প্রিয়ঙ্কা। ছবি: তথাগত ঘোষ।
তিনি ক্ষুব্ধ। ক্ষত-বিক্ষত। তাই খসে পড়েছে সৌজন্যের আবরণ। প্রিয়ঙ্কা ফাঁস করলেন তাঁদের একদা দাম্পত্যের কিছু নিদারুণ সত্যি।
প্র: কী কারণে কনটেস্ট করার সিদ্ধান্ত নিলেন?
উ: প্রথম থেকেই আমরা শান্তিপূর্ণ ভাবে বিচ্ছেদ করব ভেবেছিলাম। সেটা সহজের জন্য তো বটেই, আমাদের জন্যও ভাল হবে। দু’বছরের উপর আমি সহজকে নিয়ে আলাদা আছি। যেখানে রাহুল মাঝেমধ্যে ঘুরতে আসা ও খেলা ছাড়া কিচ্ছু করেনি। যখনই কথা হয়েছে, ‘হ্যাঁ, ঠিক আছে’ বলে নানা ভাবে এড়িয়ে গিয়েছে। আসলে কোনও দিনই আমাদের সম্পর্ক স্মুদ ছিল না। রাহুল নানা ভাবে আমাকে শারীরিক, মানসিক নির্যাতন করেছে। কাজের রেস্ট্রিকশন ছিল বহু রকম, যা আমি আগে কোনও দিন বলিনি। সেপারেশনের সময়ে কয়েক জন অভিনেত্রীকে নিয়ে আমাকে মিডিয়া অনেক প্রশ্ন করেছে। কিন্তু সেপারেশনের কারণ সেই অভিনেত্রীরা ছিলেন না। বিচ্ছেদের পরে আমি ওই নামগুলো জেনেছিলাম। আমাদের ডিভোর্সের সিদ্ধান্ত সম্পূর্ণ অন্য কারণে। বহু অ্যাফেয়ার ছাড়াও নানা ভাবে রাহুল আমাকে ঠকিয়েছে। ওর সঙ্গে আমার কথা হয়, আমি এ নিয়ে মুখ খুলব না। সেই সঙ্গে এটাও কথা ছিল, সহজের সমান দায়িত্ব দু’জনেই নেব।
প্র: রাহুল আপনাকে ফিজ়িক্যালি অ্যাবিউস করেছেন! আপনি তো তা নিয়ে কখনও মুখ খোলেননি!
উ: বহু বার গায়ে হাত তুলেছে। ওর পছন্দ মতো কোনও কিছু না হলে, মানসিক নির্যাতন করেছে! দেওয়ালে নিজের মাথা ঠুকেছে। নিজের মাথাতেও গরম চা ঢেলে দিয়েছে। আমি চাইনি এই মানসিক অত্যাচারের কথা সামনে আসুক। আজ আমার আর উপায় নেই।
প্র: একটা সময়ে যে বড় প্রজেক্টগুলো ছেড়েছিলেন, সেটা শুধুই রাহুলের আপত্তির কারণে?
উ: হ্যাঁ। ও চায়নি, আমি রাজদা (চক্রবর্তী) বা অন্য নামী পরিচালকের সঙ্গে কাজ করি।
প্র: আপনাদের তিক্ততার পিছনে আরও কিছু কারণ শোনা যাচ্ছে...
উ: এ বছর যখন সহজকে বড় স্কুলে ভর্তি করার কথা হয়, তখন একটা বড় অঙ্কের টাকার প্রয়োজন ছিল। রাহুলকে বলায়, ও অর্ধেকটা দিতে রাজি হয়। কিন্তু শেষ মুহূর্তে বলে, ‘আমার অসুবিধে আছে। তুমি দিয়ে দাও। আমি পরে দেব।’ কিন্তু সেটা এতটাও বড় অঙ্ক ছিল না, যেটা ওর পক্ষে অর্ধেক দেওয়া অসুবিধের। না পারার কারণ ও নিজেই বলেছে। ফ্ল্যাট, নতুন বিএমডব্লু-র লোনের কারণে রাহুলের এতটাই খরচ হচ্ছে, সঞ্চয় করতে পারছে না। এটা ভাবতে আমার খুব অবাক লাগে, এত টাকা ও রোজগার করছে, অথচ তার মধ্যে সহজকে নিয়ে ভাবনা নেই! তার পরও আমি ওকে বলি যে, আমাদের কথা বলা দরকার। কিন্তু ও মিটিং এড়িয়ে যায়। শেষে ওর সঙ্গে আমার ফোনেই কথা হয়। ওকে বলি, ‘সহজের জন্য মাসে এই পরিমাণ খরচ হয়। তোমার সহযোগিতা চাই।’ সেখানে ও আমাকে বলে, ‘আমার সহজ চাই না। আমি টাকা দিতে পারব না।’ এ কথার রেকর্ডিংও আমার কাছে আছে। তখনই মিউচুয়ালের পথ থেকে সরে আসার সিদ্ধান্ত নিই।
প্র: বেছে বেছে কাজ করার কারণে কি আর্থিক কোনও সমস্যা হচ্ছে?
উ: মেপে কাজ করার কারণে আয় কম হবে। যেটুকু রোজগার হবে, সেটা সহজ, আমার নিজের এবং অন্যান্য খরচ মিটিয়ে, ঈশ্বর না করুন কোনও মেডিক্যাল ইমার্জেন্সি হয়ে গেলে, জানি না, কী ভাবে সামলাব। বলতে গেলে আমার কোনও সঞ্চয়ই নেই। কিন্তু কনটেস্ট করার পরও ওর সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করেছি। ও দেখা করতে চায়নি। এ সবের মাঝে সহজের সঙ্গেও যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়। শেষ বার যখন এসেছিল, ‘মা তোকে ভালবাসে না, হোমওয়র্ক করাবে, বকবে। বাবা এ রকম করবে না। তোকে ভালবাসে...’ এ সব বলে সহজের ব্রেনওয়াশ করার চেষ্টা করে। সহজ ভীষণ ডিপ্রেসড হয়ে যায়। খুব কান্নাকাটি করেছিল। তখন রাহুলকে বলি, ‘তুমি আর আসবে না। যেটা করছ, সেটা অমানবিক।’ জুলাইয়ে মামলার ডেট। রাহুলের কাছে সমনও পৌঁছে গিয়েছে।
প্র: রাহুল কখনও সহজের কাস্টডি দাবি করেননি?
উ: না। এখন তো আমার মনে হয়, ও এটাই চেয়েছিল। ওখান থেকে বেরিয়ে আসার পরও আমাদের ঝগড়া হয়েছে। আমার বাবা-মা সম্পর্কে যা নয়, তাই বলেছে।
প্র: আপনার বাবা-মায়ের প্রতি ওঁর এই রাগ কেন?
উ: গোড়ায় বাবা-মা সম্পর্কটা মেনে নেননি। সতেরো বছরের মেয়েকে তাঁরা বকতেই পারেন। সেই কারণেই তো আমার বাড়ি ছেড়ে চলে আসা।
প্র: সেপারেশনের সময়েও তো সম্পর্কটা এত খারাপ মনে হয়নি!
উ: যতটা বলছি, তার চেয়ে একশো গুণ খারাপ ছিল। ওর কাছে আমার প্রত্যাশা বা দাবি নেই। আমাকে যে ভাবে ট্রিট করেছে, বেরিয়ে আসার পরও আমার বাড়ির লোক সম্পর্কে যে সব কথা বলেছে... প্রমাণ করেছে ও মানুষ নয়। কিন্তু ও যদি সহজের প্রতি কমিটমেন্টটা রাখত, আমার কিচ্ছু বলার থাকত না।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy