এক সময় বিশ্বকর্মা পুজোকে ঘিরে উৎসবে মেতে উঠত হুগলি শিল্পাঞ্চল। গঙ্গার পাড় ঘেঁষে একের পর এক চটকল, কটন মিল, গাড়ি কারখানা, টায়ার কারখানা-সহ ছোট-বড়-মাঝারি কারখানা আলোর মালায় ভাসত। শ্রমিক পরিবারের ছেলেমেয়েরা নতুন জামাকাপড় পড়ত। সেই সুদিন আর নেই। একের পর এক বন্ধ এবং ধুঁকতে থাকা শিল্পের শ্রমিকদের হা-হুতাশে জৌলুস হারিয়েছেন বিশ্বকর্মা। এ বার সেই বিবর্ণ চেহারায় বদল দেখা গেল না। যে ক’টি কারখানা কোনও রকমে চলছে, সেখানে কোনও রকমে পুজো সারেন শ্রমিকেরা। সম্প্রতি দিল্লি রোডের ধারে কিছু নতুন কারখানা গড়ে উঠেছে বটে, কিন্তু সেখানেও বিশ্বকর্মা পুজোকে ঘিরে সেই উন্মাদনা, সেই প্রাণ চোখে পড়ল না।
অথচ, গঙ্গাপাড়ের শিল্পাঞ্চল এক সময়ে সোনা ফলাত। অজস্র শ্রমিকের ঠিকানা এ তল্লাট। বিশ্বকর্মা পুজোয় শুধু হিন্দমোটরই নয়, কোন্নগর থেকে শ্রীরামপুর, ভদ্রেশ্বর থেকে চন্দননগর, সাহাগঞ্জ বা ত্রিবেণী— সর্বত্রই বিভিন্ন কারখানায় মানুষের ঢল নামত। উঁচু পাঁচিল ঘেরা চৌহদ্দিতে বিশাল বিশাল যন্ত্র দেখা আর সুস্বাদু লাড্ডুতে কামড় বসানোর বাসনাই তাঁদের টেনে নিয়ে যেত। এই একটা দিনই কল-কারখানায় ঢোকার অনুমতি মিলত সাধারণ মানুষের। কোনও কোনও কারখানায় ঢালাও খাওয়া দাওয়ারও আয়োজন করা হত। বড় কারখানায় কর্মীদের পরিবারের শিশুদের জন্য বিশেষ অনুষ্ঠান এবং উপহারের ব্যবস্থা থাকত। শ্রীরামপুরের বঙ্গলক্ষ্মী কটন মিলে বহু মানুষ পুজো দেখতে যেতেন। সেই মিল চত্ত্বর এখন খাঁ খাঁ করছে। বেশ কয়েক বছর হল মিলটি বন্ধ। সেই জমিতে এখন আবাসন ওঠার অপেক্ষা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy