বিরল ফ্রেম। হাসিমুখে হাত ধরাধরি করে তৃণমূলের দুই সাংসদ মুকুল রায় এবং শুভেন্দু অধিকারী! শুক্রবার পূর্ব মেদিনীপুরের পাঁশকুড়ায়। তবে কি সারদা-কাণ্ডই মিলিয়ে দিল দু’জনকে! শুরু হয়েছে গুঞ্জন।
সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক মুকুলবাবু এবং সাংসদ শুভেন্দুর বিরোধ নিয়ে তৃণমূলের অন্দরে জল্পনা বিস্তর। দলের অনেকেরই মতে, মুকুলের বিকল্প হিসেবে দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যাঁকে এগিয়ে দিয়েছেন, সেই ভাইপো অভিষেক বন্দ্যোপাধায়ের ঘনিষ্ঠ শুভেন্দু। কিন্তু এই সমীকরণ সরিয়ে রেখেই এ দিন বিকালে পাঁশকুড়ায় শুভেন্দুর নেতৃত্বাধীন দলীয় কর্মসূচিতে হাজির হন মুকুলবাবু। তৃণমূল রাজ্যে ক্ষমতায় আসার পরে জেলায় দলীয় কর্মসূচিতে এ দিনই প্রথম একসঙ্গে দেখা গেল দুই সাংসদকে। অথচ গত রবিবারই তমলুকের রাজ ময়দানে জেলা তৃণমূল যুব কংগ্রেসের সভায় মুকুলবাবু ছিলেন, উপস্থিত হননি শুভেন্দুুই। মঞ্চে দাঁড়িয়ে এ দিন শুভেন্দু বলেন, “গত কালই আমার সঙ্গে মুকুল রায়ের কথা হয়েছিল। উনি আমার কাছে এই কর্মসূচির কথা জানতে পেরে বহু কাজ ফেলে আজকের সভায় এসেছেন। এ জন্য তাঁকে কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।” আর তৃণমূলের পূর্ব মেদিনীপুর জেলা সভাপতি শিশির অধিকারীর বক্তব্য, “দলনেত্রীর কথাতেই উনি এসেছেন।”
বুধবারই সারদা-কাণ্ডে শুভেন্দুকে তলব করেছে সিবিআই। আর সারদা কেলেঙ্কারিতে মুকুলবাবুর যোগের অভিযোগে সরব বিরোধীরা। এরই মধ্যে এ দিন শুভেন্দুর জেলায় তড়িঘড়ি মুকুলের ছুটে যাওয়া, শুভেন্দুর সঙ্গে সভা করা তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করা হচ্ছে। তৃণমূল সূত্রের খবর, উদ্ভুত পরিস্থিতিতে একজোট হয়ে সারদা-কাণ্ড এবং সিবিআই মোকাবিলায় পূর্ব মেদিনীপুরে যাওয়ার জন্য মুকুলবাবুকে নির্দেশ দিয়েছিলেন মমতাই। শুভেন্দু-মুকুল এক সুরে এ দিন এক সুরে সিবিআইয়ের বিরুদ্ধে তোপও দেগেছেন। মুকুলবাবু জানিয়েছেন, সিবিআইয়ের ভূমিকার বিরুদ্ধে ১৯-২২ সেপ্টেম্বর রাজ্য জুড়ে প্রতিবাদ কর্মসূচির সূচনা এ দিন পাঁশকুড়া থেকেই হল। তৃণমূলেরই এক প্রথম সারির নেতার রসিকতা, “মনে হচ্ছে, দু’দলই চ্যাম্পিয়ন হয়েছে বলে যেন মোহনবাগান-ইস্টবেঙ্গল একসঙ্গে মিছিল করছে!”