Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

ছাত্রীকে কুপিয়ে আত্মঘাতী যুবক

পরিবার সূত্রের দাবি, ‘সম্ভবত’ ‘সোশ্যাল মিডিয়া’র মাধ্যমে পরিচয় হয় অমিত ও মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী মিতার।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
দুর্গাপুর শেষ আপডেট: ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০৪:০৩
Share: Save:

বিয়ের জন্য চাপ দিলেও রাজি হয়নি নাবালিকা ‘প্রেমিকা’র পরিবার। বাড়িতে ঢুকে কাস্তের কোপে ওই তরুণী মিতা কুণ্ডুকে (১৬) খুন করে, একই অস্ত্র দিয়ে নিজের পেটে ও গলায় কোপ মেরে আত্মঘাতী হয়েছে অমিত শীট (২৪) নামে এক যুবক। মঙ্গলবার দুর্গাপুরের নিউটাউনশিপ থানার গণতন্ত্র কলোনিতে তেমনই ঘটেছে বলে দাবি পুলিশের। অমিতের বাড়ি পূর্ব মেদিনীপুরের নন্দীগ্রাম থানার ধান্যখোলায়।

আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের ডিসি (পূর্ব) অভিষেক গুপ্তের কথায়, ‘‘প্রাথমিক ভাবে মনে হয়েছে, যুবকটি বিয়ের জন্য চাপ দিলেও কিশোরীর পরিবার রাজি ছিল না। সম্ভবত সেই আক্রোশে মেয়েটিকে খুন করে ছেলেটি আত্মঘাতী হয়েছে। তদন্তে সব সম্ভাবনাই দেখা হবে।’’

পরিবার সূত্রের দাবি, ‘সম্ভবত’ ‘সোশ্যাল মিডিয়া’র মাধ্যমে পরিচয় হয় অমিত ও মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী মিতার। আলাপ গড়ায় ফোনেও। মিতার বাবা কৃষ্ণ কুণ্ডু পেশায় কাঠমিস্ত্রি। মা মমতাদেবী ‘আয়া’র কাজ করেন। দু’কামরার টালির বাড়ির একটি ঘরে মিতাদের পরিবার এবং আর একটি ঘরে কৃষ্ণবাবুর দাদা সুভাষ কুণ্ডু থাকেন। পুলিশ জেনেছে, এ দিন দুপুর ১টা নাগাদ অমিতকে পিঠে ব্যাগ নিয়ে মোবাইলে কথা বলতে বলতে মিতাদের বাড়িতে ঢুকতে দেখেন পড়শিরা। সে সময় রুমালে ওই যুবকের মুখ ঢাকা ছিল বলে পুলিশকে জানিয়েছেন তাঁরা। তখন মিতার বাবা, মা বা জ্যাঠা বাড়িতে ছিলেন না।

কিছু ক্ষণের মধ্যে বাড়ি ফেরেন সুভাষবাবু। তাঁর চোখে পড়ে, মিতাদের ঘরের বন্ধ দরজার বাইরে রক্তের স্রোত বইছে। তিনি ও পড়শিরা জানলা দিয়ে দেখেন, ঘরে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছে মিতা। রক্তে ভেসে যাচ্ছে ঘর। খবর পেয়ে দরজা ভেঙে পুলিশ মিতা ও অমিতকে উদ্ধার করে। দুর্গাপুর হাসপাতালের ডাক্তারেরা মিতাকে মৃত ঘোষণা করেন। কিছু ক্ষণ পরে সেখানে মারা যায় অমিতও।

কৃষ্ণবাবু, মমতাদেবীর দাবি, ‘‘মেয়েকে ফোন করতে নিষেধ করা হলেও অমিত তা শোনেনি। এক দিন মা-কে নিয়ে আমাদের বাড়িতে এসে মিতাকে বিয়ের প্রস্তাব দিয়েছিল। ছেলেটা কাজ করত না। ওর মা-কে বলেছিলাম, ‘পরে ভেবে দেখব’।

মেয়ে এখন পড়ছে। পড়াশোনা চলুক। তার পরেও অমিত বিরক্ত করত মেয়েকে। ভাবতে পারিনি, এমন ঘটাবে!’’ যদিও ধান্যখোলার মধ্যপাড়ার বাসিন্দা অমিতের পরিবারের দাবি, সে নানা এলাকায় শ্রমিকের কাজ করত।

পড়শিরা অবশ্য খুনের কারণ নিয়ে ধন্দে। পুলিশের কাছে তাঁদের কয়েকজন জানিয়েছেন, অমিত এ দিন দুপুরে যখন ঘরে ঢোকে, তখন বাধা দেয়নি মিতা। এমনকি, অমিত ঘরে থাকাকালীনও ওই ছাত্রী এক পড়শির সঙ্গে কথা বলেছিল।

তদন্তকারীদের বক্তব্য, ‘‘এমনও হতে পারে, দু’জনে মিলে আত্মঘাতী হওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। তদন্তে সবই বোঝা যাবে।’’ রাতে অমিতের মা-কে থানায় ডাকে নন্দীগ্রাম থানার পুলিশ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Crime Murder Suicide
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE