Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

উড়নচণ্ডীরা ছুটল, চিত্রনাট্য পিছলে পড়ল

মেয়ে, বৌ, মায়েদের হতেই হয় উড়নচণ্ডী।

উড়নচণ্ডী ছবির একটি দৃশ্য।

উড়নচণ্ডী ছবির একটি দৃশ্য।

মধুমন্তী পৈত চৌধুরী
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৬ অগস্ট ২০১৮ ০০:২৮
Share: Save:

উড়নচণ্ডী

পরিচালনা: অভিষেক সাহা

অভিনয়: সুদীপ্তা, চিত্রা, অমর্ত্য, রাজনন্দিনী

৫.৫/১০

বাবা, স্বামী, ছেলে— নারীর ভিন্ন বয়সের তিন সঙ্গী। তবে সব পুরুষ তো সঙ্গী হয়ে ওঠে না। পুরুষের সঙ্গ দুর্বিষহ হলে ঘরের আগল ভেঙে পথে নামতেই হয়। মেয়ে, বৌ, মায়েদের হতেই হয় উড়নচণ্ডী।

অভিষেক সাহার প্রথম ছবির ট্রেলারে চারটি মুখ্য চরিত্রের আভাস পাওয়া গিয়েছিল। প্রথমার্ধে আলাপ হয় তিন জনের সঙ্গে। বিন্দি (সুদীপ্তা), মিনু (রাজনন্দিনী), ছোটু (অমর্ত্য)। মিনু ছাড়া বাকি দু’জনের সম্পর্কে প্রথমার্ধে বিশেষ কিছু জানা যায় না। সেটা ছবির প্রথম বাধা। গতিও মন্থর। দ্বিতীয়ার্ধে যোগ দেয় সাবিত্রী (চিত্রা)। বাড়তে থাকে ঘটনাপ্রবাহ। গতি পায় ছবি। তার পর চেনা ছকেই যবনিকা পতন।

চেনাজানা গল্পকেই রোড মুভির মোড়কে নতুন ট্রিটমেন্ট দিতে চেয়েছেন পরিচালক। তার জন্য অভিনন্দন। নারী অত্যাচারের পাশাপাশি অশিক্ষা, শহর ও প্রান্তিকের টানাপড়েন, মেয়েদের স্বনির্ভরতার প্রসঙ্গগুলিও ছুঁয়ে গিয়েছেন তিনি। চিত্রনাট্যের আরও একটু সাহায্য পেলে যাত্রাপথ মসৃণ হতো। তিনটি প্রধান মেয়ে চরিত্রের সংলাপ যেন তাদের গতিবিধির খেসারত। স্বামী-ছেলে-প্রেমিকের গণ্ডি থেকে বেরিয়ে তাদের মুখে যদি একটু তাদের কথাই শোনা যেত, ছবিটা শক্ত জমি পেত।

বিন্দির চরিত্রে সুদীপ্তা চক্রবর্তী অসামান্য। মদের ঘোরেও তাঁর শরীরী হিল্লোলে পরিমিতি বোধ বুঝিয়ে দেয় কেন এই চরিত্র তাঁর জন্যই লেখা। খিটখিটে বৃদ্ধার চরিত্রে চিত্রা সেন যথাযথ। অমর্ত্য ও রাজনন্দিনীর মধ্যে এগিয়ে থাকবেন অমর্ত্য। ছোটুর চরিত্রে তিনি সাবলীল। গ্রাম্য মেয়ের চালচলন রপ্ত করতে না পারলেও চেষ্টা করেছেন রাজনন্দিনী। তবে গ্রাম্য বোঝাতে বাচনভঙ্গিতে পরিবর্তন না আনলেও ক্ষতি ছিল না।

দেবজ্যোতি মিশ্রের আবহসঙ্গীত তাত্পর্যপূর্ণ। সৌমিক হালদারের ক্যামেরায় পুরুলিয়ার ধু ধু প্রান্তর, পলাশ-শিমুলের জড়াজড়ি, ছৌ নাচ দেখতে বেশ লাগে। ছবির কয়েকটা ফ্রেম নজর কাড়ে। লরির গায়ে টাঙানো মিনুর লাল বেনারসি, লরির আয়নায় ছোটুর অভিসার...

মদ্যপ স্বামীর হাত থেকে বাঁচতে ঠিকানাহীন পথে নেমেছিল বিন্দি। মিনু ও সাবিত্রীর গন্তব্য প্রথমে স্থির ছিল। সেখানে পৌঁছেও ফেরারি মন ঠিকানা না পেলে পথই হয় পরম বন্ধু। ছবির শেষে মিনু, ছোটু, বিন্দি, সাবিত্রী নয়া গন্তব্য পেল ঠিকই। তবে শুরুতেই ‘সাইয়োঁ রে’ গানের মধ্য দিয়ে যে তার বেঁধে দেওয়া হয়েছিল, কোথাও কোথাও যেন সেই লয় থেকে ছবিটি সরে গেল।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Uronchondi উড়নচণ্ডী
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE