Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

আর টুইটার না, এ বার লাইভ টিভি চ্যানেল লঞ্চ করব

দেশ জোড়া বিতর্কের মাঝে আনন্দ প্লাসের কাছে মুখ খুললেন অভিজিৎ দেশ জোড়া বিতর্কের মাঝে আনন্দ প্লাসের কাছে মুখ খুললেন অভিজিৎ

অভিজিৎ

অভিজিৎ

অরিজিৎ চক্রবর্তী
শেষ আপডেট: ০৬ জুন ২০১৭ ০০:০০
Share: Save:

প্র: আর টুইটার অ্যাকাউন্ট খুলবেন?

উ: পাগল! টুইটারের ম্যানেজমেন্ট তো বসে আছে, আমার অ্যাকাউন্ট ডিলিট করতে। (হেসে) ওরা একটা ফর্ম আনবে। যেখানে লেখা থাকবে, দেশকে গালাগালি করলেও সহ্য করতে হবে...আর নীচে ‘আই এগ্রি’তে ক্লিক করতে হবে। শুনেছি, আমার বিরুদ্ধে টুইটারে পিটিশন ফাইল করতে দশ হাজার টাকা দিয়ে লোক ভাড়া করা হচ্ছে।

প্র: খারাপ কথা তো লিখেছিলেন...

উ: খারাপ কথা কোথায় লিখলাম! এক অ্যান্টিন্যাশনালিস্টকে বলেছি, ‘বেশরম বুড়িয়া’। এতে যদি কারও গায়ে লাগে, তা হলে আর কী করব? যারা মেজর গগৈয়ের বিরুদ্ধে কথা বলবে, আমাদের অলিম্পিয়ানদের ছোট করবে, তাদের মাথায় তুলে নাচব!

প্র: ইন্ডাস্ট্রি থেকে সোনু নিগম ছাড়া তো কেউ আপনার পক্ষ নিল না?

উ: সোনু তো টুইটারের গালে থাপ্পড় মারল। আরে ধুর, টুইটার-ফুইটার দিয়ে কিচ্ছু হবে না। আমি নিজে একটা লাইভ টিভি চ্যানেল লঞ্চ করছি। দেখি তখন কে আটকায়? ইন্ডাস্ট্রি নিয়ে আর কী বলব! অরিজিৎ সিংহকে কী অপমানটাই না করা হল। যদি গান গাওয়াতে না চাস, তো প্রথমেই বলে দে। রেকর্ড করিয়ে বাতিল করার মানে কী! অরিজিতের রিপ্লেসমেন্ট কি না, রাহাত ফতে আলি! শাহরুখ খান স্টার হয়েছে কিন্তু আমার গান দিয়ে। আগে অভিনেতা ছিল, অভিজিতের গান দিয়ে স্টার হল। ওরা তো কেউ টুইটারকে জনপ্রিয় করতে পারেনি। সেই বুস্টটাও আমারই দেওয়া।

প্র: অনেকে বলেন, এ সব করেন কারণ আপনি প্রভাবশালী।

উ: প্রভাব কার থাকে? লোকে যাকে ভালবাসে, তার তো! আমার ব্যবসা আছে। চার্টার্ড অ্যাকাউন্টেন্সি ফার্ম আছে। দুর্গাপুজো করি, কারও থেকে এক পয়সা নিই না। তবু মধ্যবিত্ত জীবন কাটাই। হ্যাঁ, মুম্বইয়ে আমার একটা দাদাগিরি আছে। পাকিস্তানি আর্টিস্টরা ভারতে প্রোগ্রাম করার আগে, ফোন করে বলে, ‘দাদা, তুমহারা আশীর্বাদ চাহিয়ে’। আমি বলি, কী, ইন্ডিয়াতে প্রোগ্রাম আছে (হাসি)! এই দাদাগিরিটা কিন্তু মস্তানি না। এটা প্রতিবাদের ভাষা।

আরও পড়ুন: ‘খোলসা করে বলি, আমি মনের মানুষ পেয়ে গিয়েছি’

প্র: তা কী প্রতিবাদ করতে চাইছেন?

উ: আমি কমিউনাল নই, আমি ন্যাশনালিস্ট। দেশের দিকে আঙুল তুললে, আমি আঙুল ভেঙে দেব। আমি ‘বাঙালিবাবু’ও নই। সুভাষচন্দ্র বসুর মতো বাঙালি। এক গালে চড়া খেলে, উল্টে চারটে চড় মারব। জেএনইউ তো বন্ধ করে দেওয়া উচিত। করদাতাদের টাকায় পড়াশোনা করে দেশের বিরুদ্ধে কথা! পশ্চিমবঙ্গেরও একই হাল। বাঙালিরাই বাঙালিদের মার খাওয়াচ্ছে। বিসর্জনের দিন পাল্টে দিচ্ছে। সহ্য করা যায়! তেমন হলে, কলকাতায় দুর্গাপুজো করব। জায়গা বেছে বেছে করব। দেখি কে আটকায়!

প্র: রাজনীতিতে নামছেন নাকি?

উ: রাজনীতি বলতে, পার্টিতে যোগ দিচ্ছি কি না জিজ্ঞেস করছেন তো? না। যে দলেই যাব, তারা আমার মুখে তালা লাগিয়ে দেবে। কমপ্রোমাইজ করব না। আর এক দলে গেলে, অন্য দলের লোকেদের ভালবাসা হারাব। সেটা পারব না। আমার সঙ্গে সব দলের ভাল সম্পর্ক। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও আমাকে ভালবাসেন। আমার অসুবিধে হয় বাঙালিদের পতন দেখে।

প্র: পতন কেন বলছেন?

উ: কলকাতায় দেখি, বাঙালি মেয়েরা ডিস্কোতে যাচ্ছে পঞ্জাবি-মারোয়াড়ি ছেলেদের সঙ্গে। কোথায় নামছি আমরা! সিনেমার ক্ষেত্রেও তাই। বড় প্রোডাকশন হাউজ, বড় সিনেমা হল, সব অবাঙালিদের। সাউথে রজনীকান্ত এখনও লুঙ্গি পরে অভিনয় করেন। তাই তো ওরা বক্স অফিসে কোটি কোটি টাকা কামায়। আমরা কাঁদুনি গাই। নিজের ঐতিহ্য ভুলে গেলে এমনই হবে। কোনও বাঙালি অভিনেতা ধুতি-পা়ঞ্জাবি পরে অভিনয় করতে পারবে? আগে বাঙালিদের ইন্টারেস্ট নিয়ে বলতে হবে। তারপর সব কিছু।

প্র: গানও কি তাই ব্যাকসিটে?

উ: আমি সতেরো বছর রুল করেছি ভাই। পুরনো গায়কদের উচিত একটা সময় পর নতুনদের জায়গা করে দেওয়া। সেটাই করেছি। তবু দেখলাম, এখনও আমার গান রুল করছে (হেসে)। আগে, ক্যাসেটের দোকানে উদিত (নারায়ণ), (কুমার) শানু বা আমার আলাদা র‌্যাক থাকত। এখন কোনও গায়কের আছে? এদের দৌড় দেশের মধ্যে, তাও এক থেকে দেড় বছর। দিনের শেষে ও সব ‘লুঙ্গি ডান্স’ কেউ শুনবে না। আমার গান দিয়ে তাজমহল বানিয়ে নিয়েছি। সেই রয়্যালটি থেকেই চলে যাবে। সামনের বছরও শোয়ের জন্য আমার একটা দিন ফাঁকা নেই। এই তো এখন ভিয়েনায় আছি। এর পর ওয়েস্ট ইন্ডিজ। অভিজিৎ এমনই।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE