Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪

চলচ্চিত্র সংরক্ষণে মুম্বইয়ে প্রশিক্ষণশালা

সংবাদের পরিভাষায় যাকে ‘হার্ড নিউজ’ বলে তার বাইরেও বিস্তৃত খবর-রাশি প্রতিনিয়ত গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়। আর সেই পাহাড়-প্রমাণ খবরের খনি থেকে কিছু বিষয় ভিত্তিক সংবাদকে বেছে নিয়ে আমরা সাজিয়েছি ‘সংবাদের হাওয়াবদল’। সরাসরি বেড়ানোর কথা না-বললেও এইসমস্ত খবর আসলে হাওয়াবদলকে কেন্দ্র করেই। সংবাদের মোড়কে পর্যটন, চমকে দেওয়া না-জানা তথ্য, জীবজগতের পাশাপাশি পার্বণ, প্রত্নতত্ত্ব— সব মিলিয়ে এক অন্য খবরের জগৎ।সংখ্যার নিরিখে সবচেয়ে বেশি ফিল্ম তৈরি হলেও এ দেশে সেই ফিল্ম সংরক্ষণের বিষয়টি বরাবরই অবহেলিত। কিন্তু খুব শীঘ্রই এর পরিবর্তন হতে চলেছে। ভারতীয় ফিল্মের ঐতিহ্যকে রক্ষার জন্য উদ্যোগী হয়েছে মুম্বইয়ের এক বেসরকারি প্রতিষ্ঠান— ফিল্ম হেরিটেজ ফাউন্ডেশন। ফিল্ম সংরক্ষণ এবং পুনরুদ্ধারে আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার হাতেকলমে শেখানোর জন্য একটি কোর্স চালু করতে চলেছে ফাইন্ডেশন। আগামী বছরের ২২ থেকে ২৮ ফেব্রুয়ারি মুম্বইয়ের ফিল্ম ডিভিশনে এ বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে বলে জানানো হয়েছে ওই প্রতিষ্ঠানের তরফে। এ সব নিয়েই ‘সংবাদের হাওয়াবদল’।

শেষ আপডেট: ১৫ অক্টোবর ২০১৪ ০০:০০
Share: Save:

প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কার

• শপিং মলে প্রাচীন গুপ্তধন

কেমন হয় যদি শহরের কোনও নামজাদা শপিং মল থেকে হঠাত্ গুপ্তধনের সন্ধান পাওয়া যায়? অলীক মনে হলেও এমনই এক ঘটনার সাক্ষী থাকল ব্রিটেনের কোলচেস্টার শহর। লন্ডন থেকে প্রায় ৫০ মাইল উত্তর-পূর্বের এই শহরের একটি ডিপার্টমেন্টাল স্টোর সংস্কারের সময় পাওয়া গেল শতাব্দী প্রাচীন গুপ্তধনের হদিশ। মাটির নীচে একটি কাঠের বাক্সে রাখা ছিল তিনটি সোনার বাহু-বন্ধনী, রুপোর একটি নেকলেস, দু’টি রুপোর ব্রেসলেট, রুপোর একটি বাহু-বন্ধনী, মোহর ভর্তি একটি থলি, দু’টি সোনার কানের দুল এবং বেশ কয়েকটি সোনার আংটি। রোমান এই অলঙ্কারগুলি প্রায় দু’হাজার বছর ধরে মাটির তলায় চাপা পড়ে ছিল। খোঁজ পাওয়া গুপ্তধনের সঙ্গে একটি করুণ কাহিনি জড়িয়ে আছে বলে প্রত্নতাত্ত্বিকদের ধারণা। কোলচেস্টার আর্কিওলজিক্যাল ট্রাস্টের ডিরেক্টর ফিলিপ ক্রামির মতে, গুপ্তধনটি ছিল কোনও এক রোমান মহিলার, যিনি হয়তো লুকনো এই সম্পদ নিতে আর ফিরে আসেননি। তাঁর মতে, বডিকান বিদ্রোহের সময়ে গুপ্তধনের মালিক নিজে অথবা অন্য কেউ মাটির তলায় সম্পদ পুঁতে রেখেছিলেন। কিন্তু বিপ্লবের সময়ে সম্ভবত তাঁর মৃত্যু হয়। তাই আর ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়া সম্ভব হয়নি ছোট্ট এই ধনভাণ্ডার।

শক্তিশালী রোমান সাম্রাজ্যের বিরুদ্ধে ৬০-৬১ খ্রিস্টাব্দ নাগাদ শুরু হয় বডিকান বিদ্রোহ। নেতৃত্বে ছিলেন ইসেনি উপজাতির রানি বডিকা। বিদ্রোহ ব্যর্থ হলেও তার আগুনে পুড়ে যায় খান তিনেক বড় বড় শহর। এরই অন্যতম কোলচেস্টার। বিদ্রোহীদের হাত থেকে বাঁচতে নিজের যা কিছু সম্পদ মাটির নীচে লুকিয়ে রেখেছিলেন গুপ্তধনের মালিক ওই রোমান মহিলা। গুপ্তধনের কাছে খেজুর, গম-সহ বিভিন্ন খাদ্যদ্রব্যের সন্ধান পেয়েছেন ক্রামি ও তাঁর দল। এবং অন্তত এক জনের দেহাংশ পাওয়া গিয়েছে, যিনি শেষ পর্যন্ত বিদ্রোহীদের সঙ্গে লড়াই করেছিলেন বলে অনুমান বিজ্ঞানীদের। তবে গুপ্তধনের মালিকের তেমন কোনও পরিচয় জানাতে পারেননি প্রত্নতাত্ত্বিকেরা।

• ‘নোয়ার নৌকা’র খোঁজ

প্রলয়ঙ্কর বন্যায় বিধ্বস্ত চরাচর। ধ্বংস হওয়ার পথে পৃথিবী। মানুষ-সহ সমগ্র প্রাণিজগতকে রক্ষা করতে এক বিশাল নৌকায় ভাসলেন বৃদ্ধ নোয়া। মানুষ-সহ তাঁর নৌকায় জায়গা পেল বিভিন্ন প্রজাতির প্রাণীর দু’জন করে প্রতিনিধি। বহু দিন ভেসে থাকার পর প্রলয় থামলে ফের ডাঙায় ফিরলেন নোয়া। প্রাণহীন হওয়া থেকে রক্ষা পেল বিশ্ব।

বাইবেলের এই সুপরিচিত গল্পের সমর্থনে বহু প্রত্নতাত্ত্বিক প্রমাণ থাকলেও তা ছিল হাল আমলের। পাঁচ-সাতশো বা বড়জোর হাজার বছরের পুরনো। কিন্তু এ বারে নোয়ার সেই নৌকার ‘সমর্থন’ মিলল চার হাজার বছরের পুরনো এক প্রস্তরখণ্ড থেকে। প্রাচীন মেসোপটেমিয়া অর্থাত্ এখনকার ইরাক থেকে এই খোদাই করা পাথরের টুকরোটি আবিষ্কার করেছেন ব্রিটিশ মিউজিয়ামের এক দল গবেষক। এই টুকরোটি এ যাবত্ আবিষ্কৃত প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শনের মধ্যে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বলে দাবি করেছেন বিজ্ঞানীরা। বাইবেল বর্ণিত নোয়ার নৌকার সঙ্গে এর গঠনগত অমিল রয়েছে যথেষ্ট। বাইবেলে নোয়ার নৌকা ছিল চৌকো, আর আবিষ্কৃত শিলালিপি অনুযায়ী সেটি ছিল গোলাকার। নৌকাটি তৈরির বিস্তারিত বর্ণনা রয়েছে পাথরটিতে। একটি ফুটবল মাঠের সমান বড় নৌকাটি তৈরি করা হয়েছিল দড়ি, কাঠ এবং বিটুমিন দিয়ে। এমনকী, বিভিন্ন কক্ষে ভাগ করা নৌকাটিতে বিভিন্ন প্রজাতির দু’টি করে প্রাণী কী ভাবে ঢুকবে, তারও বিস্তারিত বর্ণনা রয়েছে লিপিতে। গবেষকদের মতে, সুগঠিত এই নৌকাটি এতটাই বিজ্ঞানসম্মত ভাবে তৈরি যে, এটি কখনওই ডুববে না। তবে এই ধরনের নৌকার পক্ষে আদৌ ভেসে থাকা সম্ভব কি না তা নিয়ে নিশ্চিত নন বিজ্ঞানীরা। ওই বর্ণনা অনুযায়ী এ বছরের শেষ দিকে নৌকাটি তৈরি করবার চেষ্টা করবেন নৌ-বিশেষজ্ঞরা। সফল হলে হয়তো ইতিহাস আবার নতুন করে লিখতে হবে গবেষকদের।

• প্রাগৈতিহাসিক কম্পিউটারের খোঁজ

চার্লস ব্যাবেজকে বলা হয় আধুনিক কম্পিউটারের জনক। অষ্টাদশ শতকের মাঝামাঝি সময়ে প্রথম মেকানিক্যাল কম্পিউটার তৈরি করেন তিনি। কিন্তু অ্যানালগ কম্পিউটার? প্রাচীন কালে চিনারা কিছু সরল হিসাব নিকাশের জন্য এক ধরনের যন্ত্র ব্যবহার করত। প্রাচীন গ্রিসে খ্রিস্ট-জন্মের আগেও গ্রহ-নক্ষত্রের অবস্থান জানতে এক ধরনের যন্ত্র ব্যবহার করা হত। চিনাদের ব্যবহৃত যন্ত্রের খোঁজ পাওয়া গেলেও গ্রিকদের ব্যবহৃত যন্ত্রের কোনও খোঁজ এত দিন পাননি প্রত্নতাত্ত্বিকেরা। অবশেষে মিলল সেই যন্ত্রের সন্ধান। সমুদ্রের নীচে ডুবে থাকা জাহাজের ধ্বংসাবশেষ থেকে বিজ্ঞানীরা খুঁজে পেয়েছেন আধুনিক কম্পিউটারের সেই আদি পুরুষ ‘অ্যানালগ কম্পিউটার’কে।

হাজার দুয়েক বছর আগে গ্রিসের মূল ভূখণ্ড এবং ক্রিট দ্বীপপুঞ্জের মাঝখানে ডুবে যায় একটি জাহাজ। ১৯০০ সাল নাগাদ স্থানীয় ডুবুরিরা স্পঞ্জ খোঁজ করার সময়ে আবিষ্কার করেন সেই জাহাজের ধ্বংসাবশেষ। কী ছিল না সেই জাহাজে? ব্রোঞ্জ এবং পাথরের মূর্তি, কাচের বিভিন্ন সামগ্রী, অলঙ্কার, কয়েন-সহ আরও অনেক কিছু। একই সঙ্গে পাওয়া গিয়েছিল ব্রোঞ্জের কিছু যন্ত্রপাতি। এ পর্যন্ত প্রায় ৮২টি এই ধরনের টুকরো আবিষ্কৃত হলেও এত দিন সেগুলিকে তেমন ভাবে গুরুত্ব দেননি বিজ্ঞানীরা। কিন্তু ভাল করে লক্ষ করতেই তাঁদের চক্ষু চড়কগাছ! এ যে প্রাচীনতম ক্যালকুলেটরের অংশ। জ্যোতির্বিদ্যার কাজে গ্রহ-নক্ষত্রের অবস্থান গণনার জন্য ব্যবহৃত হত এই যন্ত্র। অ্যান্টিকিথেরা দ্বীপের কাছে এই জাহাজের খোঁজ পাওয়ায় যন্ত্রের গঠন প্রক্রিয়াকে ‘অ্যান্টিকিথেরা মেকানিজম’ নাম দিয়েছেন বিজ্ঞানীরা। ২০ সেন্টিমিটার লম্বা একটি টুকরোয় গিয়ার এবং হাতলের খোঁজও পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা।

জলের নীচে অনুসন্ধান চালাবার জন্য একেবারেই স্বাস্থ্যকর নয় অ্যান্টিকিথেরা। জলের মাত্র ৭৫ মিটার নীচে মিনিট কয়েক কাটিয়েই উঠে পড়তে হত ডুবুরিদের। ভূকম্প-প্রবণ এই অঞ্চলে রয়েছে বহু গিরিখাত। ভাল করে অনুসন্ধান করতে অন্তত ২০০ মিটার নীচে নামতে হবে বলে মনে করছেন বিজ্ঞানীরা। ডুবুরিদের পক্ষে যা একেবারেই অসম্ভব। এ জন্য এক ধরনের বিশেষ পোশাক আনিয়েছেন তাঁরা। এই পোশাক পরে জলের ২০০-২৫০ মিটার নীচে নেমে পাঁচ ঘণ্টা নাগাড়ে সন্ধান করতে পারছেন বিজ্ঞানীরা। এবং এই সন্ধানকাজ শুরু করে তাঁদের অনুমান, একটি নয়, ওই ধরনের একাধিক যন্ত্র থাকতে পারে সমুদ্রের তলায়। তবে বিজ্ঞানীদের হাতে সময় খুব অল্প। এক মাসের মধ্যে সন্ধানকাজ শেষ করতে হবে তাঁদের। ডুবুরিদের জন্য আনা বিশেষ পোশাকগুলি ভাড়া করা যে! আর সেই মেয়াদও শেষ হওয়ার মুখে।

ঐতিহ্য

• চলচ্চিত্র সংরক্ষণে কর্মশালা মুম্বইয়ে

সংখ্যার নিরিখে সবচেয়ে বেশি ফিল্ম তৈরি হলেও এ দেশে সেই ফিল্ম সংরক্ষণের বিষয়টি বরাবরই অবহেলিত। কিন্তু খুব শীঘ্রই এর পরিবর্তন হতে চলেছে। ভারতীয় ফিল্মের ঐতিহ্যকে রক্ষার জন্য উদ্যোগী হয়েছে মুম্বইয়ের এক বেসরকারি প্রতিষ্ঠান— ফিল্ম হেরিটেজ ফাউন্ডেশন। ফিল্ম সংরক্ষণ এবং পুনরুদ্ধারে আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার হাতেকলমে শেখানোর জন্য একটি কোর্স চালু করতে চলেছে ফাইন্ডেশন। আগামী বছরের ২২ থেকে ২৮ ফেব্রুয়ারি মুম্বইয়ের ফিল্ম ডিভিশনে এ বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে বলে জানানো হয়েছে ওই প্রতিষ্ঠানের তরফে।

পরিসংখ্যান অনুযায়ী, সারা বছরে এ দেশে ৩২টি ভাষায় প্রায় এক হাজার সাতশোটি ফিল্ম তৈরি হয়। কিন্তু তার মধ্যে সংরক্ষিত ফিল্মের সংখ্যা একেবারে হাতেগোনা। ১৯৫০ সাল পর্যন্ত যত চলচ্চিত্র নির্মিত হয়, তার ৭০-৮০ শতাংশ সম্পূর্ণ নষ্ট হয়ে গিয়েছে শুধুমাত্র সংরক্ষণের অভাবে। এর মধ্যে ১৯৩১ সালে ভারতে তৈরি প্রথম সবাক ছবি ‘আলম আরা’ও রয়েছে। এ ভাবেই হারিয়ে গিয়েছে বহু ফিল্ম। আসলে এ দেশে সে ভাবে ফিল্ম সংরক্ষণের কথা ভাবা হয়নি কখনও। ফলে উদয়শঙ্কর পরিচালিত একমাত্র ছায়াছবি ‘কল্পনা’ (১৯৪৮) বা ঋত্বিক ঘটকের ‘মেঘে ঢাকা তারা’ (১৯৬০)-র মতো ক্ল্যাসিক ছবি সংরক্ষণ করতে পাঠাতে হয়েছে বিদেশের গবেষণাগারে।

ভারতে ফিল্ম সংরক্ষণ এবং পুনরুদ্ধারের প্রযুক্তিগত শিক্ষার চাহিদা বরাবরই ছিল। দেশেই যাতে ফিল্ম সংরক্ষণের সুযোগসুবিধা মেলে, সেই উদ্দেশ্যে প্রথম পদক্ষেপ করল এই ফাউন্ডেশন বলে তাদের দাবি। সংস্থার তরফে জানানো হয়েছে, মার্টিন স্করসেসে প্রতিষ্ঠিত ফিল্ম ফাউন্ডেশন, ওয়ার্ল্ড সিনেমা প্রজেক্ট, সিনেটেকা দি বোলোনা এবং ইমাজিনে রিট্রোভাটা-র সহযোগিতায় এই প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হবে। এর মধ্যে প্রত্যেকটি সংস্থাই বিশ্বের তাবড় পরিচালকদের ফিল্ম সংরক্ষণ এবং পুনরুদ্ধারের কাজে যুক্ত রয়েছে। স্করসেসে প্রতিষ্ঠিত ফিল্ম ফাউন্ডেশন ইতিমধ্যে স্টিভেন স্পিলবার্গ, জর্জ লুকাস, ফ্রান্সিস ফোর্ড কপোলা, ক্লিন্ট ইস্টউড, রবার্ট রেডফোর্ড, উডি অ্যালেন এবং অ্যাং লি-সহ বহু পরিচালকের প্রায় ছ’শোটি ফিল্ম সংরক্ষণ করেছে। অন্য দিকে, চার্লি চ্যাপলিন, জাঁ রেনোয়া, ফ্রেদেরিকো ফেলিনি, ইয়াসুজিরো ওজু, সের্গেই লিওন এবং ঋত্বিক ঘটকের ফিল্ম সংরক্ষণের অভিজ্ঞতা রয়েছে ইমাজিনে রিট্রোভাটা-র বিশেষজ্ঞদের।

ফিল্ম হেরিটেজ ফাউন্ডেশন জানিয়েছে, এই প্রশিক্ষণ কর্মশালায় ভারত ছাড়াও শ্রীলঙ্কা, নেপাল এবং ভুটান থেকে যাঁরা অংশ নেবেন তাঁদের মেধার ভিত্তিতে বাছাই করা হবে। এই বিষয়ে সাত দিন ধরে সকা‌ল প্রায় ১২ ঘণ্টা ব্যাপী বিভিন্ন সেশনে প্রশিক্ষণ দেবেন বিশ্বের সেরা বিশেষজ্ঞেরা। পাঠক্রমে থাকবে ফিল্ম কম্পেয়ারিং, রিপেয়ার, স্ক্যানিং, ডিজিটাল রেস্টোরেশন, কালার কারেকশন ইত্যাদি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। প্রশিক্ষণ শেষে সফল ছাত্রছাত্রীদের ‘দ্য ইন্টারন্যাশনাল ফেডারেশন অফ ফিল্ম আর্কাইভ’ (এফআইএএফ)-এর শংসাপত্র দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন ফাইন্ডেশন কর্তৃপক্ষ।

• পঞ্জাবে সৌধ সংস্কার

রাজ্যের ঐতিহ্যবাহী সৌধগুলি সংস্কারে উদ্যোগী হল পঞ্জাব সরকার। রাজ্য জুড়ে ২০টিরও বেশি সৌধের সংস্কার করা হবে বলে প্রশাসনিক সূত্রে জানা গিয়েছে। তবে সে কাজ শুরুর আগে সরকারের কাছে এই প্রকল্পের একটি সবিস্তার রিপোর্ট জমা দেবেন বিশেষজ্ঞরা।

রাজ্যের পর্যটন ও সংস্কৃতি দফতরের সচিব রাজি পি শ্রীবাস্তব জানান, এই পরিকল্পনার অন্তর্গত অমৃতসরের গোবিন্দগড় দুর্গ, পাটিয়ালার কিলা মুবারক-সহ নাভা, মালেরকোটলা এবং সাঙ্গুরের সৌধগুলিও সংস্কার করা হবে। ব্রিটিশ আমলে মালেরকোটলা ছিল স্বায়িত্বশাসিত রাজ্য। এর প্রাক্তন প্রতিষ্ঠাতা সাদরুদ্দিন সাদ্রি জাহানের দরগা রয়েছে এখানে। এটি পঞ্জাবের ঐতিহ্যময় সৌধগুলির মধ্যে অন্যতম। দরগায় পাথরের দেওয়াল দিয়ে ঘেরা সমাধিসৌধ ছাড়াও একটি ‘ড্রাম হাউস’ এবং মসজিদ রয়েছে। এর প্রত্যেকটিই হেরিটেজ সৌধ।

পঞ্জাবের শিখ ধর্মাবলম্বীদের ইতিহাসে পাটিয়ালায় কিলা মুবারকের যথেষ্ট গুরুত্ব রয়েছে। শহরের কেন্দ্রেই রয়েছে কিলা মুবারক। ধীরে ধীরে জীর্ণ হয়ে পড়ায় বহু দিন আগেই এর সংস্কারের প্রয়োজন ছিল। কিলা মুবারকের ভাঙা দেওয়াল পেরিয়ে এখন হকারেরা দোকান তুলতে শুরু করেছে। ফলে শীঘ্রই এর সংস্কার করা প্রয়োজন বলে মনে করছে রাজ্য প্রশাসন।

• ত্রিমাত্রিকে ভারতীয় ঐতিহ্য

ত্রিমাত্রিক (থ্রি-ডি) ছবিতে ভারত-দর্শন!

সাধারণের কাছে ভারতীয় সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের নমুনা তুলে ধরতে আগামী ডিসেম্বরে নয়াদিল্লির ইন্ডিয়া গেটে থ্রি-ডি প্রযুক্তির হাত ধরে জীবন্ত হয়ে উঠবে দেশের সংস্কৃতি এবং ঐতিহ্যের নানা দিক। এ বিষয়ে প্রস্তাব জমা পড়েছে বলে কেন্দ্রীয় নগরোন্নয়ন মন্ত্রক সূত্রে জানানো হয়েছে। প্রস্তাব অনুযায়ী, ইন্ডিয়া গেটে স্বল্পদৈর্ঘ্যের থ্রি-ডি ছবির মাধ্যমে দেশীয় ঐতিহ্যকে দেখানো হবে। প্রস্তাবটি ইতিমধ্যেই ‘দিল্লি আর্বান আর্ট কমিশনে’র (ডিইউএসি) ছাড়পত্র পেয়েছে। এ বিষয়ে টেন্ডার ডাকার তোড়জোড়ও শুরু করেছে ‘সেন্ট্রাল পাবলিক ওয়ার্কস ডিপার্টমেন্ট’ (সিপিডব্লিউডি)।

ডিইউএসি ছাড়াও গত অগস্টে কেন্দ্রীয় পর্যটন মন্ত্রক থেকে এক বিবৃতিতে জানানো হয়, ইন্ডিয়া গেটে থ্রি-ডি ছবির প্রদর্শনে প্রয়োজনীয় অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। সিপিডব্লিউডি-র এক আধিকারিক জানিয়েছেন, এ বিষয়ে তাদের কাছে প্রযুক্তিগত সাহায্য চেয়েছে পর্যটন মন্ত্রক। তবে প্রদর্শিত ছবির বিষয়বস্তু নির্ধারণ থেকে শুরু করে এর সময়সীমা ইত্যাদি সব কিছুর দায়িত্ব থাকবে মন্ত্রকেরই হাতে। প্রাথমিক ভাবে জানা গিয়েছে, দেশের নানা প্রান্তের ঐতিহ্যবাহী সৌধের ছবি প্রদর্শিত হবে। এবং প্রতিটি ছবিই হবে নির্বাক। এ ছাড়া, প্রস্তাবে বলা হয়েছে, ইন্ডিয়া গেটে অহেতুক যানজট এড়াতে সকাল সাড়ে ৮টা থেকে প্রদর্শনী শুরু হবে। নির্দিষ্ট উত্সবের মরসুমে সংশ্লিষ্ট বিষয়ের ছবিই প্রদর্শিত হবে বলে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। অন্য সময়ে অবশ্য দেশের বিভিন্ন সৌধের ছবি দেখানো হবে।

তবে ইন্ডিয়া গেট নয়, প্রাথমিক ভাবে অন্য কোথাও প্রদর্শনের ব্যবস্থা করতে সিপিডব্লিউডি-কে পরামর্শ দেয় ডিইউএসি। পরে অবশ্য এখানে ছবি প্রদর্শনে রাজি হয় তারা। অগস্টে প্রকাশিত এক নির্দেশিকায় ডিইউএসি জানায়, দেশের জন্য শহিদ সেনানীদের স্মৃতিতে এখানে বেশ কয়েকটি স্মৃতিসৌধ থাকায়, এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের অনুমোদন প্রয়োজন। তবে ছবি প্রদর্শনে বাধা কাটলেও ইন্ডিয়া গেটে স্থায়ী-অস্থায়ী কোনও নির্মাণ করা যাবে না বলে জানানো হয়েছে। এ ছাড়া, প্রদর্শনের জন্য আশেপাশের স্মৃতিসৌধের কোনও ক্ষতি যাতে না হয়, সে দিকেও খেয়াল রাখতে হবে বলে নির্দেশ দিয়েছে ডিইউএসি।

পরিবেশ ও বন্যপ্রাণ

• হারিয়ে যাওয়া পাখির খোঁজে

‘তখন সন্ধে নামার মুখে। অস্তমিত সূর্যের লাল-হলুদ আলোর খেলা চলছে দিগন্তরেখার কাছে। সেই সঙ্গে সমুদ্রের গাঢ় নীল জলরাশি মায়াময় পরিবেশের সৃষ্টি করেছে। ঠিক সেই মুহূর্তেই দেখলাম তাকে। ঠিক দেখছি তো... হ্যাঁ এ সেই পাখিই বটে— ম্যাসকারিন পেট্রেল। আমাদের বোটের খুব কাছ দিয়েই উড়ে যাচ্ছে। খুব তাড়াতাড়ি ডিম পাড়বে বলে মনে হচ্ছে। ক্যামেরার সাটারে চাপ দিয়ে চটজলদি বেশ কয়েকটি ছবি তুলে নিলাম। কে জানে, পরে আর এই পাখির সন্ধান পাওয়া যায় কি না!’ সাম্প্রতিক প্রকাশিত ব্রিটেনের একটি বিজ্ঞানপত্রিকায় এমনই তথ্য দিয়েছেন এক পাখি বিশেষজ্ঞ।

এর আগে, ঠিক এমন অভিজ্ঞতার কথাই লিখেছিলেন অপর এক দল পক্ষীবিশারদ। ২০১২ সালের ২২ ডিসেম্বর, ভারত মহাসাগরের দক্ষিণ উপকূলে আইল্যান্ড অফ রিইউনিয়নের কাছে ম্যাসকারিনের সন্ধান পেয়েছিলেন তাঁরা। আইল্যান্ডের ২৫ মাইল দক্ষিণ দিয়ে সে উড়ে যাচ্ছিল বলে জানিয়েছিলেন দলেরই এক চিত্রগ্রাহক।

বিলুপ্তপ্রায় সামুদ্রিক পাখি ম্যাসকারিন পেট্রেল। বৈজ্ঞানিক নাম সিউডোবুলওয়েরিয়া অ্যাটেরিমা। মাঝারি মাপের গাঢ় রঙের এই সামুদ্রিক পাখিটি শুধু বিলুপ্তপ্রায়ই নয়, এর সম্বন্ধে বিজ্ঞানের পাতায় খুব কম তথ্য রয়েছে। ঊনবিংশ শতকে আইল্যান্ড অফ রিইউনিয়নে প্রথম এই পাখির দেখা মেলে। বহু বছর ধরে বিজ্ঞানীদের ধারণা ছিল এই পাখির মাত্র দশটি প্রজাতি রয়েছে। ১৯৭৪ সালে দু’টি ম্যাসকারিনকে মৃত অবস্থায় দেখা যায়। এর পরে খোঁজ মেলে ১৯৯৭ সালে। তার পরে ফের এক বার হারিয়ে যায় রহস্যময় এই পাখি। ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন অফ কনজারভেশন অফ নেচার (আইইউসিএন)-এর সমীক্ষা অনুযায়ী বিশ্ব জুড়ে মাত্র ৩৩টি ম্যাসকারিন রয়েছে, যাদের মধ্যে এখনও পর্যন্ত মাত্র ১২টি পাখিকেই দেখা গিয়েছে। তাও কিছু ক্ষণের জন্য। কোথা থেকে এরা আসে, মুহূর্তের জন্য দেখা দিয়ে আবার কোথায় অদৃশ্য হয়ে যায়? তা এখনও বিজ্ঞানীদের কাছে ধাঁধাঁ। কয়েক জন পক্ষীবিজ্ঞানীর মতে আইল্যান্ড অফ রিইউনিয়নের কোথাও এদের গোপন ডেরা রয়েছে। সেই অচিনপুরীর খোঁজ এখনও জারি রেখেছেন বিজ্ঞানীরা।

• বন্ধুত্ব পাতিয়ে শিকার ধরে ‘ভ্যাম্পায়ার’ গাছ

বেশ কিছু দিন আশেপাশে ঘুরঘুর করে। লিকলিকে হাত বাড়িয়ে কাছে আসতে চায়। এরা আড়ে আড়ে চায়, নজর রাখে সর্ব ক্ষণ। মিষ্টি মিষ্টি কথা বলে বন্ধুত্ব পাতাতে চায়। অনেকটা ওই নিশিডাকের মতো যেন হাতছানি দিয়ে ডাকে। কিন্তু এক বার এই ডাকে সাড়া দিলেই মুশকিল। অনেক আনকোরা নতুন গাছ, ছোট গুল্ম বা সুন্দরী পুষ্পলতা এদের ফাঁদে পা দিয়ে সর্বস্ব হারিয়েছে। শেষ প্রাণবিন্দু অবধি শুষে নেয় এই ‘ভ্যাম্পায়ার’রা। এমনই নাম দিয়েছেন মার্কিন বিজ্ঞানীরা। আমেরিকার ভার্জিনিয়া টেক বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক জিম ওয়েস্টউড জানিয়েছেন তথাকথিত কাল্পনিক চরিত্র ‘কাউন্ট ড্রাকুলা’র সঙ্গে কোনও তফাত্ নেই এদের। এরা আদতে পরজীবী উদ্ভিদ— কাসকুটা পেন্টাগোনা। কিন্তু আর পাঁচ জনের কাছে স্ট্র্যানগেলউইড বা ভ্যাম্পায়ার গাছ হিসেবেই এদের পরিচিতি।

কিন্তু হঠাত্ ভ্যাম্পায়ারের সঙ্গে তুলনা কেন?
পরজীবী উদ্ভিদদের বৈশিষ্ট্যই হল পোষক উদ্ভিদের শরীরে বাসা বেঁধে পুষ্টিরস শোষণ করা। স্ট্র্যানগেলউইডেরাও তাই করে। তবে এদের কিছু বিশেষ বৈশিষ্ট্য আছে যা উদ্ভিদসমাজে বিরল। এরা ফাঁদ পেতে তাদের শিকার ধরে। অনেকটা নেপেনথিস বা ‘পিচার প্ল্যান্ট’-এর মতো। পার্থক্য হল নেপেনথিসদের শিকার ছোটখাটো পোকামাকড় আর এরা শিকার করে উদ্ভিদ। আগাছা থেকে শস্যল উদ্ভিদ— এদের হাত থেকে নিষ্কৃতি নেই কারওরই। শুধুমাত্র শিকারকে হৃষ্টপুষ্ট হতে হবে, থুড়ি পুষ্টিরসে ভরপুর হতে হবে। কোন উদ্ভিদের মধ্যে কতটা পুষ্টিরস রয়েছে তা বোঝার একটা আশ্চর্য ক্ষমতা রয়েছে এদের। বেছে বেছে সেই সব গাছকেই এরা নিশানা বানায়।

প্রথম এই স্ট্র্যানগেলউইডদের সন্ধান পাওয়ার পর বিজ্ঞানী জিম ও তাঁর সতীর্থেরা বেশ কিছু দিন আড়াল আবডাল থেকে এই গাছের উপর নজর রেখেছিলেন। শুধু তাজ্জব নয়, বেশ একটা গা ছমছমে অভিজ্ঞতার সাক্ষী হয়েছিলেন তাঁরা। জিমের বয়ান অনুযায়ী— চাষিরা বেশ কিছু দিন ধরেই একটা আগাছার মতো দেখতে গাছের কথা বলছিল। তখন ফসল পাকার সময়। বার বার আগাছাগুলিকে তুলে ফেলা সত্ত্বেও এই একটি গাছ কেমন করে যেন ফিরে ফিরে আসে। নিতান্তই নিরীহ গোবেচারা চেহারার লতানে গাছ। কিছু দিন বাদেই ফসল ঘেরা মাঠের চার ধারে বেড়া দিয়ে দিলেন চাষিরা। মাঠের বাইরে বিছুটির বাগান। চাষিরা খেয়াল করলেন আগাছাটি এ বার বিছুটিদের কাছাকাছি বাড়তে শুরু করেছে। আরও কয়েক দিন পর দেখা গেল বাগানের অর্ধেকের বেশি বিছুটি গাছ শুকিয়ে মারা গিয়েছে।

ব্যাপারটা কী?
অনেকটা কৌতূহলের বশেই বিজ্ঞানীরা একটি বিছুটি সমেত ওই লতাকে গবেষণাগারে এনে পরীক্ষা শুরু করলেন। তখন লতাটি প্রায় বিছুটির গোড়া থেকে একটু একটু করে গাছটিকে পেঁচিয়ে উপরে ওঠা শুরু করেছে। আর সেই সঙ্গে গাছটিও কেমন শুষ্ক হতে শুরু করেছে। বিজ্ঞানীদের মত, নিতান্তই ছাপোষা পরজীবীদের মতো এরা কোনও গাছকে প্রথমে তাদের নিশানা বানায়। এর পরেই এরা স্বরূপ ধারণ করে। কেননা, চোষক অঙ্গ বিস্তার করে মৃত্যু আলিঙ্গনে জড়িয়ে ধরে ‘বন্ধু’ গাছটিকে। তার পর ক্রমশ নিজেদের জিনগত পদার্থ আরএনএ (রাইবো নিউক্লিক অ্যাসিড) ঢুকিয়ে পোষকের মজ্জা থেকে পুষ্টিরস টেনে নেয়। শুধু তাই নয় শিকারের সময় এদের জিনের বিন্যাস ও স্পন্দন পরীক্ষা করে দেখা গিয়েছে পুষ্টিরস টানার প্রতিটি মুহূর্তে আশ্রয়দাতা গাছের যন্ত্রণা এরা তারিয়ে তারিয়ে উপভোগ করে। গাছটি একেবারে শুষ্ক হওয়া শুরু করলেই এরা তাকে ছেড়ে অন্য শিকারের সন্ধানে বেরিয়ে পড়ে।

তবে এখানেই শেষ নয়। বিছুটিগুলোকে শুকোতে দেখে আনন্দ পেয়ে চাষিরা সেই বেড়া ভেঙে দিয়েছিলেন। ভেবেছিলেন এই গাছ আগাছা মারে। তার কিছু দিনের মধ্যেই টোম্যাটো ভর্তি মাঠ প্রায় শ্মশানে পরিণত হয়েছিল। হৃষ্টপুষ্ট পাকা রক্তরাঙা টোম্যাটো দিয়ে রীতিমতো চড়ুইভাতি করেছিল ভ্যাম্পায়ার গাছেরা।

• বেশি দিন বাঁচতে দরকার ভাল বয়ফ্রেন্ড

কোনও মহাপুরুষ এই বাণীটি লিখেছিলেন কি না জানা নেই! কিন্তু মহিলা বেবুনেরা উপরের বাক্যটি অক্ষরে অক্ষরে মেনে চলে। এই তো কয়েক দিন আগেই একটি মহিলা বেবুন তো আধুনিক সমাজের সেই জনপ্রিয় সিদ্ধান্ত নিয়েই প্রশ্ন তুলল। সেই যে কথায় বলে না— নারী ও পুরুষের মধ্যে কখনওই নির্ভেজাল বন্ধুত্ব হতে পারে না! বেবুনরা রীতিমতো প্রমাণ করে দিয়েছে, পুরুষ বন্ধুদের সান্নিধ্য এদের আয়ু অন্তত দু’তিন বছর বাড়িয়ে দেয়। রোগ, খরা, বন্যা, শিকারি প্রাণীদের হামলা— যাই আসুক না কেন, দুয়ে মিলে দিব্যি হেসে-খেলে যমরাজকেও ধোঁকা দিয়েছে এরা। ঠিক দুয়ে মিলে নাও হতে পারে, বেবুন বলে কি আর এদের অনেক ‘বয়ফ্রেন্ড’ থাকতে নেই! দলের সুঠাম-সুপুরুষদের সঙ্গেই এদের ভাব বেশি। কিন্তু একটু সুশ্রী যারা, তাদের একাধিক পুরুষ সঙ্গী থাকে। কেনিয়ার কিলিমাঞ্জারো পাহাড়ে বসবাসকারী ২০৪টি মহিলা বেবুনের উপর পরীক্ষা চালিয়ে এমনটাই লক্ষ করেছেন মার্কিন বিজ্ঞানীরা। প্রায় ২৭ বছর ধরে একনাগাড়ে সমীক্ষা চালিয়ে নটার ডেম বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক এলিজাবেথ আর্চি ও তাঁর সতীর্থেরা জানিয়েছেন, যে সব মহিলা বেবুন দলের মধ্যে সবচেয়ে বেশি মেলামেশা করে, তা সে পুরুষদের সঙ্গেই হোক বা মহিলাদের সঙ্গে তাদের মৃত্যুর হার ৩৪ শতাংশ কমে যায়। আর যারা পুরুষদের সঙ্গে মেলামেশায় বেশি স্বচ্ছন্দ, তাদের মৃত্যু হার প্রায় ৪৫ শতাংশ কমে যায়।

তবে সবাই যে প্রেমিক হয়, তা নয়। জীবনসঙ্গী হিসেবে এরা দলের সবচেয়ে হোমরাচোমরা পুরুষকেই বেছে নেয়। আবার অনেকের পছন্দ একটু বয়স্ক ও রাশভারী পুরুষ। কারণ, জীবন সম্পর্কে অভিজ্ঞতা এদের অনেক বেশি। আর বাকিরা নিছকই ‘বন্ধু’। এদের কাজ হল মহিলাদের মনোরঞ্জন করা। কখনও খেলার সঙ্গী হিসেবে, কখনও বা একটু পিঠ চুলকে দিয়ে বা গায়ের কয়েকটি পোকা বেছে দিয়ে এরা তাদের ভালবাসা জানায়। তবে দুর্ভাগ্যের বিষয় এদের মধ্যে অল্প কয়েক জনই সফল হয়, আর বাকিদের ওই ব্যর্থ প্রেমিক হিসেবেই থাকতে হয়!

পর্যটন কেন্দ্র

• সাদা বালুরাশির সৈকত তারকারলি

মহারাষ্ট্রের সিন্ধুদুর্গের মালবান তালুকের একটি গ্রাম তারকারলি। কারলি নদী ও আরব সাগরের সঙ্গমস্থলে গড়ে ওঠা এটি রাজ্যের অন্যতম পর্যটনস্থল। এর মূল আকর্ষণ সমুদ্র সৈকত। কোঙ্কন উপকূলের সাদা বালির সমুদ্র সৈকতই তারকারলিকে পর্যটকদের কাছে আরও মোহময় করে তুলেছে। ‘ব্যাক ওয়াটার’-এর নাম উঠলেই কেরলের নাম উঠে আসে। সেখানে ব্যাক ওয়াটার-এ নৌকা ভ্রমণের সুযোগ কেউই হাতছাড়া করতে চান না। সে রকমই ব্যাক ওয়াটার-এর দেখা মিলবে এই তারকারলিতে। এক দিকে ব্যাক ওয়াটার-এর স্থির জল, পাশাপাশি সমুদ্রের উচ্ছ্বল ঢেউয়ের দৃশ্যও উপভোগ করা যাবে এখানে। এই দুইয়ের মিশেল তারকারলির চাহিদা আরও বাড়িয়েছে পর্যটকদের কাছে। কেরলে এমনটা সম্ভব নয়। মুম্বই থেকে গোয়াগামী ট্রেনে নামতে হবে কোঙ্কন রেলওয়ের স্টেশন কুডাল। কুডাল থেকে পৌঁছনো যায় তারকারলি। সড়কপথে কাসাল থেকে দূরত্ব ৩৫ কিলোমিটার। মুম্বই থেকে তারকারলির দুরত্ব ৫৪৬ কিলোমিটার।

দর্শনীয় স্থান— দেওবাগ এবং শিভালা সৈকত, মালবানের রক গার্ডেন। এ ছাড়াও আছে সারজিকোট দ্বীপ ও সারজিকোট দুর্গ।

দেওবাগ সৈকত: তারকারলি সৈকতেরই একটি অংশ। এখানে সাদা বালুকারাশির বেলাভূমি এক কথায় অনবদ্য। পাশেই রয়েছে মত্স্যজীবীদের ছোট্ট একটি গ্রাম। দেওবাগ কথার অর্থ ‘ঈশ্বরের বাগান’। এক দিকে ব্যাক ওয়াটার ও অন্য দিকে আরব সাগরের ফেনিল তরঙ্গ— এমন বিরল দৃশ্য হয়তো খুব কম জায়গায় দেখা যায়। দেওবাগ সঙ্গম আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু। এখানেই কারলি নদী আরব সাগরকে ‘আলিঙ্গন’ করেছে। তারকারলি থেকে ঘণ্টায় ৬ টাকা ভাড়া দিয়ে দিব্যি ছয় কিলোমিটারের লোভনীয় প্রাকৃতিক দৃশ্য দেখে নেওয়া যায়। রয়েছে বিনোদনের নানা ব্যবস্থাও।

সারজিকোট দ্বীপ ও সারজিকোট দুর্গ: মালবান তালুকে ছত্রপতি শিবাজি যে সব দুর্গ বানিয়েছিলেন তার মধ্যে একটি এই সারজিকোট। কালাভালি ক্রিক-এ তালাশিল খাঁড়ির মুখে ১৬৬৮ খ্রিস্টাব্দে এই দুর্গটি তৈরি হয়। প্রায় ১১ কিলোমিটার দীর্ঘ এই ক্রিক-এ ছোট ছোট দ্বীপের মতো রয়েছে। নৌকা ভ্রমণের স্বাদ অপূর্ব। ঝড়ের কবল থেকে জাহাজগুলোকে বাঁচাতে এই কারাভালি ক্রিক-এ সেগুলোকে দাঁড় করিয়ে রাখতেন মরাঠা সম্রাট। দুর্গ থেকে সূর্যাস্তের দৃশ্য অবর্ণনীয়।

সিন্ধু দুর্গ: তারকারলির আরও এক আকর্ষণ সিন্ধুদুর্গ। আরব সাগরের বুকে সুবিশাল দুর্গটিকে দেখে মনে হবে ভাসমান। মালবান জেটি থেকে প্রায় এক কিলোমিটার দূরে কূর্তি দ্বীপে শিবাজির তৈরি সিন্ধুদুর্গ মরাঠা নৌশক্তির জীবন্ত প্রতীক। ১৬৬৭ সালে নির্মিত দুর্গটির পাঁচিলের উচ্চতা সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ৩০ ফুট। ১২ ফুট চওড়া আর ২ মাইল দীর্ঘ পাঁচিলের গায়ে নির্মিত ৪২টি বুরুজ দেখলে অবাক হতে হয়।

• কফি ল্যান্ড চিকমাগালুর

কর্নাটকের মুলায়নগিরি পাহাড়ের কোলে ছোট শহর চিকমাগালুর। রাজ্যের অন্যতম উল্লেখযোগ্য শৈল শহর এটি। শৈল শহর হিসাবে পরিচিতির পাশাপাশি চিকমাগালুরের খ্যাতি কফি চাষের জন্যও। একে কর্নাটকের ‘কফি ল্যান্ড’ও বলা হয়। রেল ও সড়ক পথে শহরটি রাজ্যের অন্য বড় শহরগুলির সঙ্গে যুক্ত। ১৭৩ নম্বর জাতীয় সড়ক শহরের বুক চিরে চলে গিয়েছে। সম্প্রতি সেখানে একটি নতুন রেলপথ চালু করা হয়েছে। প্যাসেঞ্জার ট্রেনে এখান থেকে শিমোগা যাওয়া যায়। ভারতের প্রথম কফি তৈরির কারখানা এখানে গড়ে ওঠে।

‘চিক্কামাগালা উরু’ শব্দ থেকে এই শহরের নামকরণ হয়েছে। কন্নড় ভাষায় যার অর্থ শহরের কনিষ্ঠ কন্যা। ৩,৪০০ ফুট উচ্চতায় এই শহরের আশপাশে বেশ কয়েকটি শৈলশহর আছে যা গ্রীষ্মের ছুটি কাটানোর পক্ষে আদর্শ। শীতকালে এখানে তাপমাত্রা ১১-২০ ডিগ্রি সেলসিয়াস, আর গ্রীষ্মে ২৫-৩২ ডিগ্রির মধ্যে ঘোরাফেরা করে। রাজ্যের দক্ষিণ-পশ্চিমের এই শহরের প্রধান বাণিজ্যিক ফসল কফি। এখান থেকে ১২ কিলোমিটার দূরে রয়েছে কর্নাটকের সর্বোচ্চ শৃঙ্গ মুলায়নগিরি। শহরের বুক চিরে চলে গিয়েছে বেশ কয়েকটি নদী। রয়েছে প্রচুর কফি বাগান যা পর্যটকদের মন কাড়ার মতো।

শহরের কয়েকটি দর্শনীয় স্থান—

কেমাংগুন্ডি: বাবা বুদান পর্বতমালার সবচেয়ে আকর্ষণীয় স্থান এটি। এখানকার প্রাকৃতিক শোভা এবং শান্ত পরিবেশে সময় কাটানো এক কথায় অনবদ্য। রয়েছে কালাথাগিরি ও হেবে নামে দু’টি নয়নাভিরাম জলপ্রপাত।

বাবা বুদান: হিমালয় ও নীলগিরি পর্বতের অন্যতম উঁচু শৃঙ্গ এটি। একে চন্দ্র দ্রোণ পর্বতও বলা হয়ে থাকে। মুসলমান পীর বাবা বুদানের নামেই এই পর্বতমালার নামকরণ করা হয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দারা মনে করেন, বাবা বুদান ইয়েমেন থেকে কফির সাতি বীজ এনে তাঁর দরগার বাইরে পুঁতেছিলেন। সেখান থেকেই এই রাজ্যে কফি চাষের উত্পত্তি।

মুলাইন গিরি: চিকমাগালুরের উত্তরে সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ১,৯২৬ মিটার উঁচুতে এই পর্বতমালায় বেশ কয়েকটি ধর্মীয় স্থান রয়েছে।

ভদ্রা অভয়ারণ্য: চিকমাগালুর থেকে মাত্র ৩৮ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। বাবা বুদান গিরি, হেবে গিরি, মুলায়ন গিরি দিয়ে ঘেরা এই অভয়ারণ্যের বুক চিরে বয়ে গিয়েছে ভদ্রা ও তার উপনদীগুলি।

• বিশাখাপত্তনমের নাগালে ভিমলি

সীমান্ধ্রের বিশাখাপত্তনম জেলার পুরশহর ভিমানিপত্তনম। ভারতের দ্বিতীয় পুরশহর এটি। তৈরি হয় ১৮৬১ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি। ২০১১-য় শহরের সার্ধশতবর্ষ উদযাপন করা হয়। ইতিহাস বলে, খ্রিস্টপূর্ব তিন শতাব্দীতে ভিমানিপত্তনমের উত্পত্তি। এই পুরশহরকে সংক্ষেপে বলা হয় ‘ভিমলি’। শহরের আনাচে-কানাচে ছড়িয়ে রয়েছে বৌদ্ধ সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের নানা উদাহরণ। খননকার্যের পরে বৌদ্ধধর্ম সংক্রান্ত বহু তথ্য নিশ্চিত করে এটি এক সময় বৌদ্ধ ধর্মের অন্যতম প্রাণকেন্দ্র হিসাবে গড়ে উঠেছিল। শুধু বৌদ্ধধর্মই নয়, পরবর্তী কালে ডাচ ও ব্রিটিশদের উপনিবেশ গড়ে ওঠে এখানে। ১৭ শতাব্দীতে ডাচ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি এই শহর থেকেই সমুদ্রপথে ব্যবসা-বাণিজ্য করত। এর পরে ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি ভিমানিপত্তনমকে পূর্ব উপকূলের প্রধান বাণিজ্যকেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলে। এই শহরে ব্রিটিশদের নিদর্শন হিসেবে রয়েছে একটি বড় ঘড়ি। বিশাখাপত্তনম থেকে ২৪ কিলোমিটার দূরে গোস্থানী নদীর সঙ্গমস্থলে ভিমলি সৈকত। শান্ত পরিবেশের এই সৈকতে নারকেল গাছের সারি লক্ষ করা যায়। বিশাখাপত্তমন থেকে সৈকত বরাবর রাস্তা ধরে গাড়ি করে ভিমলি যাওয়ার মজাই আলাদা। ফলে বিশাখাপত্তনমে ঘুরতে গিয়ে চট করে ভিমলির প্রাকৃতিক স্বাদ নিয়ে আবার ফিরে আসা যায় বিশাখাপত্তনমে।

• ধ্রুপদ সঙ্গীত ও নৃত্য উত্সব

প্রতি বছরের মতো এ বছরও অক্টোবর মাসের ১ থেকে ১০ তারিখ পর্যন্ত কেরলের তিরুঅনন্তপুরমে জাঁকজমকের সঙ্গে অনুষ্ঠিত হল রাজ্যের অত্যন্ত জনপ্রিয় সাংস্কৃতিক উত্সব সূর্য ধ্রুপদ সঙ্গীত ও নৃত্য উত্সব। ফি বছর সূর্য স্টেজ অ্যান্ড ফিল্ম সোসাইটির উদ্যোগে দশ দিন ধরে চলে সঙ্গীত ও নৃত্যের এই মহোত্সব। এই সংস্থার প্রতিষ্ঠাতা নটরাজ কৃষ্ণমূর্তি বা সূর্য কৃষ্ণমূর্তি। দেশের বিভিন্ন প্রান্তের ঐতিহ্যবাহী ধ্রুপদী সঙ্গীত ও নৃত্যকলা এখানে প্রদর্শিত হয়— ওড়িশি নৃত্য, ভরতনাট্যম, কত্থক, মণিপুরী নৃত্য, কথাকলি, কুচিপুরী ইত্যাদি। পাশাপাশি এই উত্সবে নানা ধারার ধ্রুপদী সঙ্গীত ও যন্ত্রসঙ্গীত দর্শক-শ্রোতাকে মুগ্ধ করে। অনুষ্ঠানে অংশ নেন পদ্ম সুব্রহ্মণম, চিত্রা বিশ্বেশ্বরন, লক্ষ্মী গোপালস্বামীর মতো বিখ্যাত নৃত্যশিল্পীরা। তেমনই, যন্ত্রসঙ্গীতে আসর মাতিয়েছেন উস্তাদ আমজাদ আলি খান, উস্তাদ জাকির হুসেনের মতো দিকপাল শিল্পীরা। কয়েক বছর আগে এই মঞ্চেই বিসমিল্লা খানের সানাই আর ভীমসেন যোশীর উচ্চাঙ্গ সঙ্গীত— সঙ্গীতপ্রেমীদের মনে চিরস্থায়ী জায়গা করে নিয়েছে। তবে এই উত্সব শুধু সঙ্গীত আর নৃত্য নয়— নাটক, চিত্রকলা এবং আলোকচিত্রের জন্যও খ্যাতি পেয়েছে।

• মেক্সিকোয় ‘ডেজ অফ দ্য ডেড’

ডেজ অফ দ্য ডেড— অর্থাত্ মৃতের দিন। অক্টোবর মাসের শেষ দিন থেকে ২ নভেম্বর— এই তিন দিন মেক্সিকোয় পালিত হয় ‘মৃতের দিন’। তবে মেক্সিকো ছাড়া প্রায় সারা বিশ্বে খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের মানুষ এই দিনগুলিতে সমাধিক্ষেত্রে যান। পরিবারের মৃত স্বজনের সমাধিবেদিতে মোমবাতি জ্বালেন। ফুল দেন। স্বজনের আত্মার শান্তি কামনা করে প্রার্থণা করা হয়।

কিন্তু এই দিনগুলি মেক্সিকোতে পালিত হয় একেবারে ভিন্ন কায়দায়, একেবারে উত্সবের মেজাজে। সেখানকার পথঘাট, বাড়ি, হোটেল, পাব সেজে ওঠে কাগজ বা পলিথিনের তৈরি রংবেরঙের মানুষের মাথার খুলি, কঙ্কাল, বাতি আর নিশানে। হোটেল এবং পাবে মাথার খুলি বা কঙ্কালের আদলে তৈরি খাবারদাবার, চকোলেট বিক্রি হয়। ডেজ অব দ্য ডেড-এর এমন জাঁকজমকপূর্ণ আয়োজনে মেক্সিকোর প্রায় সর্বত্র উত্সবের চেহারা নেয়। এখানে দু’ তিন দিনের এই পার্বণের প্রস্তুতি চলে নির্ধারিত দিনের প্রায় এক সপ্তাহ আগে থেকেই।

১ নভেম্বর পরিবারের মৃত শিশু বা অপ্রাপ্তবয়স্ক সদস্যদের স্মরণ করা হয়। ২ নভেম্বর নানা আয়োজন করা হয় পরিবারের মৃত প্রাপ্তবয়স্ক সদস্যদের স্মরণে। এই দিনেই মেক্সিকোর অসংখ্য মানুষ কাগজ বা পলিথিনের মাথার খুলি, কঙ্কাল নিয়ে পদযাত্রা করেন। মৃত ব্যক্তিদের সাজে অনেকেই সামিল হন এই পদযাত্রায়। তাদের দেখে মনে হয় যেন একঝাঁক ‘চলমান অশরীরী’।

• আন্তর্জাতিক লোকউত্সব

আপনি যদি লোকসংস্কৃতি তথা লোকসঙ্গীত বা লোকনৃত্যের অনুরাগী হন, তা হলে অক্টোবর মাসে রাজস্থানের যোধপুরে আয়োজিত আন্তর্জাতিক লোকউত্সব আপনাকে নিশ্চিত ভাবে প্রলুব্ধ করবে। কারণ বছরের এই নির্দিষ্ট সময়ে পাঁচ দিন ধরে দেশ-বিদেশের ২৫০ জনেরও বেশি লোকসঙ্গীত ও নৃত্যশিল্পী এই উত্সবে অংশ নেন। চলতি মাসের ২৬ থেকে ৩০ তারিখ পর্যন্ত চলবে এই উত্সব।

‘রাজস্থান আন্তর্জাতিক লোকউত্সব’ ভারতের প্রথম বার্ষিক লোকউত্সব হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে। ২০০৭ সালে এই উত্সবের সূচনা হয়। তার পর থেকে মেহরানগড় জাদুঘর ট্রাস্ট এবং জয়পুর বিরাসত ফাউন্ডেশন-এর যৌথ প্রচেষ্টায় প্রতি বছর জাঁকজমকের সঙ্গে এই অনুষ্ঠান হয়। প্রতি বছর মেহরানগড় দুর্গের সামনেই বসে এই উত্সবের আসর। নানা স্বাদের বিভিন্ন ধারার লোকসঙ্গীত এবং লোকনৃত্যের আসর বসে— জ্যাজ নাইট, রাজস্থানী নাইট প্রভৃতি। দেশীয় নানা ধারার নৃত্যের পাশাপাশি দেখা মেলে জিপসি নাচেরও। রাতভর চলে অনুষ্ঠান। এবং তা দেখার জন্য অনলাইনেই টিকিট বুক করা যায় মে মাস থেকে।

পরিষেবা

• মুম্বইয়ে প্রথম বাতানুকুল লোকাল ট্রেন

মুম্বই-এর ব্যস্ত লোকাল ট্রেন আগামী বছরের এপ্রিল মাস থেকেই বাতানুকুল করা হবে বলে জানাল রেল মন্ত্রক। এত দিন পর্যন্ত দূরপাল্লার ট্রেন এবং মেট্রো ছাড়া কোনও লোকাল ট্রেনের রেক বাতানুকুল ছিল না। এমনিতেই মুম্বইয়ের লোকাল ট্রেনে ভীষণই ভিড় হয়। গরম কালে যাত্রীরা আরও নাকাল হন। ট্রেন বাতানুকুল হওয়ার খবরে কার্যত খুশি যাত্রীদের একাংশ। রেল সূত্রে খবর, বাতানুকুল লোকাল ট্রেনের ট্রায়াল হয় ভোপালে। সেই ট্রায়াল সফল হওয়ার পর পশ্চিম রেল ঘোষণা করে, ১২ কামরার রেক খুব শীঘ্রই তৈরি করা হবে।

কলকাতা মেট্রোর রেক যে প্রযুক্তিতে তৈরি করা হয়েছে, সেই একই প্রযুক্তি এ ক্ষেত্রেও ব্যবহার করা হবে। প্রকৃতিগত ভাবে পাল্টালেও, আকৃতিগত ভাবে মুম্বইয়ের লোকাল ট্রেনের আদলই থাকবে। প্রতিটি রেক প্রায় ১২০০ যাত্রী বহনের ক্ষমতা সম্পন্ন হবে। রেক তৈরি হতে পাঁচ থেকে ছয় মাস লাগবে। সব কিছু ঠিকঠাক থাকলে আগামী বছরের মাঝামাঝি থেকেই মুম্বইয়ে চলবে ভারতের প্রথম বাতানুকুল লোকাল ট্রেন।

বেঙ্গালুরু মেট্রোয় সুড়ঙ্গ পথ

বেঙ্গালুরু নাম্মা মেট্রোর সব চেয়ে কঠিন কাজ পাথরের মধ্যে দিয়ে প্রায় ১৪ কিলোমিটার দীর্ঘ সুড়ঙ্গ কাটা। এ জন্য ব্যবহার করা হবে আটটি টানেল বোরিং যন্ত্র। ভারতের সব চেয়ে বড় মেট্রো সুরঙ্গ দিল্লিতে জাহাঙ্গিরপুরী থেকে এইচইউডিএ শহর পর্যন্ত যা প্রায় ৩৫ কিলোমিটার লম্বা। যদিও ভারতীয় রেলে ব্যবহৃত সব চেয়ে লম্বা সুড়ঙ্গ প্রায় ১১ কিলোমিটার— পীরপঞ্জাল থেকে জম্মু-কাশ্মীরের বানিহাল পর্যন্ত বিস্তৃত। ভারতীয় রেলের সব চেয়ে লম্বা সুড়ঙ্গের থেকে বেঙ্গালুরুর নাম্মা মেট্রোর সুড়ঙ্গ আরও বড়। রেল মন্তিত্নরকের আশা, আগামী বছরের মধ্যেই এই সুড়ঙ্গের কাজ শেষ হবে। দক্ষিণ বেঙ্গালুরুর জয়ানগর ফোর্থ ব্লকের সাগর হাসপাতাল থেকে উত্তর পূর্বের নাহাওয়াড়া পর্যন্ত বিস্তৃত নাম্মা মেট্রোর এই অংশটি। এই সুড়ঙ্গ পথে থাকবে ১২টি স্টেশন।

• সেকেন্দ্রাবাদ স্টেশনে থামবে হায়দরাবাদ মেট্রো

হায়দরাবাদ মেট্রো রেলের মাঝে পড়ে আটটি রেলওয়ে ট্র্যাক। এর মধ্যে চারটি স্টেশন— আলুগাদ্দাভাবি, চিল্কাগুডা, এলিফেন্ট ব্রিজ ও ভাইগুডা। অন্য চারটি রেলওয়ে ক্রশিং— ভারতীনগর, লাক্রিকাপুল, মালাকপেট ও বেগামপেট। এ ছাড়াও সব চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ জংশন— সেকেন্দ্রাবাদ রেল স্টেশন। ভবিষ্যতে এই স্টেশনগুলি যখন পুনর্গঠনের কাজ করা হবে বা ট্র্যাক সারানোর কাজ করা হবে, তখন যাতে মেট্রো রেলকে কোনও অসুবিধায় না পড়তে হয় সে জন্যে পরিকল্পনা করা হয়েছে। এই সমস্ত গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় মেট্রো রেলের সেতু গড়া হবে মাটি থেকে ২২ মিটার উচ্চতায়। ফলে এই জায়গাগুলিতে মেট্রো স্টেশনের উচ্চতা হবে মাটি থেকে প্রায় ১১-১২ মিটার।

সংবাদ সংস্থা, ইন্টারনেট থেকে নেওয়া ও নিজস্ব চিত্র।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE