দেবাদৃতা বসু।
সন্ধেবেলা টিভি খুললেই যার কিকে কুপোকাত বাড়ির মা-কাকিমারা, সেই জয়ী অর্থাৎ দেবাদৃতা বসু ধারাবাহিকে অভিনয়ের আগে কখনও ফুটবল ছুঁয়েও দেখেননি! ‘‘আমার এক দাদু মোহনবাগানের খেলোয়াড় ছিলেন। বাড়িতে সকলে মিলে খেলা দেখতাম। তাই ফুটবলের সঙ্গে যোগাযোগ ছিলই। অভিনয় করতে গিয়ে খেলাটা শিখেছি। ফুটবলে কিক দেওয়া, সাইড কাটানো প্রায় সবই এখন জানি,’’ বলছিলেন দেবাদৃতা।
বছর আটেক বয়স থেকেই থিয়েটারে অভিনয় করছেন তিনি। ‘‘আমার বাবা থিয়েটার করতেন ‘হ য ব র ল’ নাট্যগোষ্ঠীতে। আমারও সেখানেই হাতেখড়ি। ছোটবেলায় নাচও শিখেছি। তবে কখনও ভাবিনি যে, টেলিভিশনে অভিনয় করব। মা-বাবার ইচ্ছেতেই অডিশন দিতে আসি আর এই সুযোগটা পেয়ে যাই,’’ বললেন দেবাদৃতা।
ধারাবাহিকে অভিনয় করায় ব্যক্তিগত জীবনে বিশেষ সময় পান না। কিন্তু সময় পেলেই বইপত্র নিয়ে বসে পড়েন। সবে ক্লাস ইলেভেনের পরীক্ষা দিয়েছেন। দেবাদৃতার কথায়, ‘‘আমার বাড়ি কল্যাণীতে। সেখানেই সতীশচন্দ্র মেমোরিয়াল স্কুলের ছাত্রী আমি। নিয়মিত স্কুল করি না। স্কুল থেকে অনুমতি নিয়ে রেখেছি। কিন্তু পরীক্ষা দিতে যেতে হয়। পরীক্ষা চলাকালীন শুটিং পড়ে গেলে একটু সমস্যা হয়। তবে আমার সিরিয়ালের পরিচালক, সহ-অভিনেতারা ভীষণ ভাল। পরীক্ষা থাকলে আমাকে আগে ছেড়ে দেন। না হলে মেকআপ রুমে বসেই পড়াশোনা করি।’’
বাড়িতে আছে তাঁর সাত বছরের ছোট বোন। ‘‘আগে সন্ধে হলেই রিমোট নিয়ে যুদ্ধ লেগে যেত বোনের সঙ্গে,’’ হাসতে-হাসতে বললেন দেবাদৃতা। জীবনে অনেক কিছু যোগ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বাদ পড়েছেও অনেক। নাচ ছাড়তে হয়েছে, পরিবারের সঙ্গেও সময় কাটাতে পারেন না। দেবাদৃতার ধারাবাহিকের পরিবারই যেন নিজের পরিবার হয়ে উঠেছে!
কথায় কথায় উঠে এল রিভুর নামও। দিব্যজ্যোতি দত্তর সঙ্গে বন্ধুত্ব জোরালো, স্বীকার করলেন দেবাদৃতা। তাই বলে সেটা প্রেম নয়, তা-ও জানালেন পরিষ্কার। সময়ের অভাবে প্রেমটা করে উঠতে পারছেন না এখন। এক দিকে প়ড়াশোনা, অন্য দিকে সিরিয়াল। ‘‘নাটক এখন করা হয় না।’’ গলায় আক্ষেপ দেবাদৃতার, ‘‘নাটক তো পুরোটা লাইভ। যা অভিনয় করছি, ডায়লগ বলছি, সঙ্গে সঙ্গেই দর্শকের রিঅ্যাকশন পেয়ে যাচ্ছি। আর সিরিয়ালে ফ্রেমটা গুরুত্বপূর্ণ। এখন সিরিয়ালে অভিনয় করতেও ভাল লাগছে।’’
এত কম বয়সে বিবাহিত মহিলার চরিত্রে অভিনয় করতে অসুবিধে হয়নি? দেবাদৃতার উত্তর, ‘‘একেবারেই না। আমার চেহারাটা যেহেতু একটু ম্যাচিয়র্ড, তাই এই ধরনের চরিত্রে আমাকে মানিয়ে গিয়েছে।’’ বাস্তব জীবন থেকে বেরিয়ে নানা ধরনের চরিত্র ফুটিয়ে তোলাই এখন তাঁর কাছে চ্যালেঞ্জ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy