আদালত কক্ষের ভিতরে যে ভাবে তাণ্ডব চলছে, বিচারককে কটূক্তি করা হচ্ছে, আইন জগতে তার সমালোচনা ছিলই। সেই সমালোচনার সুর আরও ধারালো করলেন সোমনাথ চট্টোপাধ্যায়, অশোক গঙ্গোপাধ্যায়ের মতো আইনি ব্যক্তিত্বেরা। আর তার সঙ্গেই এ বার যোগ হল শাসক দলের মধ্যে থেকে প্রতিবাদের সুর।
আলিপুর আদালতের ভিতরে ক’দিন ধরে যা হয়েছে, বুধবার তার বিরুদ্ধে মুখ খুলেছেন উলুবেড়িয়ার তৃণমূল সাংসদ সুলতান আহমেদ। তাঁর বক্তব্য, “আলিপুরে যা হয়েছে, তা আদালতের অভ্যন্তরের ঘটনা। কিন্তু সাধারণ মানুষ হিসাবে বলতে পারি, এ কাজ ঠিক হয়নি। উচিত কাজ হয়নি।” আদালত কক্ষের মধ্যে তৃণমূল-ঘনিষ্ঠ আইনজীবীদের আচরণে সমস্ত মহলেই যে ভুল বার্তা যাচ্ছে, সেই প্রশ্নে অবশ্য শাসক দলের অন্দরে অনেকেই একমত। সুলতান যা প্রকাশ্যে এনে ফেলেছেন। যদিও তাঁর মুখ খোলার আগেই দলের অভ্যন্তরে এই নিয়ে চর্চা শুরু হয়েছিল। আদালত-কাণ্ড চলতে থাকলে নানা ঘটনায় কোণঠাসা শাসক দলের মুখ যে আরও পুড়বে, তা এখন বুঝতে পারছেন তৃণমূলের নেতৃত্বও। দলের এক শীর্ষ নেতার এ দিন রাতে ইঙ্গিতপূর্ণ মন্তব্য, “যেখানে বললে কাজ হবে, সেই জায়গায় বার্তা দিয়ে দেওয়া হয়েছে!”
শাসক দলের নেতৃত্বের বার্তার জেরে আদালত-কাণ্ডে শেষ পর্যন্ত রাশ পড়ে কি না, তা নিয়ে সংশয় অবশ্য এখনই দূর হচ্ছে না। আর এ যাবৎ যা ঘটেছে, তাতে অশনি সঙ্কেত দেখেই সরব হন সোমনাথবাবুরা। বোলপুরে এ দিনই কেন্দ্রীয় বিদ্যালয়ের চতুর্থ বার্ষিকী উদযাপন অনুষ্ঠানে গিয়ে প্রশ্নের জবাবে লোকসভার প্রাক্তন স্পিকার সোমনাথবাবু বলেছেন, “অত্যন্ত ঘৃণ্য কাজ হয়েছে। ভীষণ বিপদের সঙ্কেত দেখা যাচ্ছে। আমাদের সংবিধানের প্রধান স্তম্ভ বিচার ব্যবস্থা। আদালত যদি বিচার না করতে পারে, জঙ্গলের রাজত্ব হয়ে যাবে! সমস্ত জনগণের কাছে আমাদের নিবেদন, এই বিপদ সম্বন্ধে সচেতন হোন, এর প্রতিবাদ করতে হবে।”
প্রতিবাদ করার জন্যই ‘সেভ ডেমোক্র্যাসি ফোরাম’ আগামী ১৮ ফেব্রুয়ারি আলিপুর আদালত চত্বরে সভার ডাক দিয়েছে। কলকাতায় এ দিন ফোরামের আহ্বায়ক অসীম চট্টোপাধ্যায় সোমনাথবাবুরই একটি বিবৃতি পড়ে শুনিয়েছেন। শোনান। আদালত-কাণ্ডের প্রতিবাদ করে সেখানে সোমনাথবাবু বলেছেন, ‘এই রাজ্যে রাজশক্তির অপব্যবহার, বিশেষ বিশেষ দলভুক্ত মানুষের প্রতি বিভিন্ন প্রকার ব্যবস্থা নেওয়া এক দম বন্ধ-করা পরিস্থিতিতে মানুষ বাস করছে।’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy