সতীদাহ প্রথা ছিল ‘ঐতিহ্য’! কিন্তু রামমোহন সে-সব ভাবেননি। প্রথাকে প্রশ্ন করেছিলেন। এই বৃত্তান্ত শুনিয়ে প্রশ্ন করার অধিকারের পক্ষে সওয়াল করলেন ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব সায়েন্সের প্রাক্তন অধিকর্তা পদ্মনাভন বলরাম। বললেন, ‘‘যুক্তিবাদী হতে হবে। চলতি যা কিছু, তাকে প্রশ্ন করতে হবে। প্রশ্ন না-করলে, বিতর্ক না-হলে নতুন কিছু উঠে আসে না।’’
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে এক সভায় ভাষণ দিতে এসে জীববিজ্ঞানী বলরাম বৃহস্পতিবার জানান, মুক্ত চিন্তার পরিবেশ না-থাকলে কোনও দেশ এগোয় না, বিজ্ঞান চর্চাও এগোয় না। জওহরলাল নেহরু ‘সায়েন্টিফিক টেম্পার’-এর কথা বলতেন। বিজ্ঞানকে সাধারণ মানুষের কাছে নিয়ে যাওয়ার কথা বলতেন অটলবিহারী বাজপেয়ী। বর্তমানে যে পরিস্থিতি বদলে যাচ্ছে, তা উদাহরণ দিয়ে বোঝান বলরাম। উল্লেখ করেন বিজেপি নেতা-মন্ত্রীদের কিছু বক্তব্যের (জ্যোতিষশাস্ত্র বিজ্ঞানের উপরে, গরু অক্সিজেন দেয়, মানুষের পূর্বপুরুষ বানর ছিল না)। বলরামের আক্ষেপ, যাঁরা এগুলো বলছেন, তাঁরা আজকের দিনেও এগুলো বিশ্বাস করেন! আর এগুলো ছড়িয়েও যাচ্ছে। ‘‘করোনাভাইরাসের সংক্রমণ কোনও নাগরিকত্ব দেখে হয় না,’’ কটাক্ষের সুরে বলেন বিজ্ঞানী বলরাম। সুরটা লঘু হলেও সিএএ-এনআরসি নিয়ে বিদ্রুপ এতে স্পষ্ট বলে শ্রোতাদের একাংশের অভিমত।
শিক্ষা ক্ষেত্রে মতপ্রকাশের অধিকার খর্ব করার যে-চেষ্টা চলছে, বিজ্ঞানমনস্কতার বিরোধী যে-সব ভাবনাচিন্তা ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে— তার বিরুদ্ধে ‘জয়েন্ট প্ল্যাটফর্ম অব অ্যাকাডেমিশিয়ান্স’ বা জেপিএ-র উদ্যোগে এ দিনের সভার আয়োজন করা হয়েছিল। দিল্লির ইনস্টিটিউট ফর স্টাডিজ় ইন ইন্ডাস্ট্রিয়াল ডেভেলপমেন্টের শিক্ষক দীনেশ আবরল জেএনইউ ও জামিয়া মিলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র-নিগ্রহের কথা তুলে বলেন, ‘‘উচ্চশিক্ষার ক্যাম্পাসে বিতর্ক হবে না তো কি হবে সংসদে? যেখানে স্বৈরাচারী শাসক রয়েছে?’’ শিক্ষকদের সরকারের নিয়ন্ত্রণে আনার প্রবণতার কথা তোলেন যাদবপুরের এমিরেটাস প্রফেসর সুকান্ত চৌধুরী।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy