Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
Jhargrm

Jhargram: সপ্তাহান্তে কাছাকাছি কোথাও বেড়াতে যেতে চান? বেরিয়ে পড়ুন ঝাড়গ্রামের উদ্দেশ্যে

কলকাতা থেকে প্রায় ১৭০ কিমি দূরে ঝাড়গ্রাম। ঘুরে আসুন সপরিবারে।

ঝাড়গ্রাম রাজবাড়ি।

ঝাড়গ্রাম রাজবাড়ি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
ঝাড়গ্রাম শেষ আপডেট: ২৪ ডিসেম্বর ২০২১ ২০:২৪
Share: Save:

শীতের ছুটি, বাঙালি সপ্তাহান্তে বাড়ি বসে থাকবে কী করে। তবে ওমিক্রন আবহে বেশি দূর যেতেও ভয় করছে। তেমন হলে ঘুরে আসতে পারে ঝাড়গ্রাম থেকে। পাহা়ড়-নদী-জঙ্গল— সব পেয়ে যাবেন এক জায়গায়।

কী করে যাবেন
কলকাতা থেকে প্রায় ১৭০ কিমি দূরে ঝাড়গ্রাম। জাতীয় সড়ক ধরে লোধাশুলি হয়ে ঝাড়গ্রামে যাওয়া যায়। আবার খড়গপুর এর চৌরঙ্গী থেকে মেদিনীপুর শহর হয়ে ধেরুয়া হয়ে সহজে যাওয়া যায় ঝাড়গ্রামে। হাওড়া থেকে ঝাড়গ্রাম যেতে ট্রেনে সময় লাগে প্রায় তিন থেকে সাড়ে তিন ঘণ্টা৷ তা ছাড়া সড়ক (জাতীয় সড়ক ৬ (মুম্বাই-কলকাতা জাতীয় সড়ক) পথে প্রায় চার ঘণ্টা সময় লাগে।

কী দেখবেন
অরণ্যসুন্দরী ঝাড়গ্রাম শহরের পূর্বপ্রান্তে বনভূমির মধ্যে ডিয়ার পার্ক বা জুলজিক্যাল গার্ডেন। ঝাড়গ্রাম শহর থেকে সড়কপথে ৩ কিলোমিটার পথ ধরে গেলেই ডিয়ার পার্ক । সেখানে রয়েছে চিতা, হরিণ, অন্যান্য জন্তু, কৃষ্ণসার হরিণ, ময়ূর, ভাল্লুক, হায়না, বাঁদর, বিভিন্ন প্রজাতির সাপ সহ বন্য প্রাণীদের দেখা যায়।

চিল্কিগড়ের কনক দুর্গা মন্দির।

চিল্কিগড়ের কনক দুর্গা মন্দির।

ঝাড়গ্রাম থেকে ঘাগরার দূরত্ব প্রায় ৫০ কিলোমিটার৷ চার দিকে সবুজ শালের সমারোহ৷ বেলপাহাড়ির ঘাগরা জলপ্রপাত। ঝাড়গ্রাম বা বেলপাহাড়ি থেকেও গাড়ি ভাড়া করে ঘাগরা যাওয়া যায়৷ পাহাড়ের গা বয়ে জলের স্রোত। কাচের মতো পরিষ্কার দেখতে জল। তবে একটু সাবধানে থাকতে হয়, পাহাড়ের খাঁজ রয়েছে।

ঝাড়গ্রাম শহরে রাজবাড়ির গৌরবময় ইতিহাস এবং দৃষ্টিনন্দন সোন্দর্য এখনও বিরাজমান। সর্বেশ্বর সিংহ এই রাজবংশের সূচক। রাজবাড়ি ঘুরে দেখার পাশাপাশি থাকার ব্যবস্থাও রয়েছে। বাগানে রয়েছে একাধিক ফল ও ফুলের গাছ। ‘সন্ন্যাসী রাজা’, ‘টিনটোরেটোর যিশু’, ‘দুর্গেশগড়ের গুপ্তধন’ সহ একাধিক বাংলা ছবির শ্যুটিং হয়েছে।

ঝাড়গ্রাম শহর থেকে কিছু দূরে রয়েছে সাবিত্রী মন্দির। ১ কিমি দূরে দৃষ্টিনন্দন শাল জঙ্গলে লোক ও আদিবাসী সংস্কৃতি উপাদান নিয়ে বাঁদরভুলা সংগ্রহশালা । পাশাপাশি পর্যটকদের থাকার জন্য ৪-৫ টি রিসর্ট রয়েছে। এখানে একটি মুক্ত মঞ্চ রয়েছে। রাত্রি বাস করা যায় সেখানে।

ঝাড়গ্রাম শহর থেকে সড়কপথে বেলপাহাড়ি ৩৭ কিলোমিটার। বেলপাহাড়ি থেকে সড়কপথে ২৫ কিলোমিটার কাঁকড়াঝোড়। বেলপাহাড়ি অঞ্চলে পাহাড় বিরাজমান। রয়েছে কাঁকড়াঝোড় অরণ্য। মনোরম পরিবেশ, রাস্তায় ময়ূরের দেখা মিলতে পারে। আমলাশোল পাহাড় রয়েছে। ভ্রমণপ্রিয়দের জন্য এই জায়গাটি আদর্শ। বাংলা ছবি চার মূর্তির শ্যুটিং হয়েছিল।

গোপীবল্লভপুর থেকে সড়কপথে ২২ কিলোমিটার দূরে রয়েছে ঝিল্লির পাখিরালয় ।

গোপীবল্লভপুর থেকে সড়কপথে ২২ কিলোমিটার দূরে রয়েছে ঝিল্লির পাখিরালয় ।

বেলপাহাড়ি থেকে সড়কপথে প্রায় ১০ কিলোমিটার দূরে জঙ্গলের মাঝে গাডরাসিণী পাহাড়। অরণ্যে ঘেরা এই পাহাড়ের পাদদেশে অবস্থিত গাডরাসিণী আশ্রম। লাহিড়ী মহারাজ ও স্বামী যোগানন্দের আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে এই আশ্রম বহু মানুষ তাঁদের আধ্যাতিকতার দর্শন করেন। গাডরাসিণী পাহাড়ে প্রচুর রং-বেরঙের পরিযায়ী পাখি আসে।

বেলপাহাড়ি থেকে সড়কপথে ২০ কিলোমিটার দূরে লালজল পাহাড়। জঙ্গলের মধ্যে দিয়ে চড়াই-উতরাই রাস্তা অতিক্রম করে পাহাড়ি পথে লাল জল পাওয়া যায়। ওই এলাকায় এই সময় খেজুরের গুড় পাওয়া যায়। পাহাড়ের উপরে উঠলে জঙ্গলের অনেকটাই অংশ দেখা যায়।

বেলপাহাড়ি থেকে সড়কপথে প্রায় ১১ কিলোমিটার জঙ্গলের পথ। তিনটি পাহাড় ঘেরা মুগ্ধ করা হ্রদ খ্যাঁদারানি। সুবিশাল হ্রদে পরিযায়ী পাখিদের মেলা । দক্ষিণে সুউচ্চ গাড়রাসিণী, পশ্চিমে সিংলহর পাহাড়, মাঝে দিগন্ত বিস্ত্রত জলাশয়ে পাখির ঝাঁক প্রাকৃতিক সৌন্দর্য দিয়ে চলেছে খ্যাঁদারাণী।

ঝাড়গ্রাম থেকে প্রায় ১৪ কিমি দূরে চিল্কিগড়ের কনক দুর্গা মন্দির। বিভিন্ন ওষুধি গাছের সমারোহ। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের একটি রোমাঞ্চকর অভিজ্ঞতা দেয়। মন্দিরটি ডুলুং নামে একটি ছোট নদীর পাশে ঘন জঙ্গলে অবস্থিত। বেশ কিছু বিরল প্রজাতির গাছ, পাখি এবং বানর এখানে দেখা যায়। কনক দুর্গার পথে কেন্দুয়া নামে একটি স্থান আছে। শীতকালে পরিযায়ী পাখিরা এই স্থানে আসে। চিল্কিগড়ে রয়েছে রাজবাড়ি।

ঝাড়গ্রাম শহর থেকে সড়কপথে গোপীবল্লভপুর ৪২ কিমি। সুবর্ণরেখা নদীর তীরে অবস্থিত একটি সুন্দর পার্ক। সুবর্ণরেখা নদীর সঙ্গে এটি একটি ভাল প্রকৃতিকে সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারে।

গোপীবল্লভপুর থেকে সড়কপথে ২২ কিলোমিটার ঝিল্লির পাখিরালয় । এটি হাতিবাড়ি কটেজ থেকে ১০ কিমি দূরে। সূর্য দয়ের সময় সূর্যের মৃদু আলোতে জায়গাটি পরিদর্শন করেন তবে আপনাকে স্বাগত জানানোর জন্য হ্রদে এক ঝাঁক পরিযায়ী পাখির কিচিরমিচির অপেক্ষা করবে। সবুজের গালিচার মাঝে পাবেন এক বিশাল জলাধার। রাত্রিবাস জন্য রয়েছে কটেজ।

কোথায় থাকবেন
রাত্রি বাসের জন্য রয়েছে রাজবাড়ীর কটেজ, বাঁদর ভুলা গেষ্ট হাউস, বেলপাহাড়ি এলাকায় রয়েছে হোম স্টে। তা ছাড়া রয়েছে একাধিক হোটেল ও অতিথি নিবাস। তবে এই মরসুমে পর্যটকের ভিড় বেশি থাকায় আগে থেকেই বুকিং করতে হবে। পশ্চিমবঙ্গ পর্যটনের ওয়েবসাইট থেকে বুকিং করতে হয় সরকারি আবাসনগুলির জন্য। তা ছাড়া ফরেস্টের বাংলো একই ভাবে বুকিং করতে হয়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Jhargrm Travel Tips Winter Vacation Weekend Trip
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE