প্রভাস ও দিলজিৎ
একটা সময় ছিল যখন, ফিল্ম স্টার মানে শুধু মুম্বইয়ের হিন্দির ছবির নায়ক-নায়িকা। এখন সময় বদলেছে। ইন্টারনেটের দৌলতে পৃথিবীটা ছোট হয়েছে তো বটেই, সিনেমার আঞ্চলিক ব্যবধানটাও মুছে গিয়েছে। লুধিয়ানার দিলজিৎ, হায়দরাবাদের প্রভাস বা চেন্নাইয়ের ধনুশকে বিখ্যাত হতে হিন্দি ছবি করতে হয় না। বলিউডে পা রাখার আগেই তাঁরা জনপ্রিয় গোটা ভারতে। বাঙালি এখন এঁদের দেখতেও হলমুখী।
প্রভাস
সে অর্থে এখনও তাঁর বলিউডে প্রবেশ ঘটেনি। ‘অ্যাকশন জ্যাকসন’ ছবিতে একটা ছোট্ট ক্যামিও করেছিলেন শুধু। তবে প্রভাসের উপস্থিতি কেউ অস্বীকার করতে পারবে না। ফিল্মি ব্যাকগ্রাউন্ডে বড় হওয়া প্রভাস, তেলেগু ছবিতে পা দিতে না দিতেই জনপ্রিয়। তথাকথিত আঞ্চলিক ছবি হলেও ২০০৪ সালে তাঁর অভিনীত ‘ভর্শাম’ ছবির বক্স অফিস কালেকশন দাঁড়ায় ২৪ কোটি! ‘বাহুবলী’ অবশ্যই সে সব কিছুকে ছাপিয়ে যায়। প্রভাসও এমন সুযোগকে হেলায় নষ্ট করেননি। এই তিন বছরে অন্য কোনও সিনেমার কাজ হাতে নেননি। চিকেন বিরিয়ানির ভক্ত প্রভাস বর্জন করেছেন প্রিয় খাবারকেও। ফোকাস করেছেন শুধুই ‘বাহুবলী’র উপর। সাধে কী আর ফ্যানরা তাঁকে ডাকেন ‘মিস্টার পারফেক্ট’ বলে। অপেক্ষা এ বার বলিউডে ছবির।
দিলজিৎ দোসাঞ্জ
তাঁর জন্ম জলন্ধরের এক গ্রামে। পঞ্জাবে বেড়ে ওঠা দিলজিৎ এখনও টানা হিন্দি বলতে পারেন না। কিন্তু ভাষায় কী এসে যায়! ‘উড়তা পঞ্জাব’ আর ‘ফিল্লৌরী’ ছবিতে অভিনয় করে অনেক বলিউড স্টারের রাতের ঘুম উড়িয়ে দিয়েছেন। যদিও সেটা ছিল শুধু সময়ের অপেক্ষা। কেরিয়ারের শুরু মিউজিক দিয়ে। জনপ্রিয় তিনি সেখানেও। তাঁর ‘দ্য নেক্সট লেভেল’ বা ‘ব্যাক টু বেসিক্স’ অনেকদিন ঢুকে পড়েছে জেনওয়াইয়ের প্লে লিস্টে। তাঁর ‘পাতিয়ালা পেগ’ ডান্স ফ্লোরে বাজানো হয়নি, এমন নাইট ক্লাব কলকাতাতেও খুঁজে পাওয়া মুশকিল! কিন্তু শুধু গানে থেমে যাননি দিলজিৎ। ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতেও নিজের জায়গা বানিয়ে নিয়েছিলেন। ‘জাঠ অ্যান্ড জুলিয়ট’ ছবিতে মজাদার অভিনয় করে যেমন বক্স অফিসে জনপ্রিয় হয়েছেন, তেমনই ‘পঞ্জাব নাইন্টিন এইট্টি ফোর’ ছবিতে অভিনয় করে সমালোচকদের চোখের মণি হয়ে উঠতেও সময় লাগেনি তাঁর। বলিউডেও যাত্রাটা তেমনই। ‘উড়তা পঞ্জাব’ আর ‘ফিল্লৌরী ’র পর আবার আসছেন অনুষ্কা শর্মার সঙ্গে ‘কানেদা’ ছবিতে।
ধনুশ
দেখতে একদম পাশের বাড়ির ছেলে। হিরো সুলভ কোনও দেখনদারি নেই। যদিও ধনুশের পকেটে তিন-তিনটে জাতীয় পুরস্কার। ‘রাঞ্ঝনা’ ছবির করার অনেক আগেই তিনি জনপ্রিয় সিনেমার জগতে। ‘পুধুপেত্তাই’, ‘আধুকালাম’ সিনেমার দৌলতে আঞ্চলিক বেড়া ভেঙে ফেলেছিলেন অনেক আগেই। রজনীকান্তের জামাই শুধু সিনেমাতেই নন, আছেন গানেও। তাঁর ‘হোয়াই দিস কোলাভরি ডি’ জনপ্রিয় বললে অর্ধেক বলা হয়। এই গানটা এখনও ইউটিউবের সবচেয়ে বেশি সার্চ করা ভিডিয়ো। ধনুশ বুঝিয়ে দেন, সিনেমার জগতে জনপ্রিয় হতে সীমানা কোনও সীমা নয়।
ধনুশ ও রানা
রানা ডুগ্গুবাটি
প্রথম ছবি ‘লিডার’ থেকেই বক্স অফিসে রাজ করা শুরু রানা ডুগ্গুবাটির। বলিউডে প্রথম ছবিও তার এক বছর পরে। ‘দম মারো দম’। অন্যতম প্রমিসিংয়ের তকমা পেতে দেরি হয়নি তাঁর। ফ্যানদের প্রত্যাশাও পূরণ করেছেন যথাযথ। তিনিই বোধহয় এই সময়ের একমাত্র আঞ্চলিক ছবির হিরো, যিনি তামিল, তেলুগু আর হিন্দি, তিন ভাষায় ছবি করছেন চুটিয়ে। ‘বাহুবলী’র ভল্লাল দেবের চরিত্র জনপ্রিয়তাকে অন্য মাত্রায় নিয়ে গিয়েছে। ফলও মিলেছে হাতে নাতে। এ বছর রিলিজ হবে তাঁর পাঁচ-পাঁচটা ছবি।
অরিজিৎ চক্রবর্তী
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy